Inqilab Logo

রোববার ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

পাল্লা দিয়ে বাড়ছে অপরাধ

শামসুল হক শারেক, কক্সবাজার থেকে | প্রকাশের সময় : ২০ জুলাই, ২০১৮, ১২:০০ এএম

শত শত বছর ধরে মিয়ানমারে নির্যাতিত এবং শিক্ষা বঞ্চিত রোহিঙ্গা জাতির নারী-পুরুষরা জানেনা সভ্যতা সংস্কৃতির কিছুই। মিয়ানমারের সেনা পুলিশ ও মগদস্যুদের বর্বর নির্যাতনে সুন্দর কিছুই তারা দেখেনি। গত বছর আগস্ট মাসে মিয়ানমারের আরাকানে সেনা অভিযানে হাজার হাজার রোহিঙ্গা হতাহত হয়। ওই নির্যাতন থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয় রোহিঙ্গা। আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলো এখন অপরাধের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে। এই রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এখন দিন দিন পাল্লা দিয়ে বাড়ছে অপরাধ।
রোহিঙ্গা শিবিরকে কেন্দ্র করে অস্ত্র, মাদক ও নারী-শিশু পাচারের মত জঘন্য ঘটনাও দের্দাছে চলছে বলে অভিযোগ রয়েছে । এই অপরাধ কর্মকাÐের সাথে ক্যাম্পে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের সাথে দেশীয় কিছু কিছু অপরাধ চক্রের জড়িত থাকার কথাও জানা গেছে। রোহিঙ্গা ক্যাম্প কেন্দ্রীক বিভিন্ন অপরাধ কর্মকাÐে এ পর্যন্ত ১৪টি খুনের ঘটনা ঘটে । কয়েক ডজন ডাকাতি-সন্ত্রাসী ও শতাধিক অপরাধ কর্মকাÐ সংঘটিত হওয়ার কথাও জানা গেছে।
স্থানীয় অধিবাসীর সাথেও রোহিঙ্গারা সংঘর্ষে জড়িয়েছে বহুবার। আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকেও পরোয়া করছে না তারা। মিয়ানমারের বর্বর সেনা পুলিশ যেখানে আরাকান ইতিহাসের নিষ্ঠুরতম নির্যাতন করে দেশ ছাড়া করেছে। আর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বাংলাদেশের গর্বিত সেনাবাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদেরকে সু-শৃঙ্খলভাবে সেবা দিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শনকালে দেখা গেছে রোহিঙ্গারা সেনা সদস্য ও পুলিশের প্রতিও অসৌজন্যমুলক আচরণ করছে।
স্থানীয় অধিবাসীদের মতে, এই রোহিঙ্গারা বাংলাদেশের জন্য যেমন বোঝা, তেমনি পরিবেশ ও আইন শৃঙ্খলার জন্যও মারাত্মক হুমকি। তাদের মতে, যত দ্রæত সম্ভব রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠালে আমাদের দেশের জন্য মঙ্গল।
এদিকে, নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় রোহিঙ্গারা জানান, আধিপত্য বিস্তার ও অপকর্মকে কেন্দ্র করে উখিয়ার ২০টি ক্যাম্পে নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি চলাচ্ছে কিছু রোহিঙ্গা। প্রতিনিয়ত ঘটছে ধর্ষণ, হত্যা ও মারামারি। এসব ঘটনায় রোহিঙ্গা নেতা আরিফুল্লাহসহ এ পর্যন্ত প্রায় ১০ জন খুন হয়েছেন। হাতে গোনা কিছু রোহিঙ্গা এসব অপরাধকর্ম করে বেড়ালেও অধিকাংশ রোহিঙ্গা এ কারণে আতঙ্কে রয়েছে। সর্বশেষ প্রেম ঘটিত ব্যাপারে খুন হয়েছে এক রোহিঙ্গা।
সাবেক প্রেমিকের হাতে খুন হয় ওই রোহিঙ্গা নারীর স্বামী। উখিয়ায় মধুরছড়া ক্যাম্পে গত ৬ জুলাই এ ঘটনা ঘটে। নিহত মো. আলম ওরফে পেঠান (২৫) মধুরছরা রোহিঙ্গা ক্যাম্পের অধিবাসী নুরুল আলমের ছেলে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে প্রেমিকসহ মধুরছড়া ক্যাম্প এলাকার দুই রোহিঙ্গা যুবক আহসান শরিফের ছেলে এনামুল হক (২০) ও আব্দুর রহমানের ছেলে মো. ইদ্রিস (১৮) কে আটকও করেছে পুলিশ। পরের দিন কক্সবাজার আদালতে ১৬৪ ধারা জবানবন্দিতে হত্যার দায় স্বীকার করে তারা জানান, ভোর রাতে ঘরে ঢুকে তাকে গলাটিপে হত্যা করা হয়।
ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল খায়ের জানান, রোহিঙ্গারা আসলে খুুুবই বেপোয়ারা। এ পর্যন্ত ১৪টি হত্যাকাÐের ঘটনা, কয়েক ডজন ডাকাতি ও সন্ত্রাসী কর্মকাÐ সংঘটিত হয়েছে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে। এতে আটক হয়েছে শতাধিক রোহিঙ্গা। তবে ওসি জানান আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: অপরাধ

২০ ডিসেম্বর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ