পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
কূটনৈতিক সংবাদদাতা : তুরস্কের ইস্তাম্বুলে চলছে মুসলিম বিশ্বের সর্বোচ্চ ফোরাম অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশনের (ওআইসি) ১৩তম শীর্ষ সম্মেলন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওই সম্মেলনে যোগ দেয়ার কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত তা হয়ে ওঠেনি। তার পক্ষে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের প্রধান হিসেবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এই সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গতকাল শুক্রবার সম্মেলনে যোগ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে একটি বিবৃতি পাঠ করেন।
প্রধানমন্ত্রীর বিবৃতিতে মুসলিম উম্মাহর বৃহত্তর স্বার্থ ও মূল্যবোধ অক্ষুণœ রাখতে ঐক্য, ন্যায়বিচার ও সাম্যের পথে মুসলিম রাষ্ট্রগুলোকে একসাথে কাজ করার আহবান জানানো হয়।
বিবৃতিতে প্রধানমন্ত্রী ১৯৭৪ সালে অনুষ্ঠিত ওআইসি’র ২য় শীর্ষ সম্মেলনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের যোগদানের কথা স্মরণ করে বলেন, মুসলিম উম্মাহর ঐক্য ও সংহতির জন্য বঙ্গবন্ধু অনেক কাজ করেছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার সন্ত্রাস ও চরমপন্থীদের বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতির যেই ঘোষণা দিয়েছেন তার আলোকে কাজ করছে বর্তমান সরকার। তিনি ‘ইসলামোফোবিয়ার’ নামে ইসলামের বিরুদ্ধে চলমান ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় আন্তঃসংলাপেরও আহবান জানান।
শেখ হাসিনা ফিলিস্তিন সমস্যার সমাধানসহ বিভিন্ন দেশে সংখ্যালঘু মুসলমানদের ওপর যে নির্যাতন চলছে বিশেষ করে মিয়ানমারে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে মুসলিম নেতাদের ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করারও পরামর্শ দেন।
মুসলিম বিশ্বে বিদ্যমান আন্তঃকলহ মোকাবেলায় ওআইসিকে আরো জোরালো ও কার্যকর মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকায় আসীন হওয়ার দাবি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী ওআইসিভুক্ত দেশসমূহের মধ্যে মুক্ত বাণিজ্য চালুসহ স্বার্থসংশ্লিষ্ট সব ক্ষেত্রে সবাইকে আরও উদার হওয়ার আহ্বান জানান।
প্রসঙ্গত, মুসলিম বিশ্বের সর্বোচ্চ ফোরাম অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশন ওআইসি’র ১৩তম শীর্ষ সম্মেলন গত বৃহস্পতিবার অংশগ্রহণকারী দেশের সরকার প্রধানদের উপস্থিতিতে তুরস্কের ঐতিহ্যবাহী নগরী ইস্তাম্বুলে শুরু হয়। সম্মেলনে ৩০টি দেশের সরকার প্রধান ও ২০টির অধিক দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা অংশগ্রহণ করেছেন। এর আগে গত ১২-১৩ এপ্রিল পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের উপস্থিতিতে সম্মেলনের প্রস্তুতি বিষয়ক দুই দিনের সভায় অংশ নেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। ওআইসি’র পর্যবেক্ষক দেশের প্রতিনিধি, ওআইসিভূক্ত বিভিন্ন ইনস্টিটিউটের বিপুল সংখ্যক সদস্য ও সহায়ক সংগঠনের প্রতিনিধিরাও এই সম্মেলনে যোগদান করেছেন। মুসলিম বিশ্বে চলমান সংকট এবং ভয়াবহ চ্যালেঞ্জের পটভূমিতে এবারের সম্মেলনের মূল প্রতিপাদ্য করা হয়েছে ‘ন্যায়বিচার ও শান্তির জন্য ঐক্য ও সংহতি’। মুসলমানদের মধ্য বিদ্যমান আন্তঃকলহ ও ভ্রাতৃঘাতী গৃহযুদ্ধ, সাম্প্রদায়িকতা, সন্ত্রাসবাদ, সহিংস চরমপন্থা ও ইসলামোফোবিয়া এবং বিশ্বব্যাপী সৃষ্ট মানবিক ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ, মুসলিম সমাজে নৈতিক অবক্ষয়, ফিলিস্তিনে ইসরাইলি আগ্রাসন, দারিদ্র, উন্নয়ন এবং ওআইসি’র ১০ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে গৃহীত কর্ম পরিকল্পনাসহ গুরুত্বপূর্ণ নানা চলমান ইস্যু নিয়ে এবারের সম্মেলনে আলোচনা হয়েছে।
সম্মেলনে অংশ নেয়া মুসলিম নেতারা উম্মাহর সামনে বিদ্যমান সমস্যা মোকাবেলায় ঐক্য ও সংহতির ওপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করেছেন। মুসলিম বিশ্বের জন্য ওআইসি’র আওতায় আগামী ৩ বছরের যৌথ কর্মপরিকল্পনায়ও সম্মত হয়েছেন শীর্ষ নেতারা। ওআইসি’র নতুন চেয়ারম্যান তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগানের নেতৃত্বে সম্মেলনে কয়েকটি ভবিষ্যত কর্মপরিকল্পনা বিষয়ক ডকুমেন্টও গৃহীত হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ফিলিস্তিন সংকট মোকাবেলায় করণীয় নির্ধারণ ও ইস্তাম্বুল ঘোষণা বিষয়ক ‘রেজুলেশন অন প্যালেস্টাইন, ওআইসি ২০১৫ : প্রোগ্রাম অব অ্যাকশন, ফাইনাল কমিউনিক অ্যান্ড দ্য ইস্তাম্বুল ডিক্লারেশন’ শীর্ষক ডকুমেন্ট।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।