Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ধর্ম অবমাননার বিরুদ্ধে আইন প্রণয়নের যৌক্তিকতা আরও জোরালো হয়েছে -আল্লামা শফী

প্রকাশের সময় : ১৮ এপ্রিল, ২০১৬, ১২:০০ এএম

চট্টগ্রাম ব্যুরো : ধর্মের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে যারা নোংরামি ছড়ায়, এটাকে চরিত্র দোষ ও বিকৃত মানসিকতার বলে কঠোর সমালোচনা ও হুঁশিয়ারি দিয়ে প্রধানমন্ত্রী গত ১৪ এপ্রিল যে বক্তব্য দিয়েছেন, এটাকে অত্যন্ত ইতিবাচক ও প্রশংসনীয় বলে উল্লেখ করেছেন হেফাজতে ইসলামের আমীর আল্লামা শাহ আহমদ শফী। তিনি বলেন, প্রধামন্ত্রীর এই বক্তব্যে ধর্মবিদ্বেষী ব্লগারদের বিরুদ্ধে কঠোর আইন পাস করার হেফাজতের দাবির যৌক্তিকতা প্রমাণিত হয়েছে। গতকাল (রোববার) এক বিবৃতিতে হেফাজত আমীর এ কথা বলেন।
বিবৃতিতে হেফাজত আমীর আরো বলেছেন, ইসলামবিদ্বেষী ব্লগাররা আমাদের মহান সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ ও রাসূল (সা.) এবং পবিত্র ইসলামের বিরুদ্ধে অত্যন্ত নোংরা ভাষায় কুৎসা রটিয়ে মুসলমানদের অন্তরে কতটা মারাত্মক গভীর ক্ষতের সৃষ্টি করছে, বিলম্বে হলেও প্রধানমন্ত্রী এটা বুঝতে পেরেছেন। ধর্মবিদ্বেষী ব্লগাররা যে এদেশের কোটি কোটি মুসলমানের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হেনে বিক্ষুব্ধ করে দেশের শান্তি-শৃঙ্খলার জন্য যে মারাত্মক হুমকি তৈরি করছে, প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে এই বাস্তবতাও ফুটে উঠেছে। সেদিন প্রধানমন্ত্রী আরো বলেছিলেন, ‘আমার ধর্ম সম্পর্কে কেউ যদি নোংরা কথা লেখে, সেটা কেন আমরা বরদাশত করব? ধর্মের বিরুদ্ধে কিছু লিখলেই তারা মুক্তচিন্তার ধারক বলে দাবি করাটা যেন ফ্যাশনে পরিণত হয়েছে। কিন্তু আমি এখানে কোনো মুক্তচিন্তা দেখি না। আমি দেখি নোংরামি।’ হেফাজত আমীর বলেন, প্রধানমন্ত্রী সেদিন বাংলাদেশের কোটি কোটি মুসলমানের হৃদয়ের কথাই বলেছেন।
বিবৃতিতে হেফাজত আমীর বলেন, বাংলাদেশের আলেম সমাজ, মাদ্রাসা ছাত্র ও বিশাল মুসলিম জনগোষ্ঠী অত্যন্ত শান্তিপ্রিয়, সৌহার্দ্যপূর্ণ আচরণের অধিকারী এবং আইন মেনে চলার প্রতি শ্রদ্ধাশীল। পশ্চিমা বিশ্বেও বাংলাদেশ সহনশীল মুসলিম অধ্যুষিত দেশ বলে বারবার প্রশংসিত হয়েছে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে গত কয়েক বছর থেকে কিছু বিপথগামী যুবক ইন্টারনেটভিত্তিক বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যম ও ব্লগে আল্লাহ, রাসূল ও ইসলামের বিরুদ্ধে জঘন্য ও প্রকাশ অযোগ্য ভাষায় ধর্ম অবমাননামূলক বক্তব্য ও উক্তি প্রচার করে বাংলাদেশের এই সৌহার্দ্যপূর্ণ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও সুশৃঙ্খল সমাজ ব্যবস্থাকে ভেঙে দেওয়ার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। আর এই দুষ্টুচক্রকে নানাভাবে সহযোগিতা ও উৎসাহ দিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশের উন্নতি ও অগ্রগতি সহ্য করতে না পারা দেশী-বিদেশী একটি ষড়যন্ত্রকারী মহল।
হেফাজত আমীর বলেন, ধর্মের বিরুদ্ধে কুৎসা ও বিদ্বেষ ছড়িয়ে দেশকে অস্থিতিশীল করার ভয়াবহ এই চক্রান্ত আঁচ করেই হেফাজতে ইসলাম ৩ বছর আগে থেকেই এদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার জন্যে বারবার সরকারের প্রতি আহ্বান এবং ১৩ দফা দাবি উত্থাপন করেছে। যার অন্যতম দাবি ছিল, ধর্ম অবমাননার বিরুদ্ধে মৃত্যুদ-ের বিধান রেখে কঠোর আইন পাস। আমাদের পক্ষ থেকে বারবারই বলা হচ্ছিল যে, হেফাজতের আন্দোলন ও প্রতিবাদ ছিল মানুষে মানুষে সৌহার্দ্য ও সামাজিক শান্তি-শৃঙ্খলা অক্ষুণœ রেখে জনগণের ঐক্যকে আরো মজবুত করে দেশকে উন্নতির দিকে এগিয়ে নেওয়ার উদ্দেশ্যেই। প্রধানমন্ত্রী গত ১৪ এপ্রিল ইসলামবিদ্বেষী ব্লগারদের বিরুদ্ধে তার নিজস্ব মানসিক যন্ত্রণা ও ক্ষোভের যে প্রকাশ করেছেন, তাতে হেফাজতের দাবির যৌক্তিকতা জোরালোভাবে প্রমাণিত হয়েছে।
বিবৃতিতে হেফাজত আমীর বলেন, প্রধানমন্ত্রীর বর্তমান উপলব্ধির প্রেক্ষিতে বিকৃত ও নোংরা মানসিকতার ধর্মবিদ্বেষী এসব দুষ্টুচক্রকে দমন করার জন্যে অবিলম্বে ধর্ম অবমাননাকারীদের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ শাস্তির বিধান রেখে কঠোর আইন পাসের জন্য তার প্রতি জোরালো আহ্বান জানাচ্ছি। কারণ দেশের শান্তি-শৃঙ্খলা ও স্থিতিশীলতার জন্যে এটা জরুরি। দেশে এ ধরনের কঠোর আইন ও আইনের প্রয়োগ থাকলে দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রকারীরা চরমপন্থার দিকে মানুষকে ঠেলে দেওয়ার কোনোই সুযোগ পাবে না।
হেফাজত আমীর আরো বলেন, আমরা সব সময় দেশের আইন মেনে চলার প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা কখনোই আইনকে নিজের হাতে তুলে নেওয়ার পক্ষে নই বলেই শাপলা চত্বরের এত বড় বিয়োগান্তক ঘটনার পরও লাখ লাখ নেতা-কর্মী ও সমর্থককে ধৈর্যধারণ ও শান্ত থাকার নির্দেশ দিয়েছি। আর আইনের শাসনকে সমুন্নত রাখতে চাই বলেই নানা দমন-পীড়নের মধ্যেও আমরা বারবার ধর্ম অবমাননাকারীদের বিরুদ্ধে আইন প্রণয়ন ও আইনের আওতায় বিচারের কথা বলে আসছি। সুতরাং আলেম সমাজের বিরুদ্ধে কথিত জঙ্গিবাদ বা চরমপন্থার অভিযোগ উত্থাপনের কোনোই সুযোগ নেই।



 

Show all comments
  • Moon ১৮ এপ্রিল, ২০১৬, ১১:৩৪ এএম says : 0
    ধমের বিরুদ্ধে কেউ লিখলে অবশ্যই তাকে শাস্তির আওতায় আনতে হবে।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ধর্ম অবমাননার বিরুদ্ধে আইন প্রণয়নের যৌক্তিকতা আরও জোরালো হয়েছে -আল্লামা শফী
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ