Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

দ্রুত সাফল্য আসায় হ্যাকারদের টার্গেটে বাংলাদেশ : জয়

প্রকাশের সময় : ১৬ এপ্রিল, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : দ্রুতগতির ডিজিটালাইজেশন ও এ ক্ষেত্রে ব্যাপক সাফল্যের কারণেই হ্যাকাররা বাংলাদেশকে টার্গেট করেছে বলে উল্লেখ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা ও তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়। যুক্তরাষ্ট্রের দ্য ওয়াশিংটন টাইমস পত্রিকায় প্রকাশিত একটি নিবন্ধে তিনি এই কথা লিখেছেন। গতকাল শুক্রবার জয় নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে এই লেখাটি শেয়ারও করেছেন।
জয় লিখেছেন, নিউ ইয়র্কের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকে বাংলাদেশের অ্যাকাউন্ট হ্যাক হওয়ার খবর পড়ে থাকলে ডিজিটালাইজেশনের দিক থেকে বাংলাদেশকে একটি আনাড়ি দেশ বলে মনে করা ভুল হতে পারে, কিন্তু এটা সত্যি নয়। হ্যাকিংয়ের এই ঘটনা খুবই দুঃখজনক এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় চুরি যাওয়া অর্থ ফেরত আনতে ও হ্যাকারদের গ্রেফতারের চেষ্টা চালাচ্ছে। বাংলাদেশে দ্রুত ও ব্যাপক মাত্রার ডিজিটালাইজেশনের সূত্র ধরে এর আগেও হ্যাকাররা আক্রমণের চেষ্টা করেছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে বলতে গেলে আলোর গতিতে ডিজিটালাইজেশন হচ্ছে। স্বাধীনতার পর মাত্র ৪৫ বছরের ইতিহাসের অন্যান্য ক্ষেত্রের উন্নয়নও প্রায় একই। বাংলাদেশ এরই মধ্যে দ্বিতীয় প্রজন্মের ডিজিটাল সিস্টেমে পৌঁছে গেছে, যা অনেক দ্রুতগতির, সহজে ব্যবহারযোগ্য ও তুলনামূলক বেশি সুরক্ষিত। তবে দুর্বল দিক হচ্ছে দেশের যেসব খাত এখনও প্রথম প্রজন্মের সিস্টেমে রয়ে গেছে, সেগুলোই হ্যাকারদের সহজ টার্গেটে পরিণত হচ্ছে। এসব খাতও দ্বিতীয় প্রজন্মের সিস্টেমে আপগ্রেড করা হচ্ছে।
জয় জানান, ২০০৮ সালে মাত্র ০.৩ শতাংশ মানুষ ডিজিটাল পদ্ধতিতে সরকারি সেবা নিচ্ছিল। সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচির কারণে এখন এর হার ৩৫ শতাংশ এবং দ্রুতই তা আরও বাড়ছে। আর্থ-সামাজিক কাঠামোর সব স্তরের মানুষকে সুযোগ দেয়ার লক্ষ্য থেকেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ডিজিটাল বাংলাদেশের কর্মসূচি শুরু করেন। বাংলাদেশে অনেকেরই ডেস্কটপ কম্পিউটার ব্যবহারের সুযোগ নেই, কিন্তু ৯৫ শতাংশ লোক মোবাইল ফোন ব্যবহার করেন। তাই সরকারের লক্ষ্য যেখানেই থাকুক না কেন নাগরিকদের কাছে সরকারি সেবা পৌঁছে দেয়া। এই প্রক্রিয়ায় গণতান্ত্রিক অংশগ্রহণ ও সরকারের স্বচ্ছতাও দ্রুতগতিতে বাড়ছে।
তিনি জানান, ২০০৯ সালে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি থেকে বাংলাদেশের রফতানি আয় ছিল মাত্র দুই কোটি ৬০ লাখ ডলার। এখন তা ৩০ কোটি ডলার ছাড়িয়ে গেছে। বাংলাদেশের অর্থনীতিতে এখনও গার্মেন্ট শিল্পের ভূমিকাই প্রধান। তবে কোনও একটি খাতের ওপর নির্ভর করে থাকাটা দুর্বলতা। তাই আগামী দুই বছরে বাংলাদেশ তথ্য প্রযুক্তি খাতে ৭৫ হাজার প্রশিক্ষিত কর্মী তৈরির পরিকল্পনা করছে, যাতে করে হাইটেক বিশ্বে বাংলাদেশ গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে যেতে পারে।
জয় লিখেছেন, সর্বত্রই ডিজিটালাইজেশনের ছোঁয়া। দেশজুড়ে সরকার সাড়ে পাঁচ হাজার ডিজিটাল সার্ভিস সেন্টার স্থাপন করেছে। ঢাকার বাইরে ২৩১ একর জায়গার ওপর একটি বিজনেস পার্ক স্থাপন করা হচ্ছে। গতবছর বাংলাদেশ ৬০ হাজার বর্গফুটের একটি টেকনোলজি পার্ক উন্মুক্ত করেছে। এরকম মোট সাতটি পার্ক স্থাপন করা হবে। সরকার দেশজুড়ে ডিজিটাল ডাটা সেন্টার এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির জন্য ইনকিউবেটর প্রোগ্রাম তৈরি করেছে। এক লাখ ৭০ হাজার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ডিজিটাল ক্লাসরুম ও কম্পিউটার ল্যাব স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে। বাংলাদেশের তথ্য প্রযুক্তি খাতের উন্নয়নের উদাহরণ দিতে গিয়ে জয় লিখেছেন, ঞৎরঢ়ড়ড়ষু বাংলাদেশে ভ্রমণরতদের জন্য ওয়ানস্টপ মল, খরমযঃপধংঃষব উধঃধ বিভিন্ন কোম্পানিকে গ্রাহক খুঁজতে সাহায্য করে, খবঃ’ং ঊধঃ! বিভিন্ন রেস্টুরেন্টের ঠিকানা দেয়, ইড়হমড়ইউ বাংলা সিনেমা ও ভিডিও’র স্ট্রিমিং সার্ভিস, ঈযধষড় কার সার্ভিসের মোবাইল অ্যাপ, ঈযধষফধষ নিত্যপণ্য সরবরাহের ওয়েবসাইট। মায়ের স্বাস্থ্য ও নারীদের স্বাস্থ্যসংক্রান্ত বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব নিয়ে ওয়েবসাইট গধুধ-এর মতো অনেক উদ্যোগের পেছনে নারীরা রয়েছেন বলেও জানান তিনি। বাংলাদেশের এই সাফল্যের কারণেই হ্যাকাররা দেশটিকে টার্গেট করেছে বলে উল্লেখ করেছেন জয়। তবে ডিজিটাল উন্নয়নের কারণে বিদেশি বিনিয়োগ বাড়ানো সম্ভব হয়েছে বলেও লিখেছেন তিনি। বাংলাদেশকে তিনি সেরা মেধার চৌম্বক ক্ষেত্র এবং একবিংশ শতাব্দির প্রযুক্তিগত উন্নয়নের না বলা অন্যতম গল্পের দেশ হিসেবে উল্লেখ করেছেন সজীব ওয়াজেদ জয়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: দ্রুত সাফল্য আসায় হ্যাকারদের টার্গেটে বাংলাদেশ : জয়
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ