Inqilab Logo

শনিবার, ০৮ জুন ২০২৪, ২৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০১ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

পরিবেশের প্রতিকূলতা হুমকির মুখে পরাগায়ন ঝুঁকিতে জীবন-জীবিকা

প্রকাশের সময় : ১৬ এপ্রিল, ২০১৬, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১২:০৭ এএম, ১৬ এপ্রিল, ২০১৬

ইনকিলাব ডেস্ক : খাদ্যশস্য উৎপাদনে কীট-পতঙ্গের পরাগায়নের ভূমিকার কথা আমরা জানি। মৌমাছিসহ পরাগায়নে সক্ষম অন্যান্য কীট-পতঙ্গ অনাদিকাল থেকে খাদ্যশস্য উৎপাদনে সাহায্য করে আসছে। আজ পরিবেশের প্রতিকূলতায় কীট-পতঙ্গের অস্তিত্ব হুমকির মুখে, যার ফলে বিশ্বজুড়ে খাদ্যশস্য উৎপাদন নিরবচ্ছিন্ন রাখা কঠিন হয়ে পড়ছে আর একে কেন্দ্র করে নির্ভরশীল মানুষের জীবনযাত্রা ও জীবিকা ঝুঁকির মুখে পড়েছে। জাতিসংঘের এক সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে এই হুঁশিয়ারি দেয়া হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিভিন্ন প্রজাতির মৌমাছি এবং প্রজাপতি এখন প্রায় বিপন্ন হওয়ার পথে, বিশেষ করে ইউরোপ এবং উত্তর আমেরিকায় পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। গবেষকরা এর কারণ হিসেবে উল্লেখ করছেন এসব পাখি ও কীট-পতঙ্গের বসতি ধ্বংস করে ফেলা, কীটনাশকের মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার এবং বায়ুম-লের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাওয়া। দু’বছর ধরে গবেষণার পর বিজ্ঞানীরা এই মন্তব্য করেছেন। তারা কাজ করছিলেন জীব-বৈচিত্র্য নিয়ে।
এই গবেষণার সাথে জড়িত ছিলেন ব্রিটিশ পরিবেশ বিজ্ঞানী রবার্ট ওয়াটসন। তিনি বলছেন, যেসব কীট-পতঙ্গ পরাগায়ন ঘটায় সেগুলোকে বিলুপ্তির হাত থেকে রক্ষা করতে বিশ্বজুড়েই দাবি জোরালো হচ্ছে। তিনি বলেন, এই গবেষণা প্রতিবেদনে যা বলা হয়েছে সেটা অত্যন্ত পরিষ্কার। একটা দিক হচ্ছে- যেসব কীট-পতঙ্গ পরাগায়ন ঘটায় সেগুলোর গুরুত্ব তুলে ধরা। কি কারণে এসব কীট-পতঙ্গ হুমকির মুখে পড়েছে সেগুলোকে চিহ্নিত করা। এখানে বলার চেষ্টা করা হয়েছে, শস্যের উৎপাদন ধরে রাখতে, পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কৃষকরা কি করতে পারেন সে বিষয়ে। যেসব কীট-পতঙ্গের মাধ্যমে পরাগায়ন ঘটে সেগুলোকে কিভাবে রক্ষা করা যায় সে বিষয়েও কিছু পরামর্শ তুলে ধরা হয়েছে। মনে রাখতে হবে, জীববৈচিত্র্য আর খাদ্যশস্যের ফলন ধরে রাখতে হলে পরাগায়ন যাতে বাধাগ্রস্ত না হয় সেটা নিশ্চিত করা খুবই জরুরি।
এই গবেষণার সাথে যুক্ত ছিলেন ইংল্যান্ডের আরো একজন বিজ্ঞানী প্রফেসর সাইমন পটস। রেডিং বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক তিনি। মি. পটস বলেছেন, বিচিত্র সব কীট-পতঙ্গের মাধ্যমে পরাগায়ন ঘটে থাকে পৃথিবীতে এদের সংখ্যা হাজার হাজার। এদের মধ্যে রয়েছে নানা প্রজাতির মৌমাছি। সবচেয়ে পরিচিত মৌমাছিটি হচ্ছে- হানি বি। শস্য চাষাবাদ ও মধু উৎপাদনের জন্যে লোকজন এই মৌমাছির চাষ করে। এদের ওপর নানা দিক থেকে হুমকি তৈরি হয়েছে। যেমন এদের বসতি ধ্বংস করে ফেলা হচ্ছে, মৌমাছির থাকার জন্যে যে ধরনের পরিবেশ ও খাবার দরকার সেগুলো নষ্ট করে ফেলা হচ্ছে। পাশাপাশি জলবায়ুর পরিবর্তন ঘটছে, বায়ুম-লের তাপমাত্রা বাড়ছে, বাড়ছে কীটনাশকের ব্যবহার। এছাড়াও নানা ধরনের রোগ-বালাই আর রাসায়নিক পদার্থতো আছেই।
সাইমন পটস বলেছেন, এসব কীট-পতঙ্গের সংখ্যা কমে যাওয়ার কারণে অর্থনীতি ও জনস্বাস্থ্যের ওপরেও এর একটা বড়ো রকমের প্রভাব পড়তে পারে। এদের সংখ্যা কমে গেলে আমরা অনেক শস্য হারিয়ে ফেলতে পারি, অনেক ফসলের উৎপাদন কমে যেতে পারে। এসবের মধ্যে রয়েছে কোকোয়া, আপেল, আম ও নানা ধরনের বাদাম। সত্যি বলতে কি সব ধরনের ফলমূল আর সব্জির বীজের কথাই বলা যেতে পারে। তার মতে, এই প্রতিকূল পরিস্থিতির প্রতিকার করা সম্ভব না হলে আগামীদিনে জীববৈচিত্র্যের সঙ্গে মানুষের জীবন ও জীবিকাও চরম হুমকির মুখে পড়বে। সূত্র : বিবিসি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পরিবেশের প্রতিকূলতা হুমকির মুখে পরাগায়ন ঝুঁকিতে জীবন-জীবিকা
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ