পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
শামসুল ইসলাম : সরকার নির্ধারিত ওমরাহ যাত্রীদের ৫শ’ কোটা সম্পন্ন হওয়ায় অনেক ওমরাহ এজেন্সি ওমরাহ’র কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে। ওমরাহ’র কোটা বৃদ্ধির দাবী জানিয়ে বিভিন্ন ওমরাহ এজেন্সি ধর্মমন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমানের কাছে লিখিত আবেদন জানিয়েও কোনো সাড়া পাচ্ছে না। কোটা শেষ হওয়া ওমরাহ এজেন্সিগুলোর কেউ কেউ সউদী ওমরাহ কোম্পানীগুলোর কাছে ৫/৬ লাখ সউদী রিয়াল করে জামানত গচ্ছিত রেখে ওমরাহ যাত্রী পাঠাতে না পেরে বিপাকে পড়েছে। ওমরাহ যাত্রীর কোটা বৃদ্ধি করা না হলে বৈধ ওমরাহ এজেন্সিগুলো চরমভাবে আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হবে বলে ধর্ম মন্ত্রণালয়কে অবহিত করেছে। নির্ভরযোগ্য সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে। গত বছর সউদী আরবে ওমরাহ’র নামে আশংকাজনক ভাবে মানব পাচারের দরুন দীর্ঘ একবছর ওমরাহ বন্ধ ছিল। বহু কূটনৈতিক উদ্যোগের পর গত ১৫ ফেব্রুয়ারী বাংলাদেশের ওমরাহ মোফা চালু হয়। গত ১৮ ফেব্রুয়ারী মুজদালিফা এভিয়েশনের ৪৮জন ওমরাহ যাত্রীর প্রথম ওমরাহ ফ্লাইট মদিনার উদ্দেশে যাত্রা করে। মুজদালিফা এভিয়েশন এক মাসেই তাদের ৫শ’ কোটার ওমরাহ যাত্রীকে ওমরাহ পালন করে দেশে ফিরিয়ে এনেছে। গত ২০ মার্চ মুজদালিফা এভিয়েশনের স্বত্বাধিকারী গিয়াস উদ্দিন খান ওমরাহ’র অতিরিক্ত কোটা বৃদ্ধির জন্য ধর্মমন্ত্রীর কাছে লিখিত আবেদন জানিয়েছেন। এদিকে, সউদী ওমরাহ কোম্পানীগুলোর কাছে বাংলাদেশী ওমরাহ এজেন্সিগুলো আস্থা ফিরিয়ে আনতে পারছে না। ফলে সউদী ওমরাহ কোম্পানীগুলো বাংলাদেশী ওমরাহ এজেন্সিগুলোর অনুকূলে মোফা ইস্যু কমিয়ে দিয়েছে।
২০১৫ সালের তিন মাসে সউদী আরবে ওমরাহর নামে সংঘবদ্ধ চক্র ১০৪টি এজেন্সি’র মাধ্যমে প্রায় ১১ হাজারের উপরে মানব পাচার করেছে। ওমরাহ যাত্রীর ভিসা প্রাপ্তিতে সরকারী কোনো নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা না থাকায় অসাধু ওমরা এজেন্সির মালিকরা অবাধে মানব পাচারের সুযোগ পেয়েছিল। মানব
পাচারের দরুন বাংলাদেশী ওমরা যাত্রীর উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে মোফা ইস্যুর অন-লাইন বন্ধ (কান্ট্রি লগ) করে দিয়েছিল সউদী হজ মন্ত্রণালয়। এতে গত মাহে রমজানে বাংলাদেশী প্রকৃত ওমরা যাত্রীরা ওমরা পালন করতে পারেননি। এবাদতের মাস রমজানে প্রকৃত ওমরা যাত্রীরা মক্কা-মদিনায় গিয়ে রোজা রাখতে ও এতেকাফে অংশ নিতে পারেননি। সউদীতে মানব পাচারের ঘটনায় বাংলাদেশ বহির্বিশ্বে ইমেজ সংকটে ভুগছে। ধর্ম মন্ত্রণালয় এসব অভিযুক্ত ওমরাহ এজেন্সিগুলোর বিরুদ্ধে বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়েছে। কিন্তু রিভিউ-এর কারণে এসব শাস্তি এখনো বাস্তবায়ন হয়নি। ওমরাহর নামে মানব পাচারের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে গত বছর সউদী হজ মন্ত্রণালয় বেশ কিছু সউদী নামিদামী ওমরাহ কোম্পানীগুলোকে মোটা অংকের জরিমানাসহ কোম্পানীর কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়। পরবর্তীতে এদের কার্যক্রম চালু করে দেয়া হয়েছে। জেদ্দাস্থ ওমরাহ কোম্পানী আব্দুল আজিজ মুতলাক আল-হারবিকে ওমরার নামে মানব পাচারের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে সউদী সরকার গত বছর ১৭ মিলিয়ন সউদী রিয়াল জরিমানা করেছিল। ওমরাহ চালু হবার পর সউদী ওমরাহ কোম্পানী আব্দুল আজিজ মুতলাক আল-হারবি বাংলাদেশী ওমরাহ এজেন্সি ইউরো এয়ার ইন্টারন্যাশনাল ট্রাভেলস (৪৩১) কে গতকাল পর্যন্ত মাত্র ১১টি মোফা দিয়েছে। ইউরো এয়ার ইন্টারন্যাশনাল ট্রাভেলসের চেয়ারম্যান মাওলানা মোহাম্মদ মাহমুদুর রহমান গতকাল সউদী আরব থেকে দেশে ফিরে ইনকিলাবকে এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি সউদীর উক্ত ওমরাহ কোম্পানীর ম্যানেজারকে অনুরোধ জানিয়েও মোফার সংখ্যা বাড়াতে পারেননি। তারা বলেছে, ইস্যুকৃত ১১টি ওমরাহ’র মোফার যাত্রীরা ওমরাহ পালন শেষে দেশে ফিরে গেলেই পরবর্তী মোফা ইস্যু করা হবে। এসব ওমরাহ যাত্রী আগামী ২১ এপ্রিল ওমরাহ পালনে সউদী আরবে যাবেন। ধর্ম মন্ত্রণালয় সম্প্রতি ৫শ’ কোটার উর্ধ্বে কোনো ওমরাহ যাত্রীর ভিসা ইস্যু না করার জন্য ঢাকাস্থ সউদী রাষ্ট্রদূতকে লিখিতভাবে অনুরোধ জানিয়েছে। সউদী দূতাবাস কর্তৃপক্ষ বিষয়টি সউদী সরকারকে অবহিত করেছে। সউদী কর্তৃপক্ষের নির্দেশে দূতাবাস কর্তৃপক্ষ তাদের নোটিশ বোর্ডে ৫শ’ কোটার বেশি ওমরাহ ভিসা দেয়া হবে না বলে এক সার্কুলার ঝুলিয়ে দিয়েছে। উল্লেখ্য, গত বছর পর্যন্ত ওমরাহ এজেন্সিগুলো ৪/৫ হাজার করে ওমরাহ যাত্রীকে সউদী আরবে পাঠানোর সুযোগ পেয়েছিলো।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।