Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

‘কয়লা চুরির ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রধানমন্ত্রী’

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৪ জুলাই, ২০১৮, ১২:০১ এএম

বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের কয়লা চুরি হয়ে যাওয়ার ঘটনায় প্রধানমন্ত্রী ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি জানতে চান সোয়া লাখ টন কয়লা কোথায় গেল। এ ঘটনার তদন্ত করাও নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
গতকাল সোমবার বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার এসব তথ্য সাংবাদিকদের জানান। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়টাই বলেছেন যে, সকলকে জানান দেওয়া। সকলকে আগে থেকে প্রস্তুতি নেওয়া, সকলে যেন ধৈর্য ধরে। প্রধানমন্ত্রী কি এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ সাংবাদিকের এক প্রশ্নে তিনি বলেন, অবশ্যই, উনি তো আমার মন্ত্রী, এই বিভাগের মন্ত্রী।
প্রতিমন্ত্রীর আগে পিডিবির চেয়ারম্যান খালেদ মাহমুদ বিদ্যুৎ ভবনে সাংবাদিকদের বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, মানুষের যেন ভোগান্তি কম হয় সেদিকে নজর রাখতে হবে। কয়লা চুরির ঘটনায় মামলা করার জন্যও ইতোমধ্যে পেট্রোবাংলাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কয়লা সরবরাহ না পাওয়ায় বড়পুকুরিয়া কয়লাভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন রোববার রাতে বন্ধ হয়ে গেছে। এর আগে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে জাতীয় পাবলিক সার্ভিস দিবস উদযাপন ও জনপ্রশাসন পদক বিতরণ অনুষ্ঠান শেষে প্রধানমন্ত্রী সচিবালয়ে তার কার্যালয়ে যান। সেখানে জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী, সংশ্লিষ্ট সচিব, পিডিবি ও পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যানদের নিয়ে বৈঠকে করেন। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নে নসরুল হামিদ বলেন, উনি (প্রধানমন্ত্রী) পূর্ণ তদন্ত করতে বলেছেন। প্রধানমন্ত্রী কি এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, অবশ্যই, উনি তো আমার মন্ত্রী, এই বিভাগের মন্ত্রী। প্রতিমন্ত্রী জানান, এ ঘটনাটা অনেক দিন থেকে হয়ে আসছে। আমরা পুরোটা কাজে নেমেছি। কয়লা উধাওয়ের ঘটনায় মামলা করার জন্যও ইতোমধ্যে পেট্রোবাংলাকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। নসরুল হামিদ বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়টাই বলেছেন যে, সকলকে জানান দেয়া। সকলকে আগে থেকে প্রস্তুতি নেয়া, সকলে যেন ধৈর্য ধরে। তিনি আরো বলেন, দুমাস আগে থেকেই বিদ্যুৎ বিভাগ থেকে বলা হচ্ছিল, তাদের কয়লার সঙ্কট চলছে। কিন্তু ওখানকার যে প্রধান প্রকৌশলী তিনি বলছিলেন, কোনো সঙ্কট নেই। তখন বিদ্যুৎ বিভাগ থেকে তদন্ত করা হলে তথ্যটা উদঘাটন হয়।
অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে ১ লাখ ১৬ হাজার টন কয়লা খোলা বাজারে বিক্রি করে আনুমানিক ২২৭ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠে বড় পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক হাবীব উদ্দিন আহমদ ও অন্যদের বিরুদ্ধে। সবশেষ কয়লা সরবরাহ না পাওয়ায় বড়পুকুরিয়া কয়লাভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন রোববার রাতে বন্ধ হয়ে যায়।
কয়লার এই অবস্থা জানাজানির পর খনির মহাব্যবস্থাপক (মাইন অপারেশন) নুরুজ্জামান চৌধুরী ও উপ-মহাব্যবস্থাপক ( স্টোর) খালেদুল ইসলামকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। এরপর খনির শীর্ষ কর্মকর্তা ব্যবস্থাপনা পরিচালক হাবিব উদ্দিন আহমদকে অপসারণ করা হয়। আর দায়িত্ব পান পেট্রোবাংলার পরিচালক আইয়ুব খান।
উত্তোলনযোগ্য কয়লার মজুদ শেষ হয়ে যাওয়ায় ১৬ জুন থেকে বড়পুকুরিয়া খনির কয়লা উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। পুনরায় কয়লা উত্তোলন শুরু হবে আগস্ট মাসের শেষে। এ সময়ের মধ্যে পার্শ্ববর্তী বড়পুকুরিয়া কয়লাভিত্তিক ৫২৫ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতার তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রটি চালু রাখার জন্য প্রয়োজনীয় কয়লার মজুদ রয়েছে বলে ইতিপূর্বে কয়েক দফা পিডিবিকে নিশ্চিত করে খনি কর্তৃপক্ষ। কিন্তু খনি কর্তৃপক্ষ তিন-চারদিন আগে পিডিবিকে জানিয়ে দেয় খনির কোল ইয়ার্ডে কয়লার মজুদ প্রায় শেষ পর্যায়ে বিদ্যুৎ কেন্দ্রে আর বেশিদিন কয়লা সরবরাহ করা সম্ভব হবে না। সেইসঙ্গে বিদ্যুৎ কেন্দ্র কয়লা সরবরাহ কমিয়ে দেয়। বর্তমানে প্রতিদিন মাত্র ৮শ’ থেকে ১ হাজার টন কয়লা সরবরাহ করা হচ্ছে। তা দিয়ে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের তিনটি ইউনিটের মধ্যে একটি ইউনিট চালু রাখা হয়েছে এবং উৎপাদন কমে দাঁড়িয়েছে ১৪০ মেগাওয়াটে। কয়লার অভাবে চার-পাঁচদিনের মধ্যে বড়পুকুরিয়া ৫২৫ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতার বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাবে বলে জানা গেছে। খনি কর্তৃপক্ষের হিসাবে কোল ইয়ার্ডে কয়লা থাকার কথা প্রায় দেড় লাখ টন। কিন্তু বাস্তবে শুক্রবার পর্যন্ত ছিল মাত্র পাঁচ থেকে ছয় হাজার টন কয়লা। এক লাখ ৪২ হাজার টন কয়লার কোনো হদিস নেই।
এদিকে কয়লা নিয়ে দুর্নীতির খবর অনুসন্ধানের জন্য তিন সদস্যের একটি কমিটি করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।



 

Show all comments
  • Abdul Hakim ২৪ জুলাই, ২০১৮, ২:৪১ এএম says : 0
    প্রথমে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের সোনা গায়েব তারপর কয়লা ! তারমানে সোনা গলে গেছে ?
    Total Reply(0) Reply
  • Mohammed Nuruzzaman ২৪ জুলাই, ২০১৮, ২:৪২ এএম says : 0
    shame...
    Total Reply(0) Reply
  • Setara Mozumder ২৪ জুলাই, ২০১৮, ২:৫৭ এএম says : 0
    এই দেশে সব কিছুই গায়েব হবে...ব্যাংকের টাকা, রিজার্ভের টাকা, কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক থেকে স্বর্ণ আর এখন কয়লা. কিছু দিন পর ইটা বালু সব গায়েব হয়ে যাবে
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: কয়লা চুরি প্রধানমন্ত্রী’
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ