Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

‘বিশ্ববিদ্যালয়ে দ্বৈত প্রশাসন দেখতে পাচ্ছি’

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৯ জুলাই, ২০১৮, ৯:০২ পিএম

শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকারীদের বিচারসহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার দাবি জানিয়ে সংহতি সমাবেশ করেছেন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা।

বৃহস্পতিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে ‘নিপীড়নবিরোধী শিক্ষকবৃন্দ'র ব্যানারে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা এতে সংহ‌তি জ্ঞাপন করেন। এ শিক্ষক‌দের সমাবেশ চলাকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞানসহ বি‌ভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা এতে যোগদান করেন।

সমাবেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তত ৭০ জন শিক্ষক সংহতি জানিয়ে স্বাক্ষর করেন।

ঢাবি অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. এম এম আকাশ সংহতি জানিয়ে বলেন,‘ আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ে দ্বৈত প্রশাসন দেখতে পাচ্ছি। প্রথমটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবং অন্যটি হল হলে যারা আধিপত্য বিস্তার করে গেস্টরুমে শিক্ষার্থীদের নানারকমের নির্যাতন করছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি যদি হলের কর্তৃত্ব হল প্রশাসনকে দিতে ব্যর্থ হয়, যদি তিনি ক্ষমতাসীনদের চাপে সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করতে ব্যর্থ হোন, তাহলে আপনাকে বলব যে, আপনি নিজ ইচ্ছায় পদত্যাগ করুন।

সংহতি সমাবেশে অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, ভিসির বাড়িতে যখন হামলা হয়েছে। তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ বলছে এ হামলার সাথে আন্দোলনকারী কেউ জড়িত নয় । তাহলে কেন? আজকে আন্দোলনকারীদেরকে গ্রেফতার করে নিযার্তন করা হচ্ছে। হামলার ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কিন্তু সে তদন্ত কমিটির রিপোর্ট প্রকাশ না করে, উল্টো আন্দোলনকারীদের রিমান্ডে নিয়ে নানা রকম নির্যাতন করা হচ্ছে। এতে স্পষ্ট হয় যে ভিসির বাড়ি আক্রমণ করার উদ্দেশ্যে এ আন্দোলনকে নষ্ট করা এবং এ আক্রমণ ছি‌লো এক‌টি প‌রিক‌ল্পিত, একটি অন্তর্ঘাত ।

তিনি আন্দোলনকারীদের উদ্দেশ্যে করে বলেন, প্রবল চাপ উপেক্ষা করে তারা আন্দোলনে নেমেছে। হামলার প্রতিবাদ জানাতে তারা আজকে রাস্তায় নেমেছে। তাদের সাথে মেয়ে শিক্ষার্থীরাও নানা বাধা উপেক্ষা করে আন্দোলনে আসছে। এজন্য তাদেরকে ধন্যবাদ জানাই। আজকে দেশে যে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। এটি হলো শিক্ষাথীদের দীর্ঘ দিনের গভীর ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ । প্রধানমন্ত্রী প্রশ্ন করেছেন, এ আন্দোলনে শিক্ষকরাও কেন যুক্ত হয়েছে? আপনাকে বলতে চাই আপনি যদি এক ঘণ্টার জন্য শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলতেন, তাহলে দেখতে পারতেন তা‌দের ম‌ধ্যে ক্ষোভ কতটুকু এবং এ আন্দোলন কীভাবে গভীর ক্ষোভ থেকে তৈরী হয়েছে। তা আপনি দেখতেন ।

সমা‌বেশে সংহ‌তি জা‌নি‌য়ে বুয়েটের অধ্যাপক ড. হাসিবুর রশিদ বলেন, আমি একটি ন্যায্য আন্দোলনে সংহতি জানাতে এসেছি। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দৃষ্টিতে আমি তো বহিরাগত। কিছুদিন আগে দেখলাম তারা বহিরাগতদের ক্যাম্পাসে প্রবেশ করা নিষিদ্ধ করেছে। আসলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন অন্ধকারে আছে। তারা আলোকে ভয় পায় । আমি শিক্ষার্থীদের বলব তোমরা প্রশাসনের মতো ভয় পেয়ে না । আন্দোলনকারীদের যারা ধমকিয়ে রাখতে আসবে, তাদেরকেও আমরা প্রতিহত করতে তোমাদের পাশে দাঁড়াতে প্রস্তুত আছি।

সমাবেশে অন্য‌ন্যের ম‌ধ্যে বক্তব্য রাখেন গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. গীতি আরা নাসরীন, ফাহমিদুল হক, সহযোগী অধ্যাপক আব্দুর রাজ্জাক খান, আর্ন্তজাতিক সম্পর্ক বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক তানজীম উদ্দীন খান, ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক তাসনীম সিরাজ মাহবুব, সমাজবিজ্ঞানের সহযোগী অধ্যাপক সামিনা লুৎফাসহ অন্যান্য শিক্ষক।

সংহতি সমাবেশ থেকে সরকার এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে ছাত্র-শিক্ষকদের ওপর হামলার বিচার, সংসদে কোটা বিষয়ে দেয়া প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের মাধ্যমে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে দেয়াসহ সাত দফা দাবি জানান সমাবেশের সভাপতি গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক গীতি আরা নাসরীন।

 

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ