পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
১৭৫৭ কোটি টাকার নতুন প্রকল্প : মহাসড়কের আয়ুস্কাল বাড়বে, কমবে মেরামত খরচ ও ভোগান্তি
ওভারলোডেড ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান চলাচলের কারনে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কসহ দেশের গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়কগুলোর আয়ুস্কাল দ্রæত শেষ হয়ে যাচ্ছে। এক বছর যেতে না যেতে সেগুলো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এতে করে সড়ক-মহাসড়ক মেরামত খরচ বাড়ছে। বাড়ছে ভোগান্তি। এই ক্ষতি ও ভোগান্তি কমাতে দেশের গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়কগুলোতে ওভারলোডেড ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান প্রবেশ বন্ধে ২০টি স্থানে ২৮টি এক্সেল লোড নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র নির্মাণের একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হচ্ছে। সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে বাস্তবায়নের জন্য প্রস্তাবিত এ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে এক হাজার ৭৫৭ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। চলতি জুলাই মাস থেকে শুরু করে ২০২১ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পটি শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এদিকে, গত বছরের ১ ডিসেম্বর কার্যকর করা হয় এক্সেল লোড নীতিমালা। এর আওতায় নির্ধারিত সীমার বেশি পণ্য পরিবহনে শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে। তবে এ নীতিমালা বাতিল করার জন্য সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে জোর তদবির করছেন ব্যবসায়ী ও পরিবহন মালিকরা। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, পণ্য পরিবহনে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের চেয়ে অনেক বেশি ছাড় দিচ্ছে বাংলাদেশ। ৬ চাকার দুই এক্সেলের ট্রাকে বাংলাদেশে পণ্য পরিবহনের সুযোগ দেওয়া হয়েছে ২২ টন। একই ধরনের ট্রাকে ভারতে পণ্য পরিবহন করা যায় ১৬ দশমিক ২০ টন, নেদারল্যান্ডসে সাড়ে ২১ টন, হাঙ্গেরীতে ২০ টন আর ইতালি, জার্মানি, স্পেন, গ্রীস, যুক্তরাজ্য ও অস্ট্রেলিয়াতে ১৮ টন। এর পরও এক্সেল লোডের নির্ধারিত সীমা মানতে চায় না ট্রাক-কাভার্ডভ্যান মালিকরা। তবে বাংলাদেশ ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক রুস্তম আলী খান এ প্রসঙ্গে গতকাল ইনকিলাবকে বলেন, মহাসড়কে এক্সেল লোড মেশিন বসিয়ে চাঁদাবাজি করা হচ্ছে। আমাদের পরিবহন শ্রমিকদের হয়রানি করা হচ্ছে। আমরা এজন্যই এটার বিরোধীতা করেছি। তিনি বলেন, সঠিকভাবে এক্সেল লোড মেশিন বসানো হলে আমাদের কোনো আপত্তি থাকবে না। ইতোমধ্যে আমরা এ নিয়ম মেনে নিয়েছি। এখন ৯০ শতাংশ ট্রাক-কাভার্ডভ্যান চলছে এক্সেল লোড নীতিমালা মেনেই।
সূত্র সূত্রে জানা গেছে, ৬ চাকাবিশিষ্ট বেশিরভাগ ট্রাক ও কাভার্ডভ্যানে ২০-৩০ টন পণ্য পরিবহন করা হয়। যা মহাসড়কের আয়ুস্কার দ্রæত শেষ করে দিচ্ছে। অতিরিক্ত ওজন বহনকারী এসব যানবাহন সড়ক দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ। সওজ সূত্রে জানা গেছে, অর্থনীতির লাইফলাইন ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সীতাকুন্ডের এক্সেল লোড নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রে গত বছর অক্টোবরে এক লাখ ৬৩ হাজার ৭৯৫টি পণ্যবাহী ট্রাক ওজন করা হয়। এর মধ্যে ৫৭ হাজার ৬৬টি বা ৪০ শতাংশ ট্রাক ছিল ওভারলোডেড।
এসব ট্রাকের কারনে এক বছর যেতে না যেতেই নষ্ট হয়ে গেছে চার লেনের এই মহাসড়ক। দেশের অন্যান্য মহাসড়কের অবস্থাও একই। ওভারলোডেড যান চলাচলের কারনে নষ্ট হয়ে যাওয়া সড়ক রক্ষণাবেক্ষণে প্রচুর অর্থ ব্যয় করতে হচ্ছে। ওভারলোডেড ট্রাক- কাভার্ডভ্যান যাতে মহাসড়কে প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য সওজ দেশের গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়কগুলোর ২০টি স্থানে ২৮টি এক্সেল লোড নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র নির্মাণ করবে। চট্টগ্রাম, সিলেট, হবিগঞ্জ, কুমিল্লা, ফেনী, ময়মনসিংহ, বাগেরহাট, নবাবগঞ্জ, কুড়িগ্রাম, পঞ্চগড়, নীলফামারী, দিনাজপুর, শেরপুর, গাজীপুর, সাতক্ষীরা, চুয়াডাঙ্গা ও মাদারীপুর নির্মাণ করা হবে এসব কেন্দ্র। এজন্য ৯০ সেট ওয়ে মেশিন দরকার হবে। এ প্রকল্পের আওতায় ২২ হাজার মিটার মিডিয়ান, দুই তলাবিশিষ্ট কন্ট্রোল স্টেশন, ৩৭২ বর্গমিটার ওয়ে হাউজ, গণশৌচাগার, ক্যাফেটরিয়া, ওয়্যার হাউজ, ওয়ে ব্রিজ, সেপটিক ট্যাংক, সোক পিট, বাউন্ডারি ওয়াল ও সাবমারসিবল পাম্প নির্মাণ করা হবে। এছাড়া প্রকল্প এলাকায় পরিষেবা সংযোগ লাইন স্থানান্তর, কন্ট্রোল স্টেশন এলাকায় রোড মার্কিং, ট্রাফিক সাইনসহ বেশকিছু কাজ করা হবে।
এদিকে, সরকার এক্সেল লোড নীতিমালা কার্যকর করার পর থেকে এ নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। ব্যবসায়ী ও পরিবহন মালিকরা তাদের পক্ষে নানা যুক্তি উপস্থাপন করে এক্সেল লোড নীতিমালা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে আসছেন। অনেকের মতে, শুধুমাত্র এক্সেল লোড নীতিমালা কার্যকর করার কারনে পণ্য পরিবহনের ব্যয় বেড়ে গেছে। তাতে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা নিত্যপণ্যের দামও বাড়াতে বাধ্য হচ্ছেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, সড়ক অবকাঠামো রক্ষার্থে এক্সেল লোড নীতিমালা প্রয়োগের কোনো বিকল্প নেই। বাংলাদেশের বিদ্যমান সড়ক কাঠামোতে নির্ধারিত লোড সীমাকে অনুপযুক্ত উল্লেখ করে বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, পণ্য পরিবহনের ক্ষেত্রে বিদেশের তুলনায় বাংলাদেশে অনেক ছাড় দেয়া হয়েছে। সুতরাং দেশের লোডের সীমা আরও কমানো উচিত। এতে করে সড়ক-মহাসড়কের আয়ুস্কাল বেড়ে খরচ ও ভোগান্তি দুটোই কমবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।