পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
নূরুল ইসলাম : লাল সবুজ কোচে সাজছে সুবর্ণ এক্সপ্রেস। ইন্দোনেশিয়ায় তৈরী স্টেইনলেস স্টিলের বিলাসবহুল কোচ প্রথম যুক্ত হচ্ছে ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটের আন্তঃনগর এই ট্রেনে। যাত্রা শুরু হতে পারে এ মাসেই। ইন্দোনেশিয়ায় তৈরী ১৫০টি কোচের মধ্যে প্রথম দফায় আসা ১৫টি কোচ রাখা হয়েছে পাহাড়তলী ওয়ার্কশপে। সেখানে ডিপ্রসেসিং শেষে লোড টেস্ট করা হবে। এ মাসের মধ্যেই দ্বিতীয় দফায় আরও ১৫টি কোচ সমুদ্রপথে চট্টগ্রাম বন্দরে এসে পৌঁছাবে। রেল সূত্র জানায়, সুবর্ণ এক্সপ্রেস ট্রেনের লোড ১৮/৩৬। অর্থাৎ এতে মোট ১৮টি কোচ থাকে। লাল সবুজ কোচ দিয়ে পুরো ট্রেন সাজাতে গেলে দ্বিতীয় চালানের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। এরই মধ্যে প্রথমে আসা ১৫টি কোচের পরীক্ষা নিরীক্ষা, লোড টেস্ট সম্পন্ন হয়ে যাবে। নতুন কোচ যুক্ত হওয়ার পর সুবর্ণ এক্সপ্রেসের গন্তব্যে পৌঁছার সময়ও কমানোর চিন্তা-ভাবনা চলছে। এজন্য ট্রেনের গতিবেগ বাড়ানো হবে। বর্তমানে এই ট্রেনে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম যেতে সময় লাগে ৫ ঘন্টা ৪০ মিনিট। আর চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা আসতে লাগে সাড়ে ৫ ঘন্টা। এটাকে কমিয়ে প্রথমে ৫ ঘন্টা এবং পরবর্তীতে সাড়ে চার ঘন্টা করা হতে পারে বলে রেল সূত্র জানায়। আগে একই পথ পাড়ি দিতে লাগতো ৬ ঘন্টা ১০ মিনিট। বর্তমানে সুবর্ণ চলছে ২০০৭ সালে চীন থেকে আনা সাদা রঙের কোচ দিয়ে।
ইন্দোনেশিয়ার ইনকা কোম্পানীর ওয়েব সাইট থেকে জানা গেছে, মিটার গেজের জন্য মোট একশটি কোচের মধ্যে ১৩টি এসি সিøপার, ২৪টি এসি চেয়ার, ৩৬টি শোভন চেয়ার, ১৩টি ডাইনিং, গার্ডব্রেক ও প্রেয়ার স্পেস কার, ৮টি পাওয়ার কার এবং ৬টি প্রথম শ্রেণি ননএসি স্লিপার কোচ রয়েছে। কেমন হবে ইন্দোনেশিয়ার তৈরী লাল সবুজ কোচ? এ প্রশ্নের জবাবে যারা কোচগুলো দেখেছেন তারা সবাই বলেছেন, এই কোচগুলো যুক্ত হলে রেলওয়ের সেবার মান অনেকাংশে বাড়বে। অত্যন্ত বিলাসবহুল ও আরামদায়ক ইন্দোনেশিয়ায় তৈরী লাল সবুজ কোচগুলো ভারতের তৈরী এলএইচবি কোচগুলো থেকে উন্নত। রেলওয়ের একজন কর্মকর্তার মনে করেন, বর্তমানে প্রথম শ্রেণিতে একজন যাত্রী যে সেবা পান, লাল সবুজ কোচে শোভন শ্রেণির একজন যাত্রী তার চেয়ে উন্নত সেবা উপভোগ করবেন। শোভন শ্রেণির চেয়ারগুলো পেছনের দিকে বেশি হেলানো যায় বলে এতে আরাম করে ঘুমানো যাবে। সেক্ষেত্রে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বা প্রথম শ্রেণির যাত্রীরা আগের তুলনায় অনেক বেশি আরামদায়ক পরিবেশে ভ্রমণ করতে পারবেন। নতুন এই কোচগুলোতে সার্বক্ষণিক গরম ও ঠা-া পানি সরবরাহের পাশাপাশি খাবার গরম করার সুবিধাও আছে। থাকছে পৃথক নামাজের স্থান, ননএসি কোচে পর্যাপ্ত ফ্যান এবং মোবাইল চার্জ দেয়ার ব্যবস্থা। বাথরুমগুলো পুরোটাই স্টিলের মোড়কে (ভিতরে সাদা রঙ) অত্যাধুনিকভাবে তৈরী। বেসিনের সাথে আছে হ্যান্ডওয়াশের ব্যবস্থা। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বার্থে একটি কমন টেবিলের সাথে পায়ের দিকে আছে পৃথক আরও দুটি ছোট টেবিল। হাতের কাছে ব্যাগ বা প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র রাখার জন্য দুটো আলাদা নেটব্যাগ। আছে রাতে পড়ার জন্য আলাদা মুভিং লাইট এবং মোবাইল চার্জ দেয়ার পয়েন্ট। রেল সূত্র জানায়, কোচগুলোর ভেতরের সাজসজ্জা অত্যাধুনিক মানের। আগের তুলনায় বড় এবং দুই পার্টের জানালাগুলো এমনভাবে স্থাপন করা যাতে একজন যাত্রী তার আসনে বসেই বাইরের দৃশ্য অবলোকন করতে পারবেন। ট্রেনে বিদ্যুত সরবরাহ নির্বিঘœ করার জন্য লাল সবুজ কোচের সাথে থাকছে শক্তিশালী জেনারেটরের পাওয়ার কার। ট্রেনের পরিচালকের কক্ষটি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত। রেলওয়ের মেকানিক্যাল বিভাগের একজন কর্মকর্তা বলেন, কোচগুলো এমনভাবে তৈরী এগুলো চলার সময় খুব বেশি শব্দ করবে না। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষে শব্দের পরিমাণ হবে খুবই কম। চলার সময় এগুলো খুব বেশি দুলবে না। এতে করে যাত্রীরা বাইরে না তাকালে ট্রেনের গতিবেগ বুঝতে পারবে না।
রেল সূত্র জানায়, ২০০৭ সালে চীন থেকে আনা সাদা কোচগুলোর চেয়ে লাল সবুজ কোচগুলো অনেক বেশি বিলাসবহুল ও আধুনিক মানের। চীনের তৈরী সাদা কোচগুলো সুবিধা অসুবিধা বিবেচনা করেই লাল সবুজ কোচের গুণগত মান ও ডিজাইন নির্ধারণ করা হয়। রেল সূত্র জানায়, সূবর্ণর পর পর্যায়ক্রমে একই রুটের তূর্ণা নিশিথা, মহানগর প্রভাতী, ঢাকা-সিলেট রুটের উপবন এবং ঢাকা-রংপুর রুটের রংপুর এক্সপ্রেসে লাল-সবুজ কোচ যুক্ত হবে। সেই সাথে বর্তমানের সাদা কোচগুলো চলে যাবে অন্যান্য আন্ত:নগর ট্রেনে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।