পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
পলাশ মাহমুদ : বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্পোরেশনের (বিআরটিসি) সুইডেন থেকে কেনা ৫০টি দ্বিতল বাসের মধ্যে ৪৯টিই বিকল হয়ে পড়েছে। এর মধ্যে গাজীপুরে বিআরটিসি’র কেন্দ্রীয় বাস মেরামত কেন্দ্রে রয়েছে ২৩টি আর মিরপুর ডিপোতে রয়েছে ২৬টি। এসব বাসের ক্রয়মূল্য প্রায় ৫২ কোটি টাকা। ঋণের টাকায় কেনা এসব বাস না চললেও সুদসহ ঋণ পরিশোধ করতে হচ্ছে সরকারকে। ইচ্ছাকৃতভাবে অবহেলার করে এসব বাস নষ্ট করে ফেলা হয়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
এ বিষয়ে পরিবহন বিশেষজ্ঞ ও বুয়েটের অধ্যাপক ড. সামসুল হক গণমাধ্যমকে বলেন, অবহেলায় জনগণের মূল্যবান সম্পদগুলো নষ্ট করে ফেলা হলো। সরকারি ছত্রছায়ায় থাকা কিছু সুবিধাভোগী বাসগুলোকে নষ্ট করেছেন। জনগণকে সেবা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে জনগণের টাকা পানিতে ফেলেছেন তারা। সঠিকভাবে মেরামত করা হলে জনগণের সেবায় আরও ২৫ থেকে ৩০ বছর ভলভোগুলো সার্ভিস দিতে পারতো। কিন্তু অবহেলায় অকালেই বিকল হয়ে পড়ে বাসগুলো।
এ বিষয়ে বক্তব্য দেওয়ার জন্য বিআরসিটির চেয়ারম্যান মিজানুর রহমানের মোবাইলে কল করার চেষ্টা করা হলেও কথা বলা সম্ভব হয়নি।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, বিআরটিসি’র এ দুই ডিপোতে দ্বিতল বাস ছাড়াও বহুবাস বিকল অবস্থায় পড়ে আছে। এসব বাস একপ্রকার পরিত্যক্ত অবস্থায় ভাগাড়ে ফেলার মতো অবস্থা। ডিপো এরিয়ার মধ্যে বাসগুলো এখন আগাছা আর লতাপাতায় ঘেরা। রোদ-বৃষ্টি সবই যাচ্ছে এগুলোর উপর দিয়ে। কিন্তু বাসগুলো ধোয়া-মোছা বা পরিষ্কার করার কেউ নেই। ফলে ধীরে ধীরে বাসের বডিগুলোও ক্ষয়ে যাচ্ছে। যানা যায়, ১৯৯১ সালে বিআরটিসি ৫০টি দ্বিতল বাস কোনার প্রকল্প হাতে নেয়। এ প্রকল্পে অর্থায়ন করে সুইডিশ ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট এজেন্সি (সিডা)। সিডা এ প্রকল্পে ৬১ কোটি টাকা অর্থায়ন করে। তবে এর মধ্যে অর্ধেক ছিল ও বাকী অর্ধেক অনুদান। প্রতিটি বাসের জন্য তখন মূল্য নির্ধারণ হয় ১ কোটি ৩ লাখ টাকা। এ হিসেবে ৫০ বাসের মূল্য দাঁড়ায় ৫২ কোটি টাকা। বাকী ৯ কোটি টাকা রাখা হয় বাসগুলো রক্ষণাবেক্ষণের জন্য।
রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ৯ কোটি টাকা বরাদ্দ থাকলেও সেগুলো এখন ধোয়ারও ব্যবস্থা নেই। উল্টো এসব বাস থেকে মূল্যবান সরঞ্জাম খুলে বিক্রি করা হয়েছে। ফলে এখন মেরামত করতে গেলে প্রতি বাসেই ৩০ থেকে ৫০ লাখ টাকা প্রয়োজন। কিন্তু বাসের এসব মূল্যবান যন্ত্রপাতি কোথায় গেল তার কোনো উত্তর নেই বিআরটিসি কর্তৃপক্ষের কাছে।
সুইডেন থেকে আমদানি করা এসব বাসের আয়ুষ্কাল ধরা হয়েছিল ১৫ বছর। ১৯৯৯ সালে প্রকল্পটি নেওয়ার সময় বছরে প্রতিটি বাস ছয় হাজার কিলোমিটার চালানো ও সাত লাখ ২০ হাজার যাত্রী পরিবহনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। কিন্তু ২০০৪ সাল পর্যন্ত প্রতিবাসে বছরে যাত্রী পরিবহন করা হয় তিন লাখ ১৪ হাজার ৮০০ জন। নষ্ট হওয়ার পর সেগুলোর যন্ত্রাংশ সময়মতো লাগানো হয়নি। ফলে ব্যবহারের ৮ বছরের মধ্যেই পরিত্যক্ত ও নষ্ট হয়ে যাচ্ছে বাসগুলো।
পরিবহন বিশেষজ্ঞদের মতে, ভলভো বাসের অর্থনৈতিক আয়ুষ্কাল ১৫ বছর পর্যন্ত ধরা হয়। তবে সুষ্ঠুভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করতে পারলে এসব বাস অনায়াসে ২০ বছর পর্যন্ত চলাচলের উপযোগী থাকে। অথচ ঠিকমতো রক্ষণাবেক্ষণ, সময়মতো ইঞ্জিনে তেল ও মবিল না দেওয়াসহ চুরি, দুর্নীতি ও অনিয়মের কারণে এসব কোটি টাকার ভলভো বাস অকালে বিকল হয়ে গেছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।