এমপিওভুক্তির দাবিতে ১৬ দিন অনশনসহ টানা এক মাস ধরে খোলা আকাশের নিচে অবস্থান করছেন ননএমপিও শিক্ষক-কর্মচারীরা। গত ১০ জুন থেকে শিক্ষকরা জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন। এরপর একদিন প্রতীকি অনশনের পর ২৫ জুন থেকে আমরণ অনশনের কর্মসূচি শুরু করেন। পবিত্র ঈদুল ফিতরের দিন পরিবার-পরিজন ছেড়ে প্রেসক্লাবের সামনেই ঈদের নামাজ আদায় করেন শিক্ষকরা।
তবে গত সপ্তাহে বুধবার জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, নীতিমালার ভিত্তিতে ননএমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির বিষয়ে দ্রুত কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে। কিন্তু সে নীতিমালা মানতে নারাজ শিক্ষকরা।
আন্দোলনকারী শিক্ষকরা বলেন, দীর্ঘ এক মাস ধরে আমরা খোলা আকাশের নিচে অবস্থান করছি। দীর্ঘদিন শিক্ষাকতা করে বেতন-ভাতা না পেয়ে আমরা বার বার রাজপথে নেমে আন্দোলন করে যাচ্ছি। আমাদের শুধু আশ্বাস দিয়ে বাড়ি ফেরানো হয়েছে। নিজের ন্যায্য পাওনা আজও পাইনি। বেতন-ভাতা না পেয়ে আমরা মানবেতন জীবন যপান করছি। এমন জীবন আমরা চাই না। আর কতদিন এভাবে আন্দোলন করতে হবে?
নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষক-কর্মচারী ফেডারেশনের যুগ্ম
সাধারণ সম্পাদক মোকারম হোসেন ইনকিলাবকে বলেন, আজ এক মাসের বেশি সময় ধরে শিক্ষকরা খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবন যাপন করছে। এর মধ্যে দুই শতাধিক শিক্ষক কর্মচারী অসুস্থ হয়ে পরেছেন। তিনি আরও বলেন, এমপিওভুক্তির দাবিতে শিক্ষকরা ঢাকার রাজপথে ২৭বার বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছেন এবং প্রতিবার শিক্ষামন্ত্রীর আশ্বাসে বার বার প্রতিষ্ঠানে ফিরে গেছেন, কিন্তু দাবি আদায় হয় নাই। আমরা ক্ষুধার জ্বালায় রাজপথে নেমেছি। দাবি আদায় ছাড়া আমরা ক্লাসে ফিরে যাব না।
মঙ্গলবার সকালে সংগঠনের
সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ ড. বিনয় ভূষণের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ চেয়ে তাঁর কার্যালয়ে পুনরায় আবেদন করেন। আবেদন পত্র গ্রহণ করেন প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব ওয়াহিদা আক্তার। তিনি প্রধানমন্ত্রীর প্রতি শিক্ষকদের আস্থা রাখতে বলেন।
এমপিওভুক্তির দাবিতে নন-এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরা গত বছরের ২৬ ডিসেম্বর থেকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে লাগাতার কর্মসূচি শুরু করেন। টানা ওই অবস্থান ও অনশনের একপর্যায়ে ৫ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে তার তৎকালীন একান্ত সচিব সাজ্জাদুল হাসান সেখানে গিয়ে আশ্বাস দেন। এরপর শিক্ষক-কর্মচারীরা আন্দোলন কর্মসূচি স্থগিতের ঘোষণা দেন। কিন্তু অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাবে নতুন এমপিওভুক্তির বিষয়ে সুস্পষ্ট কিছু বলেননি। তারপর থেকেই এমপিওভুক্তির দাবিতে আন্দোলন করে যাচ্ছেন নন এমপিও শিক্ষক-কর্মচারীরা।