Inqilab Logo

শুক্রবার ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অবশেষে বিদেশ থেকে এলো শিলা উৎপাদন যন্ত্রপাতি

প্রকাশের সময় : ১৮ এপ্রিল, ২০১৬, ১২:০০ এএম

এমএ জলিল সরকার পার্বতীপুর (দিনাজপুর) থেকে : দেশের একমাত্র ও বৃহৎ পার্বতীপুর উপজেলার মধ্যপাড়া পাথর খনির বিদেশি মাইনিং ইক্যুইপমেন্ট বা যন্ত্রপাতির অভাবে প্রায় ৭ মাস ধরে পাথর উৎপাদন বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জার্মানিয়া-টেস্ট কনসোর্টিয়াম (জিটিসি)। সম্প্রতি বিদেশি যন্ত্রপাতি বা যন্ত্রাংশের মধ্যে খনির নতুন স্টোপ (শিলা উৎপাদন ইউনিট) নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় মূল খনন যন্ত্র রেইজ বোরিং মেশিনটি খনিতে এসে পৌঁছেছে। আবার পাথর উত্তোলন শুরু হবে এবং ছুটিতে থাকা খনি শ্রমিকরা কর্মে ফিরে আসবে বলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সূত্রে জানা যায়। গত সাত মাস খনি বন্ধের ফলে খনিতে বিক্রির মতো কোনো পাথর মজুদ না থাকায় পাথর বিক্রি বন্ধ রয়েছে। ফলে একদিকে যেমন খনির লোকসান হচ্ছে অপরদিকে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জিটিসির প্রতি মাসে কোটি কোটি টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে। জিটিসি জানান, মধ্যপাড়া পাথর খনি রক্ষণাবেক্ষন, ব্যবস্থাপনা এবং উৎপাদন কাজে নিয়োজিত বিশ্বের অন্যতম রাশিয়ান প্রযুক্তি প্রয়োগকারী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জার্মানীয়া ট্রেস্ট কনসোর্টিয়াম (জিটিসি) গত ২০১৪ সালের ২৪ ফেব্রæয়ারি হতে এক শিফটে পাথর উৎপাদন শুরু করে এবং প্রয়োজনীয় নতুন যন্ত্রপাতি ও যন্ত্রাংশের অভাব থাকায় পাথর উত্তোলন বন্ধ রাখে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। খনি কর্তৃপক্ষের স্থাপনকৃত পুরাতন ও প্রায় অব্যবহার যোগ্য যন্ত্রপাতির মাধ্যমে, দায়িত্ব গ্রহণের প্রায় ছয় মাসের মধ্যে খনি হইতে প্রতিদিন তিন শিফটের মাধ্যমে সাড়ে চার থেকে পাঁচ হাজার মেট্রিক টন পাথর উত্তোলন করে থাকতো উত্তোলনকারী প্রতিষ্ঠানটি। এমতাবস্থায় মধ্যপাড়া গ্রানাইট মাইনিং কোম্পানি লিমিটেডের সাথে ঠিকাদারি কোম্পানি জিটিসি স্বাক্ষরকৃত চুক্তি মোতাবেক, খনির উন্নয়ন কার্য্যক্রম এবং নতুন স্টোপ নির্মাণ করতে যে সকল বিদেশি ভারী যন্ত্রপাতি এবং খুচরা যন্ত্রাংশ আমদানি করা প্রয়োজন সেগুলোর প্রয়োজনীয় কাগজপত্র অনুমোদনের জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জিটিসি গত ২০১৪ সালের ০৮ ডিসেম্বর তারিখে খনি কর্তৃপক্ষ (মধ্যপাড়া গ্রানাইট মাইনিং কোম্পানি লিমিটেড) কে সরবরাহ করে। কেননা যন্ত্রপাতি ও যন্ত্রাংশ আমদানি করিতে ছয় হইতে নয় মাস পর্যন্ত সময় প্রয়োজন হয়। কিন্তু চুক্তি মোতাবেক ৩০ দিনের ভেতরে আমদানিতব্য যন্ত্রপাতি ও যন্ত্রাংশের অনুমোদন দেওয়ার লিখিত নিয়ম থাকা সত্তেও খনি কর্তৃপক্ষ ঠিকাদারি কোম্পানি জিটিসিকে প্রায় এক বছর পর নভেম্বর, ২০১৫ তারিখে সিংহভাগ যন্ত্রপাতি ও যন্ত্রাংশের অনুমোদন সাপেক্ষে ঋণপত্র খুলে দেয়। খনি পরিচালনার কাজে অপরিহার্য আমদানিতব্য যন্ত্রপাতি, যন্ত্রাংশ ও প্রয়োজনীয় মালামালের অনুমোদন দেওয়ার মাধ্যমে মধ্যপাড়া গ্রানাইট মাইনিং কোম্পানি লিমিটেড ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জিটিসির পক্ষে অক্টোবর, ২০১৫ তারিখ হতে খনি থেকে পাথর উত্তোলনের কাজ আর চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি। সূত্রটি দাবি করেন, জিটিসি জানুয়ারি ২৫, ২০১৫ তারিখে মধ্যপাড়া গ্রানাইট মাইনিং কোম্পানি লিমিটেড এবং পেট্রো বাংলার সর্বোচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাদের লিখিত চিঠির মাধ্যমে জানান যে, খনির সার্বিক অবস্থানের উন্নয়ন ও প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি, যন্ত্রাংশের অনুমোদন এবং অতি দ্রæততার সহিত সম্পন্ন না করলে খনি কার্যক্রম যে কোনো মুহূর্তে বন্ধ হতে পারে। দীর্ঘ সাত মাস পর খনির মূল খনন যন্ত্র বিদেশ থেকে খনিতে এসে পৌঁছায় খনি বন্ধের জন্য এবং পাথর উৎপাদন নিয়ে খনি কর্তৃপক্ষের মধ্যে যে সংশয় ছিল তা কেটে গেছে বলে একটি সূত্র জানায়। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ও খনি কর্তৃপক্ষ দু’পক্ষই জরুরি ভিত্তিতে উদ্যোগ নিলেই ভূ-গর্ভে পাথর কাটার যন্ত্র, স্থাপন ও শ্রমিকরা কর্মস্থলে ফিরে উৎপাদনে যেতে পারবে এবং খনিতে ফিরে পাবে তার ভরা যৌবন।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: অবশেষে বিদেশ থেকে এলো শিলা উৎপাদন যন্ত্রপাতি
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ