পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
‘বাঘ বাঁচাই, বাঁচাই বন, রক্ষা করি সুন্দরবন’ এ প্রতিপাদ্যে গতকাল বিশ্ব বাঘ দিবসের জাকজমকপূর্ণ নানান আয়োজন থাকলেও সেই বাঘের জীবনই বিপন্ন। সুন্দরবনের রাজা হিসেবে খ্যাত, বাঙালী জাতির শৌর্য-বীর্যের প্রতীক রয়েল বেঙ্গল টাইগার এখন হয়ে পড়েছে কোনঠাঁসা। বাঘের আশ্রয়স্থলে হস্তক্ষেপ, চোরা শিকারীদের উপদ্রব, খাদ্যের অভাব এবং খাদ্য শৃঙ্খলে প্রভাব, বাঘ-মানুষ দ্ব›দ্ব, সুন্দরবনে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব, এবং বনবিভাগের গুরুত্বহীনতার কারণে দিন দিন সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা কমছে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। তবে বাঘের সঠিক সংখ্যা কত, তাও আজো এক রহস্য।
সূত্র জানায়, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে ক্যামেরা ট্র্যাপিং পদ্ধতিতে সুন্দরবনে বাঘ শুমারি শুরুর পর মে মাসে সম্পন্ন হয়। এরপর দু’ মাসেও শুমারির ফল প্রকাশ হয়নি। ফলে সুন্দরবনে বিশ্বখ্যাত রয়েল বেঙ্গল টাইগারের সংখ্যা সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানা সম্ভব হচ্ছে না। তবে, আগামী বছরের প্রথম দিকে শুমারির ফল প্রকাশের সম্ভাবনার কথা বলেছেন কর্তৃপক্ষ।
স্থানীয়রা জানায়, খাদ্যের অভাবে সুন্দরবনের বাঘ এখনও লোকালয়ে চলে আসছে। লোকালয়ে এলে এসব বাঘ মানুষসহ হামলে পড়ছে গবাদি পশুর ওপর। প্রায়ই এসব ঘটনা ঘটায় আতঙ্ক বাড়ছে সুন্দরবন সংলগ্ন উপকূলের মানুষদের মধ্যে। সুন্দরবন সংলগ্ন এলাকাগুলোতে গত ১৮ বছরে ৫০টি বাঘ পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। আর গত একযুগে হয়েছে ৩৯টি। এসময়কালে বাঘের আক্রমণে ২৩২ জন মানুষ নিহত হয়েছেন। সর্বশেষ গত ২৩ জানুয়ারি ২০১৮ পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের জিউধরা স্টেশনের কাছে গুলিশাখালী গ্রামে বন বিভাগের চোখের সামনে গ্রামবাসী একটি বাঘ পিটিয়ে হত্যা করে।
বন বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, ২০০৪ সালের গবেষণায় সুন্দরবনে বাঘ ছিল ৪৪০টি। এর মধ্যে পুরুষ ১২১টি, স্ত্রী ২৯৮টি এবং বাচ্চা রয়েছে ২১টি। ২০১৫ সালে ক্যামেরা ট্র্যাপিংয়ের মাধ্যমে বাঘ গণনা করা হয়। এতে ১০৬টি বাঘের অস্তিত্ব পাওয়া যায়। সূত্রমতে, বাঘের প্রধান শত্রæ চোরা শিকারী। এরা সব সময়ই সক্রিয় থাকে রয়েল বেঙ্গল নিধনে। এছাড়াও রয়েল বেঙ্গলের খাবারের অভাব রয়েছে সুন্দরবনে। যে কারণে বাঘ লোকালয়ে চলে আসছে এবং মানুষের হামলার শিকার হয়ে মারা পড়ছে। এক হিসেবে দেখা গেছে, প্রতিবছর প্রায় ৩০জন মানুষকে বাঘ হত্যা করছে এবং ৭০টি গবাদি পশু বাঘের পেটে যাচ্ছে। এতে বোঝা যায়, সুন্দরবনের ভিতরে বাঘের খাদ্যের ঘাটতি রয়েছে।
এদিকে, বিশ্ব বাঘ দিবস উপলক্ষে বন অধিদপ্তরের উদ্যোগে গতকাল রোববার খুলনার শহীদ হাদিস পার্ক থেকে বর্ণাঢ্য র্যালি ও অফিসার্স ক্লাবে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব। অন্যান্য অতিথির মধ্যে ছিলেন খুলনা সিটি কর্পোরেশনের নবনির্বাচিত মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব আবদুল্লাহ আল মোহসীন চৌধুরী। সভাপতিত্ব করেন প্রধান বন সংরক্ষক মোহাম্মদ সফিউল আলম চৌধুরী। বক্তারা বাঘ সুরক্ষায় জনসচেতনতার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, বাঘ জাতীয় সম্পদ। এই প্রজাতির বংশ বিস্তার ও নিরাপত্তা যাতে কোনভাবেই বিঘিত না হয় সে বিষয় সকল সজাগ থাকতে হবে। উপমন্ত্রী জ্যাকব বনবিভাগে প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা দেন।
উল্লেখ্য, বিশ্বের ১৩টি দেশে বাঘের অস্তিত্ব রয়েছে। দেশগুলো হচ্ছে- বাংলাদেশ, ভারত, বার্মা, থাইল্যান্ড, কম্বোডিয়া, ইন্দোনেশিয়া, চীন, মালয়েশিয়া, ভিয়েতনাম, ভুটান, লাওস, নেপাল ও রাশিয়া। ২০১৫ সালের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বে বাঘের সংখ্যা ৪ হাজার। আর সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা ১০৬টি। বিশ্বের ১৩টি দেশের মধ্যে সুন্দরবন অন্যতম।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।