পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : বিপর্যয় কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়াতে কাক্সিক্ষত নির্বাহী কমিটি গঠন প্রক্রিয়া চলছে বিএনপিতে। রাজপথে উত্তাপ নেই, ইস্যু থাকলেও বিপরীতে বরফ জমেছে। তারপরও বজ্রাঘাতের মতো কিছু ঘটনা বিএনপি নেতাদের ভাবিয়ে তুলেছে। ভাবনার পাশাপাশি আতঙ্ক বিরাজ করছে হাইপ্রোফাইল নেতাদের মনে। কারণ, তাদের জনপ্রতি ১০ থেকে শত মামলা রয়েছে। কোনটি বিচারাধীন কোনটি রায়ের অপেক্ষায়। অনেকেই এখন জামিনে মুক্ত। স্বস্তিতে নেই বোদ্ধারাও।
বিএনপির শুভাকাক্সক্ষীদের অন্যতম গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব শফিক রেহমানকে ভিন্নরূপ ধারণ করে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তার একদিন আগে গ্রেফতার করা হয়েছে বিএনপি নেতা ও গাজীপুরের বর্তমান মেয়র অধ্যাপক আব্দুল মান্নানকে। এর আগে বিএনপির মহাসচিব মির্জ ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে কারাগারে প্রেরণ- অতঃপর মুক্তি এবং শীর্ষ নেতা বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা। মামলার দিনক্ষণ পড়ছে ঘন ঘন। সারা দেশেই বিএনপি নেতাকর্মীদের গ্রেফতার অব্যাহত আছে। রাজপথে কোন কর্মসূচি নেই, সাবধান বাণীও নেই। তাহলে কেন আকস্মিক এসব ঘটনা? এর নেপথ্যে কী কারণ? তা নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ করছে বিএনপির নীতি নির্ধারকগণ। এদিকে রাজনীতিবিদদের মতো রীতিমতো উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা ছড়িয়ে পড়েছে বোদ্ধা মহলে।
প্রশ্নের জবাবে বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য আ স ম হান্নান শাহ ইনকিলাবকে বলেন, আগামী সংসদ নির্বাচন জাতিসংঘের অধীনে হতে পারে এমন কানাঘুষা শুরু হয়েছে, সম্ভবত পরিণতির দিকটা হিসেব-নিকেশ করেই নিরাপদ প্রস্থানের পথ বেছে নিচ্ছে আওয়ামী লীগ। বিএনপির একাধিক নেতা জানান, প্রতিপক্ষের সুদূরপ্রসারী রাজনৈতিক দাবার চাল ধরতে খুব শিগগিরই বৈঠক করবেন শীর্ষ নেতা বেগম খালেদা জিয়া।
দলীয় দফতর সূত্রে জানা গেছে, সারাদেশে বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে মামলার সংখ্যা প্রায় ৩০ হাজার। শুধু রাজধানী ঢাকা শহরেই সাড়ে তিন হাজারের মতো মামলা হয়েছে। আর এসব মামলার আসামি দুই থেকে আড়াই লাখের মতো নেতাকর্মী।
বিএনপি নেতাদের পক্ষে আইনী লড়াইয়ের অন্যতম সহযোগী এডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া জানান, জিয়া পরিবারের সবার বিরুদ্ধেই মামলা। চেয়ারপার্সনের বিরুদ্ধে দায়ের করা একটি মামলার রায় হতে পারে সহসাই। এছাড়াও সিনিয়র নেতাদের মধ্যে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে ৮৪, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন ১২, বিদেশে চিকিৎসাধীন ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ ১৮, এমকে আনোয়ার ৮, হান্নান শাহ ২০, ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া ২৩, মির্জা আব্বাস ৪৬ ও গয়েশ্বর রায়ের বিরুদ্ধে ১০টি মামলা রয়েছে। এছাড়া তরিকুল ইসলাম, ড. মঈন খান, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকারের বিরুদ্ধেও একাধিক মামলা রয়েছে। বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যানদের মধ্যে এম মোর্শেদ খান, আলতাফ হোসেন চৌধুরী, আব্দুল্লাহ আল নোমান, সেলিমা রহমান, মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদের বিরুদ্ধে গড়ে ৫টি করে মামলা হয়েছে। সাদেক হোসেন খোকার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে ডজনের বেশি। দলের সাত যুগ্ম মহাসচিব, ৯ সাংগঠনিক সম্পাদকের বিরুদ্ধে বর্তমান সরকারের আমলে দায়ের করা হয়েছে অসংখ্য মামলা। এছাড়া প্রতিটি অঙ্গ দলের শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে মামলার পাহাড় রয়েছে। নতুন করে গ্রেফতার ও জামিন বাতিলের ভীতিতে রয়েছেন প্রায় সবাই।
এদিকে বিএনপিপন্থী বোদ্ধা হিসেবে পরিচিত ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি প্রফেসর এমাজ উদ্দিন আহমেদসহ টিভি টক-শোতে যারা অংশ নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে ঝড় তোলেন তাদের মধ্যেও আতঙ্ক বিরাজ করছে।
ডেমোক্রেটিক লীগ ডিএলের প্রেসিডিয়াম মেম্বার ব্যারিস্টার রুমিন ফারহান তার প্রতিক্রিয়ায় ইনকিলাবকে বলেন, আমরা ২৪ ঘণ্টা অজানা ভীতির মধ্যে বসবাস করছি। ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ৮২ বছর বয়সী প্রবীণ সাংবাদিক শফিক রেহমান রাজপথে নামেননি, সরাসরি কোন রাজনৈতিক দলের সাথে সম্পৃক্তও নন, তাকে যে স্টাইলে গ্রেফতার করা হলো তাতে আমরা অবশ্যই বিস্মিত। শফিক রেহমানকে গ্রেফতার করেই ক্ষান্ত হয়নি সরকার তাকে ৫ দিনের রিমা- দিয়েছে। রিমা- শেষের পরপর দুইদিন শুক্র ও শনিবার। মানে সাত দিনের কেস। তার গ্রেফতারের মধ্যে সরকার সিগন্যাল দিতে চায় যে প্রবীণদের গ্রেফতারে দ্বিধা করেননি নবীনদের বেলাতো কি হবে তা বলার অপেক্ষাই রাখেনা। এ প্রসঙ্গে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সিনিয়র সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন ইনকিলাবকে বলেন, বিএনপিকে রাজপথে দাঁড়াতেই দিচ্ছে না। কোন রাজনৈতিক কর্মসূচিতেও নেই তারপরও অজানা ভীতি থেকে সরকার দেশজুড়ে কৌশলী ও নীরব গ্রেফতার চালাচ্ছে। তাতে হাইপ্রোফাইলই নয়, সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
প্রবীণ এই রাজনীতিক বলেন, বর্তমান সরকার বিরোধী দল নিশ্চিহ্ন করার যে রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে এটি একটি ভুল সিদ্ধান্ত। দমন-পীড়ন চালিয়ে নেতাকর্মীদের কিছু দিনের জন্য দমন করা যাবে, কিন্তু সরকারের জন্য শেষ পরিণতি ভালো হবে না।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।