Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ব্রহ্মপুত্র-যমুনা পাড় প্লাবিত

শফিউল আলম : | প্রকাশের সময় : ৮ জুলাই, ২০১৮, ১২:০১ এএম

উজান থেকে নেমে আসা অব্যাহত ঢলের পানিতে প্রধান অববাহিকা ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদের পাড় প্লাবিত হয়েছে। বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে উত্তরাঞ্চলের কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, বগুড়া, জামালপুর, সিরাজগঞ্জসহ আশপাশের জেলা-উপজেলার বিস্তীর্ণ শহর-গঞ্জ, গ্রাম-জনপদ। বানের তোড়ে ডুবে যাচ্ছে একের পর এক গ্রাম-পাড়া, সড়ক রাস্তাঘাট, হাট-বাজার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং ফল-ফসলি জমি। উত্তর জনপদের লাখো মানুষ পড়েছেন চরম দুর্ভোগে। এখানে-সেখানে নড়বড়ে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে পড়ছে উত্তাল নদীগর্ভে।
গতকাল (শনিবার) বিকেলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে পাওয়া সর্বশেষ তথ্য-উপাত্তে জানা যায়, যমুনা নদ দু’টি পয়েন্টে বিপদসীমা অতিক্রম করে প্রবাহিত হচ্ছে। এরমধ্যে সিরাজগঞ্জের কাজীপুরে বিপদসীমার ২১ সেন্টিমিটার উপরে এবং জামালপুর জেলার বাহাদুরাবাদে বিপদসীমা বরাবর বয়ে যাচ্ছে। তাছাড়া বগুড়া জেলার সারিয়াকান্দিতে বিপদসীমার মাত্র ৮ সেমি নিচে এবং সিরাজগঞ্জে ১১ সেমি নিচে পৌঁছে গেছে।
অন্যদিকে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি উজানের ঢলের সাথে সাথে আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। কুড়িগ্রাম জেলার চিলমারী পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্র বিপদসীমার মাত্র ২৮ সেমি নিচে দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। বিশাল বিস্তীর্ণ ব্রহ্মপুত্র অববাহিকায় অবস্থিত দেশের উত্তর জনপদের নদ-নদী সংলগ্ন ও চরাঞ্চল একের পর এক তলিয়ে যাচ্ছে বানের তোড়ে। শুকনো জায়গায় আশ্রয়ের সন্ধানে ছুটছে অগণিত মানুষ। গবাদি পশু-পাখি নিয়ে বিপাকে পড়েছে মানুষ। পানি বৃদ্ধির এই ধারা বজায় থাকলে আজ-কালের মধ্যেই ব্রহ্মপুত্র নদ বিপদসীমা ছাড়িয়ে যাবে। উত্তরের নিম্নাঞ্চলে বন্যার প্রভাব ইতোমধ্যেই শুরু হয়েছে।
উত্তর জনপদে তিস্তা, ধরলা, ঘাগটসহ বিভিন্ন নদ-নদীর পানি কিছুটা কমলেও গত তিন দিনের বানের তোড়ে কুড়িগ্রাম, নীলফামারী ও গাইবান্ধা জেলার বিশেষত নিম্নাঞ্চলগুলো এখনও তলিয়ে রয়েছে। গতকাল বিকেলে তিস্তা ডালিয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ৫৫ সেমি নিচে, কুড়িগ্রামে ধরলা নদী ১৪ সেমি নিচে, গাইবান্ধায় ঘাগট নদী ৬৩ সেমি নিচে প্রবাহিত হয়।
এদিকে বন্যার হুমকিতে রয়েছে দেশের মধ্যাঞ্চলও। পদ্মার ভাটিতে পানি বাড়ছেই। দেশে গত কয়েকদিনে অভ্যন্তরীণ বৃষ্টিপাতের মাত্রা কমলেও ভারতসহ উজানভাগে ভারী বর্ষণে ঢলের পানি ভাটির দিকে তীব্রবেগে প্রবাহিত হচ্ছে। সিংরায় গুর, বাঘাবাড়ীতে আত্রাই, মধ্যাঞ্চলের টাঙ্গাইলে ধলেশ্বরী নদ-নদীর পানি এখনও বৃদ্ধি পাচ্ছে। গঙ্গা-পদ্মা অববাহিকায় বাড়ছে পানি। ভাটিতে পদ্মা নদী গোয়ালন্দে বিপদসীমার ৮৯ সেমি এবং সুরেশ্বরে ৮৮ সেমি নিচে রয়েছে। প্রতিদিনই পানি বৃদ্ধির দিকেই রয়েছে। সিলেট বিভাগে সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে।
পাউবো সূত্র জানিয়েছে, গতকাল দেশের নদ-নদীগুলোতে ৯৪টি পর্যবেক্ষণ স্টেশনের মধ্যে গতকাল পানি বৃদ্ধি পায় ৪৯টিতে, হ্রাস পায় ৪৩টিতে এবং বিপদসীমার ঊর্ধ্বে প্রবাহিত হয় ৭টি পয়েন্টে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বন্যা


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ