অর্থনৈতিক রিপোর্টার ঃ বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে ছুটির কারণে গত সপ্তাহে দেশের শেয়ারবাজারে এক দিন কম লেনদেন হয়েছে। এ কারণে আর্থিক লেনদেনেও তার প্রভাব পড়েছে। আগের সপ্তাহের তুলনায় গত সপ্তাহে দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সাড়ে ১৪ শতাংশ কম লেনদেন হয়েছে। আর্থিক লেনদেন কমার পাশাপাশি গত সপ্তাহে বাজার মূলধন, সূচক ও মূল্য-আয় (পিই) অনুপাতও কমেছে।
বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, গত সপ্তাহে ৪ কার্যদিবসে ডিএসইতে আর্থিক লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৭৪৭ কোটি ২৮ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ২ হাজার ৪৩ কোটি ৩২ লাখ টাকা। এ হিসাবে আগের সপ্তাহের তুলনায় আর্থিক লেনদেন কমেছে ১৪ দশমিক ৪৯ শতাংশ।
তবে গড় হিসাবে আগের সপ্তাহের তুলনায় আর্থিক লেনদেন সামান্য বেড়েছে। গত সপ্তাহে গড় আর্থিক লেনদেন হয়েছে ৪৩৬ কোটি ৮২ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে এ লেনদেনের পরিমাণ ছিল ৪০৮ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। সে হিসাবে আগের সপ্তাহের তুলনায় গত সপ্তাহে গড় লেনদেন বেড়েছে ৬ দশমিক ৮৯ শতাংশ।
গত সপ্তাহে মোট লেনদেনের ৮৭ দশমিক ৫৫ শতাংশ ‘এ’ ক্যাটাগরিভুক্ত, ১ দশমিক ৬৭ শতাংশ ‘বি’ ক্যাটাগরিভুক্ত, ১০ দশমিক ০১ শতাংশ ‘এন’ ক্যাটাগরিভুক্ত এবং ০ দশমিক ৭৮ শতাংশ ‘জেড’ ক্যাটাগরিভুক্ত কোম্পানিগুলোর মধ্যে লেনদেন হয়েছে।
এদিকে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দর কমে যাওয়ায় গত সপ্তাহে ডিএসইর তিনটি সূচকই কমেছে। সপ্তাহজুড়ে লেনদেন হওয়া ৩২৫টি ইস্যুর মধ্যে ৮০টির দর বেড়েছে, কমেছে ২২টির ও অপরিবর্তিত ছিল ২৩টির দর। সপ্তাহের শুরুতে ডিএসই’র প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ছিল ৪৪৪৩ দশমিক ০৭ পয়েন্ট। সপ্তাহ শেষে তা নেমে গেছে ৪৪০৮ দশমিক ৬৪ পয়েন্টে। এ হিসাবে গত সপ্তাহে সূচক কমেছে ৩৪ দশমিক ৪২ পয়েন্ট। আগের সপ্তাহে সূচক বেড়েছিল ৮৫ দশমিক ৫৩ পয়েন্ট। এ ছাড়া গত সপ্তাহে ডিএস-৩০ সূচক ২ দশমিক ৮৮ পয়েন্ট ও ডিএসই শরিয়াহ সূচক ৯ দশমিক ৯১ পয়েন্ট কমেছে।
অপরদিকে আগের সপ্তাহের তুলনায় বাজার মূলধন কমেছে ০.২৭ শতাংশ। সপ্তাহের শুরুতে ডিএসিইর বাজার মূলধন ছিল ৩ লাখ ৯ হাজার ৩৪৬ কোটি টাকা। সপ্তাহের শেষে তা কমে দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৮ হাজার ৫১৭ কোটি টাকা। এ ছাড়া মূল্য-আয় (পিই) অনুপাত কমেছে ০ দশমিক ৩৪ শতাংশ। সপ্তাহের শুরুতে পিই ছিল ১৪ দশমিক ৫৬। সপ্তাহের শেষে তা দাঁড়িয়েছে ১৪ দশমিক ৫১-এ।
সপ্তাহজুড়ে লেনদেন হওয়া ইস্যুগুলোর মধ্যে লেনদেনের শীর্ষে রয়েছে ডরিন পাওয়ার। সপ্তাহ শেষে কোম্পানিটির ৭৮ কোটি ১৬ লাখ ২৬ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। সপ্তাহজুড়ে মোট লেনদেনের ৪ দশমিক ৪৭ শতাংশই হয়েছে এ কোম্পানির। দ্বিতীয় স্থানে থাকা আমান ফিডের লেনদেন হয়েছে ৬৩ কোটি ২২ লাখ ১৮ হাজার টাকা যা, সপ্তাহের মোট লেনদেনের ৩ দশমিক ৬২ শতাংশ। ৫৮ কোটি ৬৩ লাখ ৩৯ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেনে তৃতীয় স্থানে রয়েছে লংকাবাংলা ফাইন্যান্স। লেনদেনে এরপর রয়েছে যথাক্রমেÑ বিএসআরএম, কেয়া কসমেটিকস, পাওয়ার গ্রিড, ইবনে সিনা, যমুনা অয়েল, মেঘনা পেট্রোলিয়াম, তিতাস গ্যাস।