Inqilab Logo

সোমবার, ১৩ মে ২০২৪, ৩০ বৈশাখ ১৪৩১, ০৪ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

পেট্রোল পাম্পগুলোতে জ্বালানি তেলের কৃত্রিম সঙ্কট

লাইসেন্স বাতিলের হুমকি প্রতিমন্ত্রীর : লোকসান দিয়ে বিক্রি সম্ভব নয় বললেন নাজমুল

প্রকাশের সময় : ১৪ এপ্রিল, ২০১৬, ১২:০০ এএম

বিশেষ সংবাদদাতা : অসৎ পেট্রোল পাম্প মালিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার হুঁশিয়ারি দিয়ে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, কৃত্রিম সঙ্কট তৈরি করে যেসব পেট্রোল পাম্প তেলের দাম বাড়িয়েছে এবং তেল বিক্রি বন্ধ রেখেছে, তাদের চিহ্নিত করে লাইসেন্স বাতিল করা হবে। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে প্রায় সাড়ে ৩শ’ পেট্রোল পাম্প এ ধরনের কাজে সম্পৃক্ত আছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
অপরদিকে, জ্বালানি প্রতিমন্ত্রীর এমন হুঙ্কারের জবাবে পেট্রোল পাম্প ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের নেতা নাজমুল হক বলেন, লোকসান করে তো তেল বিক্রি করা সম্ভব না। যেকোনো সময় তেলের দাম কমতে পারে। এখন যদি আমি তেল কিনে রাখি আর দাম কমে যায়, তাহলে বেশি দামে কিনে কম দামে বিক্রি করতে হবে। জেনেশুনে কে লস করতে চায়? তিনি বলেন, সরকারের দায়িত্বশীল পদে থেকে দাম কমানো-বাড়ানোর বিষয়ে আগাম বক্তব্য দেওয়া উচিত নয়।
জ্বালানি তেলের দাম কমানোকে কেন্দ্র করে গতকাল (বুধবার) তারা এই পাল্টাপাল্টি বক্তব্য রাখেন।
বাংলাদেশ সচিবালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে পহেলা বৈশাখের একদিন পূর্বে দেশবাসীর উদ্দেশ্যে জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী আগামী দশ দিনের মধ্যে জ্বালানি তেলের দাম কমানোর ইঙ্গিত দেন। তিনি বলেন, অকটেন ও পেট্রোল প্রতি লিটারে ১০ থেকে ১৫ টাকা এবং কেরসিন ও ডিজেল লিটারপ্রতি ৫ থেকে ৬ টাকা কমতে পারে।
নসরুল হামিদ বলেন, জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির সময় অকটেন ও পেট্রোলের দাম তুলনামূলক বেশি বাড়ানো হয়েছিল। সে হিসাবে লিটার প্রতি অকটেন ও পেট্রোলে কমবে ১০ থেকে ১৫ টাকা। আর ডিজেল ও কেরোসিনের দাম তুলনামূলক কম বাড়ানো হয়েছিল। এজন্য কেরোসিন ও ডিজেলে লিটার প্রতি ৫ থেকে ৬ টাকা কমানো হবে।
জ্বালানি তেলের দাম কমাতে সময় লাগছে কেন? জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, এখনও প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় থেকে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসেনি। তবে আগামী ২০ এপ্রিলের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সিদ্ধান্ত জানা যাবে। তখন দাম কমানোর পরিপত্র জারি করা হবে।
এদিকে, সরকারের পক্ষ থেকে জ্বালানি তেলের দাম কামানোর আগাম ঘোষণায় রাজধানীসহ সারা দেশে জ্বালানি তেলের কৃত্রিম সঙ্কট সৃষ্টি হয়েছে। পেট্রোল পাম্পগুলোতে পর্যাপ্ত তেল মিলছে না। এব্যপারে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন (বিপিসি) এর সাথে যোগাযোগ করে জানা যায়, গত কয়েক দিনে তাদের তেল বিক্রি প্রায় অর্ধেক কমেছে।
এমনটি কেন হচ্ছে জানতে চাইলে বিপিসি’র নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, লোকসানের আশঙ্কায় ব্যবসায়ীরা পর্যাপ্ত তেল কিনে রাখছেন না। শুধু দৈনিক হিসেবে তেল কিনে বিক্রি করছেন। এতে পরিবহন ব্যবহারকারীরা বিপাকে পড়ছেন। বিশেষ করে বিকেলের পর অনেক পাম্পেই জ্বালানি মিলছে না।
এ বিষয়ে পেট্রোল পাম্প ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের নেতা নাজমুল হক বলেন, লোকসান করে তো তেল বিক্রি করা সম্ভব না। যেকোনো সময় তেলের দাম কমতে পারে। এখন যদি আমি তেল কিনে রাখি আর দাম কমে যায় তাহলে বেশি দামে কিনে কম দামে বিক্রি করতে হবে। জেনেশুনে কে লস করতে চায়? তিনি বলেন, সরকারের দায়িত্বশীল পদে থেকে দাম কমানো-বাড়ানোর বিষয়ে আগাম বক্তব্য দেওয়া উচিত নয়।
উল্লেখ্য, গত ৪ এপ্রিল জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী সাংবাদিকদের জানান, আগামী ১০ দিনের মধ্যে জ্বালানি তেলের দাম কমতে পারে। এরপরই বিপিসির তেল বিক্রিতে ভাটা পড়ে। দেশজুড়ে সৃষ্টি হয় জ্বালানি তেলের কৃত্রিম সঙ্কট।
বিপিসির তথ্য মতে, গত ৪ এপ্রিল প্রতিষ্ঠানটি অকটেন বিক্রি করেছে ৫৫০ টন, আর ৬ এপ্রিল বিক্রি হয়েছে ২৫৫ টন। দুই দিনের মধ্যে বিক্রি অর্ধেকেরও বেশি কমেছে। ডিজেলের ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটেছে।
গত ৪ এপ্রিল বিপিসি’র ডিজেল বিক্রির পরিমাণ ছিল ১০ হাজার ১৫৩ টন, আর ৬ এপ্রিল বিক্রি হয়েছে ৫ হাজার ৯৬৩ টন। দুই দিনে চার হাজার টনেরও বেশি বিক্রি হ্রাস পায়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পেট্রোল পাম্পগুলোতে জ্বালানি তেলের কৃত্রিম সঙ্কট
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ