Inqilab Logo

শনিবার ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

দখল আতঙ্কে আ’লীগ

প্রকাশের সময় : ১৮ এপ্রিল, ২০১৬, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১১:৩৮ পিএম, ১৭ এপ্রিল, ২০১৬

বিশেষ সংবাদদাতা : সারাদেশে চলছে দখল-পাল্টা দখল। ক্ষমতার দাপট, দলীয় প্রভাব, অস্ত্রের বলে দখলদারিত্বে মেতেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। ইউপি নির্বাচনে ভোটকেন্দ্র দখল থেকে শুরু করে পরাজিত বিদ্রোহী প্রার্থীর বাড়িঘর, সম্পত্তি দখল করে পরিবারসহ ঘরছাড়া করা হচ্ছে। ঢাকা মহানগরীতে আওয়ামী লীগের কমিটি ঘোষিত হওয়ার পর নতুন কমিটির নেতা এবং তাদের সমর্থকরা দখলদারিত্বে মেতে উঠেছে। চলছে হামলা, মামলা, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া। স্কুল-কলেজ, দলীয় অফিস, রাস্তার ফুটপাত, মার্কেট, দোকান, সরকারী জায়গা-সম্পত্তি, ক্লাব-সংগঠন সবই দখল করা হচ্ছে। ক্ষমতাসীনদের এই দখলের শিকার আওয়ামী লীগই। দখলের আতঙ্কও তাদেরই। গত ১০ এপ্রিল ঢাকা মহানগরী আওয়ামী লীগের কমিটি ঘোষণা করার পর ঢাকা-৪ আসনের শ্যামপুর-কদমতলী এলাকায় বিরামহীনভাবে চলছে দখলের মহোৎসব। অভিযোগ উঠেছে, নতুন কমিটির নেতা ও তাদের সমর্থকরা পুরাতন কমিটির অফিস, মার্কেট, দোকানপাট ও স্থাপনা দখল করে নিচ্ছে। এ নিয়ে হামলা, সংঘর্ষ, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে একাধিকবার। ক্ষমতাসীন দলের একাধিক নেতার মতে, অধিকাংশ এলাকার কমিটিতে ঠাঁই পেয়েছে ভূমিদস্যু, দখলবাজ, দাগি সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ ও একাধিক ফৌজদারি মামলার আসামি। তারাই দলীয় প্রভাবে দখলের জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে। আইন-শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনী তাদের পক্ষে কাজ করছে। ঢাকা-৪ আসনে সাবেক এবং বর্তমানে সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি অ্যাডভোকেট সানজিদা খানম ইনকিলাবকে বলেন, যেভাবে একটার পর একটা দখলদারিত্ব শুরু হয়েছে তাতে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাই আতঙ্কিত। নতুন কমিটি দায়িত্ব পেয়েছে রাজনীতি করার জন্য, দখলবাজি করার জন্য তো নয়।
সারাদেশে ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সহিংসতার ঘটনা ঘটেই চলছে। বিএনপি এই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে গিয়েও ক্ষমতাসীনদের সাথে পেরে ওঠেনি। এতে করে অধিকাংশ এলাকায় আওয়ামী লীগের প্রতিপক্ষ আওয়ামী লীগই। এদের কেউ দলীয় মনোনয়ন পেয়ে নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করেছেন। কেউবা বিদ্রোহী হয়ে শক্ত প্রতিপক্ষ সেজেছেন। ভোটের খালি ময়দানেও ঘটছে ভোট কেন্দ্র দখলের লড়াই। ফলাফল ঘোষণার পর প্রতিপক্ষ পরাজিত প্রার্থীর বাড়িঘরে হামলাসহ সপরিবারে ঘরছাড়া করার ঘটনা আছে বেশ কিছু। আছে তার জায়গা-জমি-সম্পত্তি দখলের মতো ঘটনাও। নির্বাচন কমিশন এসব ঘটনায় একেবারে নির্বিকার ছিল। তাদের অধীন পুলিশ প্রশাসনও ছিল নীরব দর্শক। এ কারণে নির্বাচনপরবর্তী সহিংসতা দমন করা যায়নি। একের পর এক ঘটেছে প্রাণহানির ঘটনা। মাদারীপুরে গত ৩১ মার্চ দ্বিতীয় ধাপের ইউপি নির্বাচনে জয়-পরাজয় নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে আওয়ামী লীগের বিজয়ী প্রার্থী কুদ্দুস মল্লিক ও বিদ্রোহী প্রার্থী সোহরাব খানের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ওই সংঘর্ষে জুয়েলসহ ছয়জন গুলিবিদ্ধ হয়। গত শনিবার দুপুরে ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় জুয়েলের মৃত্যু হয়। নিহত জুয়েল মল্লিক (২৮) নবনির্বাচিত আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান কুদ্দুস মল্লিকের ভাতিজা। জুয়েলের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ায় দু’পক্ষ আবার সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়লে দু’জন গুলিবিদ্ধ হয়। এরা হলো, ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য শওকত হোসেন ও আজগর মাতুব্বর। পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের সভাপতি গাজী মো. সেলিমকে তার নিজ বাড়িতে গভীর রাতে গুলি করেছে দুর্বৃত্তরা। শনিবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছে, পাঁচ-সাতজনের মুখোশধারী সশস্ত্র দুর্বৃত্ত ঘরের দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে। অস্ত্রের মুখে তারা গাজী সেলিমের হাত-পা বেঁধে মারধর করে। আওয়ামী লীগ নেতারা সাংবাদিকদের জানান, সন্ত্রাসীরা ঘরের আলমারি ভেঙে পাঁচ-ছয় ভরি স্বর্ণালংকার ও ৫৫ হাজার টাকা নিয়ে যাওয়ার সময় সেলিম গাজীর বাঁ পায়ের হাঁটুতে গুলি করে। তিনি বলেন, গত ২২ মার্চ মির্জাগঞ্জ ইউনিয়নে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী মো. নাসির উদ্দিন নির্বাচনে হেরে যান। এর পর থেকে তিনি আমাকে দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়ে আসছিলেন। রাতে মুখোশধারী সন্ত্রাসীরা নির্বাচনের বিষয় বিভিন্ন রকম কথা বলে আমাকে মারধর করে। একদিন আগে গত শনিবার রাজধানীর আনন্দবাজারে আ’লীগ-ছাত্রলীগের সংঘর্ষে তিনজন আহত হয়েছে। আনন্দবাজার এলাকায় ২০নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ ও একই ওয়ার্ডের বহিষ্কৃত ছাত্রলীগ নেতাদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। আহতরা হলেন, আনন্দবাজার ইউনিট আওয়ামী লীগ সভাপতি আব্দুল জলিল (৩০), সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রব (৪০), ২০নং ওয়ার্ডের ছাত্রলীগের সভাপতিপ্রার্থী শান্ত (২৮)। তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহত আব্দুর রব জানান, শনিবার সন্ধ্যায় তারা আনন্দবাজার ক্লাবে আড্ডা দিচ্ছিলেন। এসময় হঠাৎ করে আনন্দবাজার ইউনিট ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহীম রাসেলসহ ২০-২৫ জনের একটি দল নিয়ে অতর্কিতে হামলা চালায়। আহত আব্দুর রব বলেন, হামলার সময় দুর্বৃত্তরা বেশ কয়েক রাউন্ড গুলি বর্ষণ করে। শাহবাগ থানার ওসি আবু বকর সিদ্দিক বলেন, অভ্যন্তরীণ কোন্দলের জেরে এই হামলা হয়েছে। আওয়ামী লীগের দলীয় সূত্র জানায়, ঢাকার বাইরে নির্বাচন ও এর পরবর্তী সময়ে সহিংসতার ঘটেই চলেছে। এজন্য কেন্দ্র থেকে বারবার সতর্ক করা হলেও অনেকেই তা মানছে না। বিদ্রোহী প্রার্থী জয়ী হলে আওয়ামী লীগের মনোনীত পরাজিত প্রার্থীর ওপর হামলাসহ তার বাড়িঘরে লুটপাটের ঘটনাও ঘটছে। এজন্য নির্বাচন কমিশনকে দায়ী করা হচ্ছে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে। দলের সভাপতিম-লীর সদস্য বর্ষীয়ান নেতা সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত নির্বাচন কমিশনের নির্লিপ্ততা নিয়ে কটাক্ষ করতে দ্বিধা করেননি। তিনি কমিশনের উদ্দেশে বলেন, ‘একটা কিছু কর গোলাপী, একটা কিছু কর।’
ঢাকায় শুরু হয়েছে আরেক দখলদারিত্ব। গত ১০ এপ্রিল ঢাকা মহানগরীর কমিটি ঘোষণার পর পুরাতন কমিটির অনেকেই বাদ পড়েছেন। নেতৃত্বে এসেছে নতুন মুখ। খোদ আওয়ামী লীগ নেতারাই বলেছেন, নতুন নেতৃত্বে যারা এসেছেন তাদের মধ্যে চিহ্নিত সন্ত্রাসী, ভূমিদস্যু, চাঁদাবাজ, একাধিক ফৌজদারী মামলার আসামী এমনকি সরকারী কর্মকর্তাও আছেন। কমিটি ঘোষণার পর থেকে এরা নিজেদেরকে ক্ষমতাধর মনে করে অবৈধ প্রভাব খাটিয়ে জোরপূর্বক দখলদারিত্বে মেতে উঠেছে। ঢাকা-৪ আসনে কদমতলী-শ্যামপুর থানা এলাকায় গত কয়েকদিন ধরেই চলছে দখল-পাল্টা দখলের মহোৎসব। দখলদারদের আতঙ্কে আতঙ্কিত এখানকার আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরাই। স্থানীয়রা জানান, নতুন কমিটিতে ওয়ার্ড কাউন্সিলর নাসিমকে সভাপতি ও মোবারক হোসেনকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে। কমিটির ঘোষণার পরদিনই এই দুই নেতার সমর্থকরা মিলে শ্যামপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ অফিসে হামলা চালায়। এসময় দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে পাঁচজন আহত হয়। এর মধ্যে ফারুক হোসেন (৩৩) ও মানিক মিয়াকে (৩১) আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর গত মঙ্গলবার জুরাইন-পোস্তগোলা সড়ক ও জনপদ পুনর্বাসন হকার্স মার্কেট সমিতির কার্যালয়ে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। নতুন কমিটির নেতাদের ইন্ধনে এই হামলার ঘটনা ঘটে বলে ভুক্তভোগীরা জানান। হামলায় বেশ কয়েকজন গুরুতর আহত হন। আহতরা হলেন, হকার্স মার্কেট সমিতির সভাপতি এস এম মাসুদ রানা (ফালান), সাধারণ সম্পাদক এসএম শহিদ বাবু, সাবেক সভাপতি সিরাজ তালুকদার, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ ফারুকসহ বেশ কয়েকজন। সরেজমিনে হকার্স মার্কেটে গিয়ে ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানাগেছে, খায়রুল ও মোশারফের নেতৃত্বে ২০-২৫ জন সন্ত্রসী উক্ত সমিতির কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে অফিসের মালামাল, চেয়ার-টেবিলসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র ভাঙচুর করে, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র লুট করে নিয়ে যায়। তবে খায়রুল টেলিফোনে জানান, তিনি এই ঘটনার সাথে জড়িত ছিলেন না। ঘটনার সময় তিনি উপস্থিত থাকলেও হামলাকারীদের দলে ছিলেন না। তিনি দাবি করেন, পুলিশ লাঠিচার্জ করার সময় কয়েকজন আহত হয়। এ বিষয়ে হকার্স সমিতির সাধারণ সম্পাদক এসএম বাবু বলেন, আমি সমিতির কার্যলয়ে বসে ছিলাম। ঠিক সেই সময় মোশারফ, জাকির, মুছাসহ ২০-২৫ জন লোক এসে সমিতির কার্যালয়ে ভাঙচুর করে ও আমাকে জোর করে বের করে তালা লাগিয়ে দেয়। প্রতিবাদ করলে আমাকে এলোপাথাড়ি কিল-ঘুষি-লাথি এবং চেয়ার ও লাঠি দিয়ে আঘাত করে। খবর পেয়ে আমার সমিতির সভাপতিসহ অন্য লোকজন ছুটে আসেন এবং আমাকে রক্ষা করেন। এ সময় সন্ত্রাসীরা তাদের ওপরও হামলা চালায়। এতে তারাও গুরুতর আহত হন। এ বিষয়ে বাংলাদেশ হকার্স ফেডারেশনের সভাপতি আবুল কাশেম বলেন, সড়ক ও জনপদের ওই জায়গাটি বৈধভাবে লীজ নেয়া হয়েছিল। কিন্তু অ্যাডভোকেট সানজিদা এমপি হওয়ার পর তার লোকজন হকার সমিতির বৈধ কমিটির লোকজনকে বিতাড়িত করে জোরপূর্বক সেটি দখল করে নেয়। এতদিন যারা ওই স্থানে ব্যবসা করছিল তাদের কোনো বৈধতা নেই। স্থানীয়রা জানান, এই ঘটনার পর নতুন কমিটির লোকজন শ্যামপুর-কদমতলী আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনের পোস্তগোলার অফিস দখল করে নেয়। এ বিষয়ে স্থানীয় সাবেক এমপি এবং বর্তমানে সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি এড. সানজিদা খানম ইনকিলাবকে বলেন, নতুন কমিটি একটার পর একটা হামলা চালাচ্ছে। আওয়ামী লীগের অফিস পর্যন্ত দখল করছে। আমরা যারা প্রকৃত আওয়ামী লীগ করি তারা তো কেউই সংঘাত চাই না। কেন্দ্র তাদেরকে দায়িত্ব দিয়েছে তারা রাজনীতি করুক। এভাবে দখলদারিত্ব কোনো করবে। তিনি এসবের জন্য ড. আওলাদকে দায়ী করে বলেন, তার মনোনীত কমিটিই অনুমোদন হওয়ায় তিনি যা খুশি তাই করছেন। দখলদারিত্বে আওয়ামী লীগের লোকজনই আতঙ্কে আছে জানিয়ে এড. সানজিদা বলেন, আপনারা জানেন আমি কতো কষ্ট করে দল গুছিয়ে এনেছিলাম। আমার সাজানো সেই বাগান এরা তছনছ করে দিচ্ছে। এতে কার লাভ হচ্ছে সেটাই দেখার বিষয়। এদিকে, কদমতলীতে আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের পদ নিয়েই বিতর্ক উঠেছে। স্থানীয়রা জানান, কাউন্সিলর নাসিম তার কৃতকর্মের জন্য ওয়ান ইলেভেনের সময় গ্রেফতার হয়েছিলেন। তার ভাগ্নেরা মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত। এলাকায় তারাই মাদক ব্যবসা চাঙ্গা রেখেছে। অন্যদিকে, সাধারণ সম্পাদক মোবারক হোসেন সরকারী চাকরি করেন। অগ্রণী ব্যাংক রমনা শাখার প্রিন্সিপাল অফিসার এবং অগ্রণী ব্যাংক অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক মোবারক হোসেন কীভাবে একটা রাজনৈতিক দলের থানা কমিটির সাধারণ সম্পাদক হলেন, এ প্রশ্ন অনেকের। স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, আমরা এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দিয়ে প্রতিকার না পেলে প্রয়োজনে উচ্চ আদালতে মামলা করবো। ব্যাংক প্রশাসন বিষয়টি জেনেও রহস্যজনকভাবে নীরব কেনো তারও অনুসন্ধান চলছে।
এদিকে, ঢাকা মহানগর উত্তর আ.লীগের বিভিন্ন থানা কমিটিতে অনেক ত্যাগী ও পরীক্ষিত কর্মীরা স্থান পায়নি। এতে নিজ দল এবং জনমনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। খিলক্ষেত থানা আ.লীগের নতুন কমিটিতে মাঠের ত্যাগী কর্মীরা বাদ পড়ায় দলের অভ্যন্তরে তীব্র ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। কমিটিতে ঠাঁই পেয়েছে ভূমিদস্যু, দখলবাজ, দাগী সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ ও একাধিক ফৌজদারী মামলার আসামীর নাম। এ নিয়ে স্থানীয় আ.লীগের ত্যাগী কর্মীরা অখুশি। নতুন কমিটিকে অভিনন্দন জানাতে লীগ ক্যাডারদের পাশাপাশি বিএনপি ক্যাডাররাও মিছিল বের করেছে, মিষ্টি বিতরণ করেছে। চিহ্নিত ভূমিদস্যু ও সন্ত্রাসীরা কমিটিতে ঠাঁই পাওয়ায় সাধারণ মানুষ শঙ্কিত হয়ে পড়েছে। ক্লিন ইমেজের আ.লীগ কর্মীরা ছিটকে পড়ায় খিলক্ষেতবাসী চরম উৎকণ্ঠায় রয়েছে। এলাকাবাসী আশঙ্কা করছে, এমনিতেই মানুষ শাসকদলের ক্যাডারদের নির্যাতন-নিপীড়নে অতিষ্ঠ। এখন আবার কমিটির গুরুত্বপূর্ণ পদ দখল করে নিয়েছে পেশাদার সন্ত্রাসীরা। তাদের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে জমি-বাড়ি দখলের বিস্তর অভিযোগ রয়েছে। গোটা জনগোষ্ঠী তাদের কাছে জিম্মি রয়েছে। কেরামত দেওয়ান সভাপতি ও আসলাম উদ্দিনকে সাধারণ সম্পাদক করে খিলক্ষেত থানা আ.লীগের নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। কেরামত দেওয়ান আগের কমিটিতেও সভাপতি ছিলেন। এলাকার সকল অপকর্মের হোতা তিনি। আগেকার কমিটির ক্লিন ইমেজের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম রহস্যজনক কারণে বাদ পড়েছে। খিলক্ষেত আ.লীগের কমিটিকে অভিনন্দিত করতে নিজ দল এবং স্থানীয় বিএনপি’র ক্যাডাররা মিছিল বের করে। এলাকায় প্রচুর পরিমাণে মিষ্টিও বিতরণ করেছে। বড় দুই দলের ক্যাডাররা একাকার হয়ে উল্লাসে মেতে ওঠে, মিষ্টি বিতরণ এবং মিছিল করায় খিলক্ষেতবাসী বিস্ময়ে হতবাক হয়েছে। অনেকে ভয়ে কেঁপে উঠেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকার গণ্যমান্য লোকজন জানান, খিলক্ষেত থানা এলাকায় মূলত আ.লীগ-বিএনপির অপরাধী চক্র গোপন সন্ধির মাধ্যমে এক হয়ে সকল প্রকার অপকর্ম করছে। দীর্ঘদিন ধরে তারা এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে আসছে। তাদের কাছে খিলক্ষেতবাসী জিম্মি হয়ে পড়েছে।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 



 

Show all comments
  • জাবেদ ১৮ এপ্রিল, ২০১৬, ১০:৩৭ এএম says : 0
    এটাই তো হওয়ার ছিলো....................
    Total Reply(0) Reply
  • Tania ১৮ এপ্রিল, ২০১৬, ১০:৩৮ এএম says : 0
    ato din ora khaise akhon ara khaibe. simple
    Total Reply(0) Reply
  • Asma ১৮ এপ্রিল, ২০১৬, ১:৪৪ পিএম says : 0
    tahole amader moto sadharon public ki obosthar moddhe asi aktu chinta korun
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: দখল আতঙ্কে আ’লীগ

১৮ এপ্রিল, ২০১৬
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ