পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
আল-হাইআতুল উলয়া লিল-জামি‘আতিল কওমিয়া বাংলাদেশ এর কেন্দ্রীয় পরীক্ষার ফল গতকাল প্রকাশিত হয়েছে। পরীক্ষার গড় পাশের হার ৭৩.৩৪। ছাত্রদের পাশের হার ৭৬.০০ আর ছাত্রীদের পাশের হার ৬৬.৮৩।
আল-হাইআতুল উলয়া লিল-জামি‘আতিল কওমিয়ার উদ্যোগে গতকাল সকালে কেন্দ্রীয় দফতরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ ফল ঘোষণা করা হয়। ফল ঘোষণা করেন আলÑহাইআতুল উলয়া লিল-জামি‘আতিল কওমিয়া বাংলাদেশ-এর কো-চেয়ারম্যান আল্লামা আশরাফ আলী। ফল ঘোষণার পূর্বে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক আল্লামা হাফেয মাওলানা ইসমাঈল ফলাফলের ফাইল কো-চেয়ারম্যানের কাছে হস্তান্তর করেন।
ফল প্রকাশ অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে আল্লামা আশরাফ আলী মহান আল্লাহ তায়ালার শুর্ক আদায় করে বলেন, দাওরায়ে হাদীসের মাস্টার্সের সমমান দেয়ার পর কেন্দ্রীয় পরীক্ষা শুরু হওয়ায় ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে মেধার প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। এ প্রতিযোগিতার কারণে শিক্ষার্থীদের বেশি লেখাপড়া করতে হচ্ছে। অভিন্ন প্রশ্নপত্রে দ্বিতীয়বারের মতো কেন্দ্রীয় পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হওয়ার পর অনেক সীমাবদ্ধতা সত্তে¡ও নির্ধারিত তারিখে ফল ঘোষণা করা সম্ভব হয়েছে। তিনি এজন্য মহান আল্লাহ তাআলার দরবারে শুকরিয়া প্রকাশ করে ১৪৩৯ হিজরী ২০১৮ সালে দাওরায়ে হাদীসের (তাকমীল) পরীক্ষার ফল ঘোষণা করেন। অনুষ্ঠানে ছয়টি বোর্ডের প্রতিনিধিগণ আগামী পরীক্ষার ফল রমযান মাসে প্রকাশ করা এবং পাসের হার যাতে না কমে সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা কামনা করেন। (উল্লেখ্য গত ১১ এপ্রিল ২০১৭ ঈসাব্দে গণভবনে প্রধানমন্ত্রী কওমী মাদরাসার দাওরায়ে হাদীসের সনদকে মাস্টার্স (ইসলামিক স্টাডিজ এবং আরবি) এর সমমান প্রদানের ঘোষণা দেন।)
পরীক্ষায় মোট পরীক্ষার্থী ছিল ২০,৭৪৯ জন, মোট উত্তীর্ণ হয়েছে ১৪,৫৩৪ জন। এর মধ্যে ছাত্র ১০,৬৮৮ জন এবং ছাত্রী ৩,৮৪৬ জন। পাসের হার ছাত্র ৭৬.০০, ছাত্রী ৬৬.৮৩। মুমতায (স্টার মার্ক) পেয়েছে ছাত্র ৬৫৬ জন এবং ছাত্রী ৫৯ জন। জায়্যিদ জিদ্দান (১ম) বিভাগে উত্তীর্ণ হয়েছে ছাত্র ২,৮৩৫ জন, ছাত্রী ৬৭২ জন। জায়্যিদ (২য়) বিভাগে উত্তীর্ণ হয়েছে ছাত্র ৪,০৩৪ জন, ছাত্রী ১,৫৫২ জন এবং মাকবূল (৩য়) বিভাগে উত্তীর্ণ হয়েছে ছাত্র ৩,১৬৩ জন, ছাত্রী ১,৫৬৩ জন।
ছাত্রদের মেধা তালিকায় শীর্ষে রয়েছে যৌথভাবে ২ জন। তারা হল বগুড়া জেলার জামেয়া ইসলামিয়া কাছেমুল উলূম (জামিল মাদরাসা)-এর মুহা: শামসুল হক এবং ঢাকা জেলার জামিয়া আরাবিয়া ইমদাদুল উলূম ফরিদাবাদ মাদরাসার খলিল আহমদ নাদিম। মেধা তালিকায় ২য় স্থান অধিকার করেছে যৌথভাবে ২ জন। তারা হল কিশোরগঞ্জ জেলার জামিয়া নূরানিয়া তারাপাশা মাদরাসার মুহা: নাসীরুদ্দীন এবং চট্টগ্রাম জেলার আল-জামিয়া আল-ইসলামিয়া পটিয়া মাদরাসার মোহাম্মদ খুবাইব রাজী। মেধা তালিকায় ৩য় স্থান অধিকার করেছে যৌথভাবে ২ জন। তারা হল ঢাকা জেলার জামিয়াতুল উলুমিল ইসলামিয়া মাদরাসার জিহাদুল ইসলাম এবং চট্টগ্রাম জেলার আল-জামিয়া আল-ইসলামিয়া পটিয়া মাদরাসার আয়াতুল্লাহ।
ছাত্রীদের মেধা তালিকায় শীর্ষে রয়েছে ঢাকা জেলার মাহমুদিয়া মহিলা মাদরাসার মুনজিয়া ইসলাম। মেধা তালিকায় ২য় স্থান অধিকার করেছে নরসিংদী জেলার আয়েশা সিদ্দীকা মহিলা মাদরাসার মোসা: শামিমা এবং ৩য় স্থান অধিকার করেছে যৌথভাবে ৩ জন। তারা হল চট্টগ্রাম জেলার আল হুদা মহিলা মাদরাসার রাহমা, ও ঢাকা জেলার আয়েশা সিদ্দীকা (রা.) ঢালকানগর মহিলা মাদরাসার হাফসা সুলতানা এবং ফাহিমা মুসাররাত।
অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন কওমি মাদরাসা শিক্ষা কমিশন আল-হাইআতুল উলয়া লিল-জামি‘আতিল কওমিয়া বাংলাদেশ-এর সদস্য মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস, মাওলানা মাহফুজুল হক। আরো উপস্থিত ছিলেন বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশÑএর পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মাওলানা মুফতি আবু ইউসুফ এবং প্রধান নিরীক্ষক মাওলানা আব্দুল গনী। বেফাকুল মাদারিসিল কওমিয়া গওহরডাঙ্গা বাংলাদেশ-এর মাওলানা আবুল কালাম, আযাদ দ্বীনী এদারায়ে তা‘লীম বাংলাদেশ-এর মহাসচিব মাওলানা আব্দুল বছীর এবং নিরীক্ষক মাওলানা মুহিব্বুল হক, তানযীমুল মাদারিসিদ দ্বীনিয়া বাংলাদেশ-এর মহাসচিব মাওলানা মুফতি এনামুল হক, জাতীয় দীনী মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড বাংলাদেশ-এর মহাসচিব মুফতী মোহাম্মদ আলী। অনুষ্ঠানে সঞ্চালকের দায়িত্ব পালন করেন আল হাইআতুল উলয়া লিলÑজামি‘আতিল কওমিয়া বাংলাদেশ-এর দপ্তর সম্পাদক মাওলানা মু. অছিউর রহমান।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।