Inqilab Logo

বুধবার ২০ নভেম্বর ২০২৪, ০৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বর্ষবরণের আনন্দ আজ

প্রকাশের সময় : ১৪ এপ্রিল, ২০১৬, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১১:৪৭ পিএম, ১৩ এপ্রিল, ২০১৬

ফারুক হোসাইন : জীবন থেকে মুছে যাক বিগত বছরের ব্যর্থতার গ্লানি, দূর হয়ে যাক পুরাতন বছরের আবর্জনা। মুছে যাক গ্লানি, ঘুচে যাক জরা/অগ্নিস্নানে শুচি হোক ধরা। সকল না পাওয়ার বেদনাকে ধুয়ে মুছে, আকাশÑবাতাস ও প্রকৃতিকে অগ্নিস্নানে সূচি করে তুলতেই প্রকৃতিতে আবার এসেছে পহেলা বৈশাখ।
আজ পহেলা বৈশাখ। পুরাতনকে ভুলে নতুন সূর্যোদয়ের সাথে সাথে ইতিহাসের পাতায় ঠাঁই নেবে আরো একটি বছর। সূচনা হবে নতুন বাংলা সাল ১৪২৩। শুভ নববর্ষ। বিদায় ১৪২২, স্বাগত ১৪২৩। পুরনো বছরের গ্লানি ভুলে নতুনে আশার ভেলা ভাসিয়ে নতুন সূর্যোদয়কে আপন করে নিতে উন্মুখ দেশের আবালবৃদ্ধবণিতা। নববর্ষকে বরণ করতে নগরবাসী ইতোমধ্যে সম্পন্ন করেছে সকল প্রস্তুতি। পিছিয়ে নেই গ্রামাঞ্চলগুলো। গ্রামে-গ্রামে আয়োজন করা হয়েছে বর্ষবরণের নানা অনুষ্ঠান। বর্ষবরণের চিরায়ত রীতি হিসেবে ঘরে ঘরে থাকছে পান্তা ইলিশের আয়োজন। সূর্যোদয়ের সাথে সাথে নববর্ষকে বরণ করে নিতে ঘর ছেড়ে বেরিয়ে পড়বেন নগরবাসী। লাল, হলুদ, সাদাসহ বাহারি রঙের শাড়ী, আর পাঞ্জাবী পড়ে হাতে হাত রেখে তরুণ-তরুণী, কিশোর-কিশোরী, যুবক-যুবতী, বৃদ্ধ-শিশুসহ সব বয়সী মানুষ স্বাগত জানাবে নতুন সূর্যোদয়কে। বদলে যাবে রাজধানী ঢাকার দৃশ্যপট। শোভাযাত্রা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, মেলায় বর্ণাঢ্য হয়ে উঠবে শহর।
বাঙালির চিরন্তন ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতায় বর্ষবরণের আনন্দে, হালখাতার নবায়নে আজ জীবনে নতুন স্বপ্ন সাজানোর দিন। বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় অসাম্প্রদায়িক এ সর্বজনীন উৎসবের দিনটি সরকারি ছুটির দিন। গ্রীষ্মের তীব্র খরতাপ উপেক্ষা করে দেশের প্রতিটি পথে, মেলায়, অনুষ্ঠানে থাকবে আজ লাখো-কোটি মানুষের প্রাণচাঞ্চল্য, উৎসব মুখরতার বিহ্বলতা। সব অপ্রাপ্তি ভুলে গিয়ে নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচনের লগ্নে একটি আত্মমর্যাদাসম্পন্ন গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক ও সুখী-সমৃদ্ধ দেশ গড়ার প্রত্যয় নিয়েই বাঙালি পালন করবে বৈশাখী উৎসব। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথের আকাক্সক্ষার সঙ্গে একাকার হয়ে সবার কন্ঠে ধ্বনিত হবে একই সূরে “এসো হে বৈশাখ, এসো, এসো/তাপস নিঃশ্বাস বায়ে... মুমূর্ষুরে দাও উড়ায়ে/বৎসরের আবর্জনা দূর হয়ে যাক.../মুছে যাক গ্নানি, ঘুচে যাক জরা/অগ্নিস্নানে শুচি হোক ধরা।” শাশ্বত সেই শুচিশুভ্রতার স্বপ্নে বিগত বছরের জীর্ণতাকে পেছনে ফেলে আজ নতুন বছরকে বরণ করে নেওয়ার দিন। রমনার বটমূলে দিনটির সূচনা হবে যথারীতি ছায়ানটের বর্ষবরণ সঙ্গীত আয়োজনের মধ্য দিয়ে। রমনামুখী লাখো মানুষের ঢল উৎসবকে করে তুলবে আরও বর্ণিল। পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে প্র্রেসিডেন্ট মোঃ আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বিএনপি’র চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ, ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির (ন্যাপÑভাসানী) চেয়ারম্যান এডভোকেট মোঃ আজহারুল ইসলাম, নববর্ষে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে পৃথক বাণী দিয়েছেন। নববর্ষ উপলক্ষ্যে বিটিভি, বাংলাদেশ বেতার, বেসরকারি টিভি চ্যানেল ও দৈনিক পত্রিকাগুলোতে রয়েছে আজ নববর্ষের বর্ণাঢ্য আয়োজন। এতিমখানা, কারাগার, সংশোধন কেন্দ্র, হোষ্টেল এবং হাসপাতালে উন্নত খাবার পরিবেশন করা হবে।
বর্ষবরণের অনুষ্ঠানে রাজধানীর রমনা থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ধানম-ি লেক, সংসদ ভবন এলাকা, গুলশান, মিরপুর, পুরান ঢাকা এক কথায় পুরো ঢাকা শহর পরিণত হবে উৎসবের নগরীতে। নারী-পুরুষ-শিশু,ধর্ম,বর্ণ,গোত্র নির্বিশেষে জাতীয়ভাবে আনন্দ-উলাসে মেতে ওঠবে আজ সকলেই। শোভাযাত্রা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, মেলা এবং রং-বেরঙের নারী-পুরুষের পোষাক এবং সজ্জায় বর্ণিল হয়ে উঠবে রাজধানীসহ গোটা দেশ। প্রাণ চাঞ্চল্যে মুখরিত হয়ে রাজধানী ঢাকার দৃশ্যপটও বদলে যাবে। কাকডাকা ভোর থেকেই নগরীর পথে পথে বাঙালি সংস্কৃতি লালনকারী আনন্দপিপাসু নগরবাসীর ঢল নামবে। পড়নে থাকবে বৈশাখী উৎসবের লাল-সাদার বাহারি নক্সার পোশাক। শাড়ি, সালোয়ারÑ কামিজ ও ফতুয়া পরে, পায়ে আলতা, হাতে মেহেদী আর খোঁপায় তাজা ফুলের মালা জড়িয়ে বঙ্গ ললনারা রাজপথে নেমে আসবেন। পুরুষের পরিধানে থাকবে পাঞ্জাবী ও ফতুয়াসহ চিরায়ত বাঙালি পোশাক। শিশুরাও এদিন বাবাÑমা’র হাত ধরে আসবে পুরো বাঙালি সাজে সেজে। প্রায় সকলের, বিশেষ করে শিশু, তরুণÑ তরুণীদের কপালে, গালে, বাহুতে আঁকা থাকবে বাঙালী সংস্কৃতির আলপনা। রঙ-বেরঙের মুখোশ পরে ঢাক, ঢোল, একতারা হাতে নানা অনুষ্ঠানে যোগ দিতে রাস্তায় নেমে পড়বেন অধিকাংশ রাজধানীবাসী। বর্ষবরণের চিরায়ত রীতি হিসেবে ঘরে ঘরে থাকছে পান্তা ইলিশের আয়োজন। এছাড়াও, এদিন ঘরে ঘরে তৈরি হবে মুখরোচক পিঠা, পায়েস, ভিন্ন ও দেশীয় নানা ধরনের পিঠা।
বর্ষবরণের মূল আয়োজন: বাংলা বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে দিনের শুরুতে সূর্যোদয়ের সাথে সাথে সকাল ৬ টায় রাজধানীর রমনা বটমূলে অনুষ্ঠিত হবে ছায়ানটের অনুষ্ঠান। সকাল ৯টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের আয়োজনে অনুষ্ঠিত হবে মঙ্গল শোভাযাত্রা। চারুকলা অনুষদ থেকে শুরু হয়ে শোভাযাত্রাটি শাহবাগ ও রূপসী বাংলা মোড় ঘুরে টিএসসি হয়ে আবার চারুকলা অনুষদে শেষ হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, বাঙালির প্রাণের উৎসব পহেলা বৈশাখ-১৪২৩ উদযাপন উপলক্ষে বর্ণাঢ্য ও বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।
কর্মসূচির মধ্য রয়েছে, নববর্ষ বরণ উপলক্ষে চারুকলা অনুষদের মঙ্গল শোভাযাত্রা। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক শোভাযাত্রায় নেতৃত্ব দিবেন। এ বছর ‘মা ও শিশু’কে চেতনায় ধারণ করে ‘অন্তর মম বিকশিত কর অন্তর তব হে’Ñ এই প্রতিপাদ্যকে সামনের রেখে শোভাযাত্রাটি চারুকলা থেকে বের হয়ে রূপসী বাংলা হোটেল চত্বরে ঘুরে আবার চারুকলার সামনে এসে শেষ হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, চারুকলা ইনস্টিটিউটে দিনব্যাপী চলবে পুতুল নাচ ও নাগরদোলা। বৈশাখ উদযাপন উপলক্ষে বাংলা বিভাগ ও বাংলা অ্যালামনাইয়ের উদ্যোগে কলাভবন প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হবে বর্ষবরণ অনুষ্ঠান। সংগীত বিভাগ সকাল ৮টায় বিশ্ববিদ্যালয় বটতলায় আয়োজন করবে সংগীতানুষ্ঠানের। থিয়েটার এন্ড পারফরমেন্স স্টাডিজ বিভাগের উদ্যোগে নাট-ম-ল প্রাঙ্গণে বিভাগের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হবে পট-গান ও দেশের গান। মল চত্বর এলাকায় অনুষ্ঠিত হবে এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। শাহবাগে ঢাকা শিশু পার্কের সামনে এবং ধানম-ির রবীন্দ্র সরোবরেও অনুষ্ঠান থাকছে বরাবরের মতোই। বাংলা নববর্ষ উদযাপনে বিভাগীয় শহর এবং ৫৭টি জেলা সদরে (বিভাগীয় সদর ব্যতীত) ও সব উপজেলায় (সদর উপজেলা ব্যতীত) সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ আলোচনা সভা ও গ্রামীণ মেলার আয়োজন করেছে স্থানীয় প্রশাসন।
বর্ষবরণ উৎসবকে ঘিরে রমনা পার্কসহ বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার পুরোটাই ঢেকে দেয়া হয়েছে নিরাপত্তা চাদরে। শুধু রাজধানী ঢাকাই নয় এ উপলক্ষে সারাদেশই নিñিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশ ও র‌্যাবের পাশাপাশি গোয়েন্দা সংস্থা ও তাদের আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে যৌথভাবে কাজ করছে সব সংস্থা। বিভিন্ন সামাজিক এবং রাজনৈতিক সংগঠনের পক্ষ থেকেও নিরাপত্তা নিয়ে নেয়া হয়েছে নানা উদ্যোগ। সার্বিক নিরাপত্তা ও নজরদারি নিশ্চিত করতে বসানো হয়েছে কন্ট্রোল রুম, অবজারভেশন পোষ্ট ও চেকপোষ্ট। আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের পাশাপাশি থাকছে গোয়েন্দা দলের সদস্য, বোমা ডিসপোজাল টিম ও মেডিক্যাল টিম।
প্রেসিডেন্ট, প্রধানমন্ত্রী ও জাতীয় নেতৃবৃন্দের বাণী: বাঙালি সংস্কৃতির ধারক পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট মোঃ আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বিএনপি’র চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবি সংগঠন ও এর নেতৃবৃন্দ।
প্রেসিডেন্ট মোঃ আবদুল হামিদ তার বাণীতে আশা প্রকাশ করে বলেন, অতীতের সব গ্লানি ও বিভেদ ভুলে বাংলা নববর্ষ জাতীয় জীবনের সর্বক্ষেত্রে ঐক্য আরও সুদৃঢ় করবে এবং বয়ে আনবে অফুরন্ত আনন্দের বারতা।  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, পহেলা বৈশাখে বাঙালি সংস্কৃতির চর্চা আমাদের জাতিসত্তাকে আরও বিকশিত করবে। নববর্ষ সাম্প্রদায়িকতা, ধর্মান্ধতা ও দেশবিরোধী অপশক্তির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার শক্তি যোগাবে। একইসাথে আমাদের জাতিসত্তাকে আরও বিকশিত এবং আমাদেরকে আরও ঐক্যবদ্ধ করবে। বিএনপি’র চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া বলেছেন, নতুন বছরে বাংলাদেশের প্রতিটি ঘরে প্রবাহিত হোক শান্তির অমিয় ধারা, সবার জীবন হয়ে উঠুক সমৃদ্ধময়। সমাজ থেকে চিরতরে বিদায় নিক অসত্য, অন্যায়, অনাচার ও অশান্তি। জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ বলেন, নতুন বছর জীবনের পুঞ্জিভুত সমস্যার সমাধানে অগ্রগতি হবে এবং উন্নয়ন ও সম্ভাবনার নতুন দিগন্ত উন্মোচিত করে বয়ে আনবে সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি।
চট্টগ্রামে বর্ষবরণে নানা আয়োজন
চট্টগ্রাম ব্যুরো : চট্টগ্রামে বাংলা নববর্ষকে বরণ করতে নানা আয়োজন ও প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। গতকাল (বুধবার) নানা অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে পুরাতন বর্ষকে বিদায় জানানো হয়েছে। আজ ভোর থেকে শুরু হবে বর্ষবরণের অনুষ্ঠানমালা। বিকেল ৫টার মধ্যে অনুষ্ঠান শেষ করার নির্দেশনা দিয়েছে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ। মহানগরীর বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের ভেন্যুগুলোকে ঘিরে নেয়া হয়েছে তিনস্তরের নিরাপত্তা। বর্ষবরণের ক্ষণটিকে উৎসবমুখর করে রাখতে বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক বর্ণিল উৎসবের আয়োজন করেছে। সম্মিলিত পহেলা  বৈশাখ উদযাপন পরিষদ চট্টগ্রামের উদ্যোগে বর্ষবিদায় ও বরণের সবচেয়ে বড় আয়োজনটি প্রতিবারের মতো এবারও নগরীর ডিসি হিলে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। গতকাল বর্ষবিদায়ের অনুষ্ঠানে অসংখ্য মানুষের ঢল নামে। আজ পহেলা বৈশাখের দিন ভোর ৬টায় ওস্তাদ স্বর্ণময় চক্রবর্তীর পরিবেশনায় ভৈরবী রাগের মধ্য দিয়ে শুরু হবে আয়োজন। এরপর থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত চলবে অনুষ্ঠান। বিভিন্ন সংগঠনের অংশগ্রহণে চলবে নানা আয়োজন।
নববর্ষ উদযাপন পরিষদ নগরীর সিআরবি’র শিরীষ তলায় আয়োজন করেছে বর্ষবরণ উৎসবের।
সকাল ৮টায় সার্কিট হাউস থেকে মঙ্গলশোভাযাত্রা শুরু হবে। এরপর জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে শুরু হবে বর্ষকে বরণের নানা আয়োজন। নাচ, গান, ফ্যাশন শো, আবৃত্তি পরিবেশনের মধ্য দিয়েই চলবে পুরো আয়োজন। পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব আজ দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে।
সিলেটের মার্কেটগুলোতে ধুম কেনাকাটা
সিলেট অফিস : বৈশাখকে ঘিরে সিলেট নগরীর প্রতিটি মার্কেটেও রয়েছে উপচে পড়া ভিড়। এমনকি ফুটপাত থেকে অভিজাত বিপণীবিতানগুলোতেও পুরো ধমে বৈশাখী বেচাকেনা চলছে। গতকাল বিকালে সিলেট নগরীর, শুকরিয়া মার্কেট, আল হামরা শপিং সিটি, ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি, কাজী ম্যানশন, সিটি সেন্টারসহ বিভিন্ন বিপণী বিতান, শপিং কমপ্লেক্স, বুটিক হাউসগুলো ঘুরে দেখা যায়, বিক্রেতারা বৈশাখ উপলক্ষে বিভিন্ন ডিজাইনের পোশাকের সম্ভার সাজিয়ে রেখেছেন। বৈশাখ উপলক্ষে বুটিক হাউসগুলো ৩০ এর অধিক নকশার পোশাক নিয়ে হাজির হয়েছে। আর ওইসব দোকান থেকে ক্রেতারা তাদের পছেন্দের কাপড় বেঁচে নিচ্ছেন।
নগরীর লামাবাজার পয়েন্টস্থ জয়ন্তী মণিপুরী শাড়ি ঘরের স্বত্বাধিকারী মুন্না দাস, জননী ফ্যাশনের মণি দাস এবং জিন্দাবাজারস্থ শুকরিয়া মার্কেটস্থ চৌধুরী ফ্যাশনের হাবিবুর রহমান বলেন, ‘নববর্ষকে ঘিরে ব্যবসা ভালই হয়েছে।
এদিকে, বাঙালির আবহমান সংস্কৃতির এই উৎসবকে নির্বিঘœ ও নিরবিচ্ছিন্ন করতে কঠোর নিরাপত্তামূলক প্রস্তুতি গ্রহণ করছে সিলেট মহানগর পুলিশ (এসএমপি)। ইতিমধ্যেই নিরাপত্তা রক্ষায় মাঠে নেমে পড়েছেন দুই হাজার র‌্যাব, পুলিশ ও গোয়েন্দা সদস্য।
বর্ষবরণ উদযাপনে মেতে উঠবে কুমিল্লা
কুমিল্লা থেকে স্টাফ রিপোর্টার : বাঙালির প্রাণের উৎসবের আরেক নাম পহেলা বৈশাখ। নব আনন্দ, উচ্ছ্বাস, উদ্দীপনা আর উল্লাসে নতুন করে আজ বৃহস্পতিবার বাঙলা নববর্ষের প্রথমদিনে সারা দেশবাসীর মতো কুমিল্লার সর্বস্তরের মানুষ হৃদয়ের উষ্ণতা দিয়ে বরণ করে নেবে ১৪২৩ সালকে।
আজ বর্ণাঢ্য আয়োজনে বর্ষবরণ উদযাপিত হবে কুমিল্লা। নতুন বর্ষের পহেলা বৈশাখের এ দিনটিতে কুমিল্লা জেলা প্রশাসনের বর্ণময় আয়োজনের পাশাপাশি আত্মপ্রত্যয়ী চেতনার দুয়ার মেলে কুমিল্লার শতাধিক সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যদিয়ে আনন্দ উল্লাসের পাশাপাশি সহিংসতা আর অসুন্দরের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবার আহ্বানও জানাবে তাদের পরিবেশনায়।
কুমিল্লায় বর্ষবরণের নানা আয়োজন ঘিরে আজ ভোর থেকে নগরীতে নামবে সব ধর্মের, সব শ্রেণি-পেশার মানুষের বাঁধভাঙ্গা ঢল। নব আনন্দে জেগে ওঠা এসব মানুষের বেশিরভাগেরই গন্তব্য হবে স্টেশন ক্লাব, পার্কের জামতলা, ধর্মসাগরপাড়ের মহিলা কলেজ চত্বর আর টাউন হল মাঠ। তবে নগরীর বাইরেও বর্ষবরণ উৎসবের আমেজ থাকবে গ্রাম-গঞ্জের মেলায়।
গফরগাঁওয়ে ব্যাপক প্রস্তুতি
গফরগাঁও (ময়মনসিংহ) উপজেলা সংবাদদাতা : গফরগাঁও পৌরসভাসহ উপজেলার ১৫টি ইউনিয়নে আবহমান বাংলার বৈশাখের প্রথম উদযাপনের জন্য প্রহর গুণছে বৈশাখী প্রেমী-নারী-পুরুষ-শিশুরা। প্রত্যেকেই এ উৎসবকে কেন্দ্র করে গ্রামবাংলার লোকজন হরেক রকম পোশাক ক্রয় করছে। কেউ বা আবার রাজধানী/নতুন বিভাগীয় মহানগর ঐতিহ্যবাহী ময়মনসিংহ শহর থেকে নানান রংয়ের পোষাক কিনতে দেখা যাচ্ছে। ডিজিটাল পদ্ধতির সংগে তালমিলিয়ে সাজসজ্জা বেড়ে গেছে শিশু-নারীরা। তারা প্রতিনিয়তই বিউটিপালা উপচেপড়া ভীড় দেখা যাচ্ছে। গফরগাঁও পৌরসভার ৩নং ওর্য়াডের কাউন্সিলর মোঃ আনিছুর রহমান জানান, বর্তমান সরকার এ বারেরই প্রথম বাংলা নববর্ষের জন্য সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য বৈশাখী ভাতা চালু করেছে। এছাড়া পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদের জন্য হতদরিদ্রদের বৈশাখী ভাতা কিংবা ভিজিএফ চাল দেয়া হলে তাদের ঘরে ক্ষণিকের কিছুটা সময়েরর জন্য আনন্দটা বেড়ে যেত।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বর্ষবরণের আনন্দ আজ

১৪ এপ্রিল, ২০১৬
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ