পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বাংলাদেশে কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে আন্দোলনকারীদের মতপ্রকাশের অধিকার নিশ্চিত করতে বিভিন্ন দূতাবাস যে বিবৃতি দিয়েছে সেটি নিয়ে নানা আলোচনা ও বিতর্ক তৈরি হয়েছে। কোটা-বিরোধী ছাত্রদের ওপর হামলার নিন্দা জানিয়ে ঢাকায় মার্কিন দূতাবাস বিবৃতি দেবার একদিন পরেই সুইজারল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস এবং নরওয়ে দূতাবাসও বিবৃতি দিয়েছে। এসব বিবৃতি তাদের ফেসবুক পেজে প্রকাশিত হয়েছে। বিবিসি’র খবরে এ নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে। ইনকিলাবের পাঠকদের জন্য তা হুবহু তুলে ধরা হলো।
নরওয়ে দূতাবাসের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মতপ্রকাশের অধিকারের উপর ধারাবাহিক হামলার বিষয়টি নিয়ে তারা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। ‘সকল বাংলাদেশীর মতো বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের প্রতিবাদ করার এবং গণতান্ত্রিক অধিকার চর্চা করার অধিকার রয়েছে,’ এমন কথা উল্লেখ করেছে নরওয়ের দূতাবাস।
অন্যদিকে সুইজারল্যান্ড দূতাবাস তাদের তাদের বিবৃতিতে ঢাকা এবং অন্য শহরে শান্তিপূর্ণ সমাবেশের উপর সা¤প্রতিক হামলার নিন্দা জানিয়েছে। তারা বলেছে, যেসব নীতির উপর ভিত্তি করে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, সমাবেশের উপর এ ধরনের হামলা সেসব নীতির পরিপন্থী। নেদারল্যান্ডস দূতাবাস উল্লেখ করেছে মত প্রকাশ এবং সমাবেশ করার অধিকার সার্বজনীন মানবাধিকার।
এর আগে গত ৯ জুলাই ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাস তাদের ফেসবুক পাতায় প্রকাশ করা এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা - যারা বাংলাদেশের গর্বিত গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ নেতা - তাদের শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভের ওপর আক্রমণ সেই সব মূলনীতির বিরোধী, যার ওপর আমাদের মতো দেশগুলো প্রতিষ্ঠিত।’ এতে আরো বলা হয়, ‘বাক স্বাধীনতা, জমায়েতের স্বাধীনতা এবং শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের অধিকারের মতো যে মৌলিক গণতান্ত্রিক অধিকারগুলো যারা পয়োগ করছে - মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সরকার তাদের সাথে সংহতি প্রকাশ করছে।’
দূতাবাসগুলোর বিবৃতি ব্যাখ্যা ঃ বাংলাদেশের বিভিন্ন বিষয়ে বিদেশী দূতাবাসগুলোর নানা মন্তব্য নতুন কোন বিষয় নয়। বিভিন্ন সময় নানা রাজনৈতিক ইস্যুতে তাদের বক্তব্য এবং বিবৃতি নিয়ে ক্ষমতাসীন দল নাখোশ হয়েছে। কোটা সংস্কার আন্দোলন নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে নানা ব্যাখ্যা রয়েছে।
ক্ষমতাসীনদের অনেকেই মনে করছে এ আন্দোলনে সরকার বিরোধীদের মদদ রয়েছে এবং কোটা সংস্কারের ইস্যুটিকে কাজে লাগিয়ে সরকার বিরোধীরা রাস্তায় সক্রিয় হয়ে উঠতে চায়। এমন প্রেক্ষাপটে বিভিন্ন দূতাবাসের পক্ষ থেকে যে বিবৃতি দেয়া হয়েছে সেটি নিয়ে বিশ্লেষকদের মাঝেও নানা মতপার্থক্য রয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্কের অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন মনে করেন কোটা সংস্কার আন্দোলন নিয়ে বক্তব্য দেবার বিষয়টি কূটনীতিকদের রেওয়াজের মধ্যে পড়ে না। তিনি বলেন, একটা দেশের ভেতরে বিভিন্ন ধরনের সামাজিক আন্দোলন বা বিভিন্ন ধরনের রাজনৈতিক পরিস্থিতির তৈরি হয়। যারা ক্ষমতায় থাকে তারা এবং আন্দোলনকারীদের মধ্যে নানা রকমের ডাইনামিকস কাজ করে। সেখানে অন্য একটা পক্ষ, যাদের কাজ এটা না, ... ফলে এটি কূটনীতিক মহল থেকে বলার মানে হচ্ছে যে তাদের নাক গলানোর চেষ্টা করা। দূতাবাসগুলোর বিবৃতি পরিস্থিতি আরো ঘোলাটে করতে পারে বলে অনেকে আশংকা করেন। কারণ তাদের ধারণা আন্দোলনকারীরা এতে ‘অনুপ্রাণিত’ হতে পারে। অধ্যাপক হোসেন বলেন, দূতাবাসসমূহ যারা এ ধরনের বক্তব্য দিচ্ছে, তাদের উদ্দেশ্য তো সেটাই। ... কোন একটা ঘটনার প্রেক্ষিতে যাদের বক্তব্য রাখার কথা না, যাদের যুক্ত হবার কথা না, তাদের যুক্ত হওয়াটাই এখানে সমস্যা তৈরি করে।
তবে সাবেক রাষ্ট্রদূত হুমায়ুন কবির মনে করেন ভিন্ন কথা। তিনি বলছেন, মানবাধিকার রক্ষার দৃষ্টিভঙ্গি থেকে এসব বিবৃতিকে মূল্যায়ন করা যেতে পারে। কবির দূতাবাসগুলোর বিবৃতিকে কোটা সংস্কার দাবির সাথে যুক্ত করতে চাইছেন না। তার ধারণা মত প্রকাশের সীমাবদ্ধতা এবং ছাত্রদের উপর সহিংসতার বিষয়টিকে দূতাবাসগুলো বড় করে দেখেছে। ‘তাদের বক্তব্যটা ঠিক কোটাকে কেন্দ্র করে নয়। ছাত্ররা যারা মতামত প্রকাশ করতে চেয়েছে তাদের উপর বেশ কয়েকবার হামলা হয়েছে। তাদের উপর হামলা করাটা আমরা ধারণা দূতাবাসগুলোর নজরে লেগেছে। হয়তো সেজন্যই তারা উদ্বেগটা প্রকাশ করেছে,’ বলেছেন কবির।
বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিভিন্ন সময় বিদেশী দূতাবাসগুলোর ভূমিকা পর্যালোচনা করে অধ্যাপক দেলোয়ার হেসেন মনে করেন কোটা বিরোধী আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে তারা যে বিবৃতি দিয়েছে সেটিকে রাজনৈতিকভাবে ব্যাখ্যা করার যথেষ্ট সুযোগ আছে। ##
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।