বাড়িতেই ফাইনাল দেখবেন আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট কাতারে
বিশ্বকাপ ফুটবলের ফাইনাল ম্যাচ দেখতে কাতারে যাচ্ছেন না আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট আলবার্তো ফার্নান্দেজ। তিনি জানান, আজ
সোচির ফিশৎ স্টেডিয়ামে সেমি-ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে মুখোমুখি রাশিয়া ও ক্রোয়েশিয়া। ম্যাচের ৩১তম মিনিটে ডেনিশ চেরিশেভের গোলে এগিয়ে যায় স্বাগতিকরা। তবে এই এগিয়ে যাবার স্বস্তি স্থায়ী হয়েছে মাত্র ১০ মিনিট। ৩৯তম মিনিটে হেডে দারুণ এক গোল করে ক্রোয়েশিয়াকে সমতায় ফেরান আন্দ্রে ক্রামারিচ। অতিরিক্ত সময়ের ১০ মিনিটের মাথায় গোল করে ক্রোয়েশিয়াকে প্রথমবারের মত এগিয়ে দেন ডোমাগো ভিদা। ১১৬তম মিনিটে মারিও ফার্নান্দেসের গোলে ব্যবধান ঘুঁচায় রাশিয়া।
নির্ধারিত সময়ে আর কোন গোল না হলে গড়ায় টাইব্রেকার নামক ভাগ্য পরীক্ষায়। সেই ভাগ্য জিতেই দু’দলই পা রেখেছিলো কোয়ার্টার ফাইনালের মঞ্চে। এবার আর পারলো না রাশিয়া, শুট আউটে ৪-৩ ব্যবধানে হেরে এখানেই থামতে হলো স্বাগতিদের।
প্রথম শট নিতে আসা ফেদর স্মলভের শট ঠেকিয়ে দেন সুবাসিচ। ব্রজোভিচ ফাঁকি দেন আকিনফিভকে। রাশিয়ার দ্বিতীয় শট নিতে এসে ভুল করেননি আলান দ্রাগোয়েভ। এবার আকিনফিভ ফিরিয়ে দেন কোভাসিচের শট। মারিও ফের্নান্দেস বল মারেন পোস্টের বাইরে। লুকা মদ্রিচ ক্রোয়েশিয়াকে এগিয়ে দেন। সের্গেই ইগনাশেভিচ রাশিয়ার চতুর্থ শটে গোল করেন। ভিদাও ভুল করেনি। দালের কুজিয়ায়েভ টিকিয়ে রাখেন স্বাগতিকদের আশা। রাকিটিচ বল জালে পাঠিয়ে ভাঙেন স্বাগতিকদের স্বপ্ন।
এর আগে সোচি পরিণত হয় যুদ্ধক্ষেত্রে। অপরিরোধ্য ক্রোয়েশিয়ার সামনে আয়োজক দেশ রাশিয়া। চলে আক্রমন-পাল্টা আক্রমন। সহসাই স্টেডিয়াম গর্জে ওঠে সমর্থকদের উন্মাদনায়। সেমিতে উঠলেই ফাইনালে পা রাখার লড়াইয়ে মিলবে ইংল্যান্ডের সাক্ষাৎ।
বল পজিশনে এগিয়ে থাকা ক্রোয়েশিয়াকে চমকে দিয়ে আয়োজক সমর্থকদের উল্লাসের মুহূর্ত উপহার দিয়েছেন ডেনিশ চেরিশেভ। ৩১ মিনিটে আটেম ডিজুবার কাছ থেকে বল পেয়ে ক্রোয়েশিয়ার ডিফেন্ডারকে ভরকে দিয়ে বাঁ পায়ে দুর্দান্ত গোল করেছেন এই ভিয়ারিয়াল তারকা। গোলবারের বাঁ প্রান্তের উপরে কোণা বরাবর একেবারে নিখুতভাবে বল জালে জড়িয়েছেন এই রাশিয়ান। এর মাধ্যমে বিশ্বকাপে চার গোলের অধিকারী হয়ে গেলেন তিনি।
গোলের রেশ কাটতে না কাটতেই সমতায় ফিরেছে ক্রোয়েশিয়া। ডি বক্সের ভেতরে গোলবারের বাঁ প্রান্ত থেকে আলতো করে মানজুকিচের পাস থেকে দুর্দান্ত হেডে বল জালে জড়িয়েছেন ক্রামারিচ (১-১)। রাশিয়ার সমর্থক শিবিরে নিরবতার উপলক্ষ্য নিয়ে আসে ক্রোয়েশিয়া।
বিরতির পর ক্রোয়েশিয়ার একের পর একে আক্রমণ রুখে যায় রাশিয়া। পক্ষে আসে ভাগ্যও। ৫৯তম মিনিটে ডি-বক্সের জটলায় বল পেয়ে ইভান পেরিসিচের নেওয়া নিচু শট গোলরক্ষক ইগর আকিনফিভকে ফাঁকি দিলেও পোস্টের ভেতরের অংশে লেগে ফিরে আসে।
এর মধ্যে ৬৭ মিনিটে গোলদাতা চেরিশেভকে তুলে ফেদর মলোভকে নামিয়ে দেন রাশিয়ার কোচ স্টেনিসলাভ চেরচেশভ। তার কিছু পর ভালো সুযোগও পায় স্বাগতিকরা। ৭২তম মিনিটে বদলি হিসেবে নামা ফেদর স্মোলভের হেড ক্রসবারের উপর দিয়ে যায়।
বাকি সময় আর গোলের দেখা না পেলে খেলা গড়ায় অতিরিক্ত ৩০ মিনিটে। তবে এর মাঝে ক্রোয়েশিয়ার কপালে কিছুটা চিন্তার ভাঁজ পড়েছিলো গোলরক্ষক সুবাসিচের চোটে। তবে মাঠেই খানিক শুশ্রুষায় সেরে উঠে সামলান দায়িত্ব।
অতিরিক্ত সময়ের দশম মিনিটে কর্নারে দোমাগোই ভিদার লাফিয়ে ওঠা হেডে বল কয়েকজন ডিফেন্ডার আর আকিনফিভকে এড়িয়ে জড়ায় জালে। ১১৬ তম মিনিটে কর্নার থেকে উড়ে আসা বলে লাফিয়ে মাথায় ছোঁয়ন মারিও ফার্নান্দেস। চমৎকার এই হেড বৃথা য়ায়নি স্বগিতদের। উত্তেজনার ম্যাচে ২-২ গোলের সমতা সোচিতে।
গ্রুপ পর্বে তিন ম্যাচের দুটিতে জিতে 'এ' গ্রুপের রানার্সআপ হয়ে নকআউট পর্বে ওঠে রাশিয়া। আর শেষ ষোলোয় সাবেক বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন স্পেনকে টাইব্রেকারে হারায় স্বাগতিকরা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।