পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সিডর ও আইলায় আক্রান্ত উপকুলীয়াঞ্চলের অধিকাংশ বেড়িবাঁধ নাজুক। বাঁধ মেরামতে টেকসহ কোন পদক্ষেপ না থাকায় চলতি বর্ষা মৌসুমে মাঝারী ও ভারী বৃষ্টিতে চরম ঝুঁকিপূর্ণ উপকূলীয় অঞ্চল। রয়েছে বাঁধ ভাঙার আতঙ্ক। ঘুমের মধ্যেও বাঁধ ভাঙার আতঙ্কে আঁতকে ওঠেন তারা। বিশেষজ্ঞদের মতে, বাঁধ মেরামতে দীর্ঘস্থায়ী সমাধান না আসলে আগামী ২০ বছরের মধ্যে উপকূলের ৪ হাজার কিলোমিটার বাঁধ ধ্বংস হয়ে যাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ২০৫০ সালের মধ্যে এই সংখ্যা বেড়ে ১৪ হাজার কিলোমিটারে পৌঁছাতে পারে।
এলাকাবাসী জানায়, বিগত দুই অর্থবছরে বৃহত্তর খুলনাঞ্চলে টেকসই বাঁধ নির্মাণে স্থায়ী কোন মেগা প্রকল্প গ্রহন বা বাস্তবায়িত হয়নি। যা হয়েছে তা রুটিন ওয়ার্ক। বেড়িবাঁধের কোথাও কোথাও মাত্র দুই থেকে তিন ফুট চওড়া মাটির বাঁধ রয়েছে। তাও আবার চলতি বৃষ্টিতে ভিজে নরম হচ্ছে। ফলে টানা বর্ষণে বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হবে লোকালয়।
জানা গেছে, গত ১৫ দিনে খুলনা বাগেরহাট সাতক্ষীরা তথা গোটা উপকুলীয় অঞ্চলের অন্তত দুই শতাধিক স্পটে নীচু বাঁধ উপচে জোয়ারের প্রবেশ করেছে লোকালয়ে। বাঁধ ভেঙেছে বেশ কয়েকটি স্থানে। চরম ঝুকিপূর্ণ ৮টি উপজেলার বিভিন্ন বাঁধ। সূত্রমতে, বাঁধের অনেক জায়গা দিয়ে চুঁইয়ে পানি প্রবেশ করছে লোকালয়ে। যে কোনো সময় জীর্ণশীর্ণ বেড়িবাঁধ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে প্লাবিত হতে পারে এ অঞ্চলের ৩৫টি পোল্ডারের প্রায় ২শ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ। আর সেই আশঙ্কা নিয়েই চলতি দুর্যোগ মৌসুমে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে খুলনা জেলার কয়রা, দাকোপ, পাইকগাছা, সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর, আশাশুনি ও বাগেরহাট উপকূলের মোরেলগঞ্জ-শরণখোলা এলাকার লাখ লাখ মানুষ। দীর্ঘদিন সংস্কারের অভাবে উপকূল রক্ষা বেড়িবাঁধ জীর্ণশীর্ণ হয়ে পড়েছে। ১৫-২০ ফুট প্রস্থের বাঁধ ভাঙতে ভাঙতে আর মাত্র দু-তিন ফুট অবশিষ্ট রয়েছে।
উপকূলবাসী বলছেন, ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ সংস্কারে পানি উন্নয়ন বোর্ড কোনো উদ্যোগ নেয় না। বেড়িবাঁধ ভেঙে প্লাবিত হলেই তাদের দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়।
খুলনার কপোতাক্ষের অব্যাহত ভাঙনে পর্যায়ক্রমে পাইকগাছার কপিলমুনির ছয়টি গ্রামের প্রায় পাঁচ শতাধিক পরিবার গৃহহীন হয়ে পড়েছে। শুধু বাপ-দাদার ভিটামাটিই নয়, ইতোমধ্যে নদীতে বিলীন হয়ে গেছে কবরস্থান, মসজিদ, মাদরাসা, মন্দিরসহ বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান। ভাঙনের কবলে পড়ে জমিদাররাও আজ হয়েছেন উদ্বাস্তু। এখন যেভাবে ভাঙন চলছে বৃষ্টি বাড়লে ভাঙন আরও ভয়াবহ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সিডর অধ্যুষ্যিত কয়রার বেশ কয়েকটি ভেড়ীবাঁধ যে কোন মুহুর্তে বিলিন হয়ে বন্যার রূপ নিতে পারে। ইতোমধ্যে দক্ষিণ কয়রায় বেশ কয়েকটি পোল্ডারের ভেড়ীবাঁধ দিয়ে জোয়ারের পানি উপচে পড়ছে। বৃহত্তর খুলনার রূপসা, ভৈরব, পশুর, চালনা, মংলা, শিবসা, কপোতাক্ষ, ইছামতি, কাকশিয়ালি, শ্যামনগর, আশাশুনি খোলপেটুয়া, মরিচাপ ও কয়রার নদ নদীতে পানি বিপদ সীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। যে কোন সময় নদী ভাঙ্গন ভয়বহ রূপ নিতে পারে।
এদিকে, সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার নাকনা, হরিষখালী, কোলা, শ্রীপুর, মনিপুর, খাজরা বাজার ও গদাইপুর পয়েন্টে কপোতাক্ষ নদের বেড়িবাঁধ দুর্বল হয়ে পড়েছে। শ্যামনগর উপজেলার দ্বীপ ইউনিয়ন গাবুরা’র বেশি নাজুক নাপিতখালী, গাগড়ামারি, লেবুবুনিয়া, পদ্মপুকুর ইউনিয়নের বন্যতলা, কামালকাটি, চাউলখোলা, চন্দ্রদ্বীপ ও পাতাখালী পয়েন্টে খোলপেটুয়া এবং কপোতাক্ষ নদীর বেড়িবাঁধে ভয়াবহ ভাঙন দেখা দিয়েছে। এছাড়া একই উপজেলার ভাঙন আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে রমজাননগর ইউনিয়নের মাদারনদীর শেখবাড়ি মসজিদ ও চৌকিদারপাড়া এবং কালিন্দি নদীর পশ্চিম কৈ’খালীর মানুষ। দুর্গাবাটি ও পোড়াকাটলায় খোলপেটুয়া নদীর এবং দাতিনাখালীতে চুনা নদীর বেড়িবাঁধে মারাত্মক ফাটল দেখা দিয়েছে।ভঙ্গুর হয়ে পড়েছে চিরচেনা উপকূলের হাজার হাজার কৃষি, পরিবেশ, অবকাঠামো এবং জীবন-জীবিকাসহ ৩ কোটি মানুষের টিকে থাকার অবলম্বনই এখন। পরিবেশ অধিদপ্তরের ক্লাইমেট চেঞ্জ সেল প্রণীত বাংলাদেশ ক্লাইমেট চেঞ্জ ইমপ্যাক্ট এবং ভালনারেবেলিটি শীর্ষক এক গবেষণাপত্রে এই তথ্য জানা গেছে। উল্লেখ্য, দুর্যোগ আসলেই কেবল টনক নড়ে কর্তৃপক্ষের। মন্ত্রী এমপি জনপ্রতিনিধিরা স্বস্তা বাহাবা নিতে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। তড়িৎ কিছু কর্মকান্ড শুরু হয়। কিন্তু তাতে দীর্ঘ ও স্থায়ী কোন সমাধান পাচ্ছে না উপকূলবাসী।।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।