পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
মেক্সিকোর নির্বাচনে দেশটির বামপন্থী নেতা আন্দ্রেজ ম্যানুয়েল লোপেজ ওব্রাদর বিজয়ী হয়েছেন। এ বিজয় ‘মেক্সিকো বসন্ত’ কিনা কেউ কেউ সে প্রশ্ন করেছেন। অন্যদিকে নতুন প্রেসিডেন্টের ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর মডেল অনুসরণ করা উচিত বলেও মন্তব্য করা হয়েছে। আবার তার এ বিজয়কে ট্রাম্পবিরোধী মনোভাবের জয় বলেও আখ্যায়িত করেছেন কেউ কেউ।
প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে দুর্নীতি অবসান, সহিংসতা হ্রাস ও দারিদ্র দূরীকরণের প্রতিশ্রæতি দিয়ে ভোটদাতাদের ব্যাপক সমর্থন লাভ করেন ওব্রাদর। তিনি উত্তর আমেরিকা মুক্ত বাণিজ্য চুক্তিতে (নাফটা) মেক্সিকোর অবস্থান বহাল রাখবেন বলে ঘোষণা করেছেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক অব্যাহত রাখা ও অবৈধ অভিবাসীর জোয়ার দমন করতে মেক্সিকোকে সাহায্য করতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সাথে কাজ করার প্রতিশ্রæতি দিয়েছেন। এ ক্ষেত্রে তাকে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর চেয়েও নমনীয় বলে মনে করা হচ্ছে।
ম্যাক্রোঁ ও ওব্রাদরের মত নেতারা মনে করেন যে, স্থিতাবস্থার ক্ষেত্রে গণঅসন্তোষের কারণে বিশ^ব্যবস্থার পরিবর্তন ঘটছে। তবে তারা এও বিশ^াস করেন যে, স্থির মস্তিষ্ক, প্রাতিষ্ঠানিক পদক্ষেপই সর্বোত্তম সমাধান। ট্রাম্পের মত তারা মনে করেন না যে, বিদ্যমান প্রাতিষ্ঠানিক পদ্ধতি পরিত্যাগ করতে হবে, বরং তারা চান সেগুলোর সংস্কার। ম্যাক্রোঁ মডেলের নেতৃত্ব এ অন্তর্বর্তী সময়ের জন্য অধিক উপযোগী। আশা করা হচ্ছে যে, ওব্রাদর ট্রাম্প বা শ্যাভেজের চাইতে ম্যাক্রোঁ মডেলের দিকে অগ্রসর হচ্ছেন।
বিশ্লেষকরা বলছেন যে, ম‚লত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মেক্সিকোনীতির বিরুদ্ধে শক্তি খুঁজতে ওব্রাদরকে বেছে নেওয়া হয়েছে। এটা ‘মেক্সিকো বসন্ত’ বলা হবে কিনা সে প্রশ্ন সৃষ্টি হয়েছে। রবিবারের নির্বাচনে, ট্রাম্পকে ঠেকাতেই ওব্রাদরকে ভোট দিয়েছেন ভোটাররা। মেক্সিকানরা মনে করেন, যুক্তরাষ্ট্রে থাকা ১ কোটি ২০ লাখ অভিবাসীকে রক্ষার জন্য ওব্রাদরই সবচেয়ে যোগ্য; তিনিই পারবেন ওই অভিবাসী মেক্সিকানদের স্বার্থ রক্ষা করতে।
প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচরণার সময় থেকেই মেক্সিকোর বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে আছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ট্রাম্প সেই শুরু থেকেই বলে আসছেন, যুক্তরাষ্ট্রে রফতানিকৃত মেক্সিকান পণ্যের ওপর একপাক্ষিক কর আরোপ করে দেয়াল নির্মাণের বিপুল খরচ মেটানো হবে। মেক্সিকোও শুরু থেকে সেই কর দিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে আসছে। যুক্তরাষ্ট্র থেকে অবৈধ অভিবাসীদের তাড়িয়ে দেওয়ার ঘোষণায় ডোনাল্ড ট্রাম্পের ওপর আগে থেকেই ক্ষুব্ধ মেক্সিকো। কারণ যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধ অভিবাসীদের বড় অংশই গিয়েছে মেক্সিকো থেকে। এছাড়া স¤প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি দফতর বৈধ কাগজপত্রহীন অভিবাসীদের গ্রেফতার এবং বহিষ্কার করা শুরু করেছে। সেই প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং হোমল্যান্ড সিকিউরিটি দপ্তরের মন্ত্রী মেক্সিকো সফরও করেছেন।
ট্রাম্পের এমন মেক্সিকোনীতির প্রতিক্রিয়ায় ওব্রাদর বলেছিলেন, মেক্সিকোকে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের খেলার পুতুল হতে দেবেন না। অর্থনৈতিক উন্নয়নে বামপন্থী এই নতুন প্রেসিডেন্টের পরিকল্পনাকে জাতীয়তাবাদী কর্মস‚চি হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন সংশ্লিষ্টরা। তিনি অবসর ভাতা বাড়ানোর প্রতিশ্রুতির পাশাপাশি শ্রমিকদের বেতন বাড়ানোরও আশ্বাস দিয়েছেন। এই বামপন্থী জাতীয়তাবাদী প্রেসিডেন্ট গত জানুয়ারিতে বলেছিলেন, ‘আমরা অপমানজনক কোনও কিছু না করেই ট্রাম্পকে দেখিয়ে দিতে চাই, তার অবস্থান আসলে কোথায়’।
উল্লেখ্য, ট্রাম্পের মেক্সিকোবিরোধী বক্তব্যের জন্য শুধু ওব্রাদরই নন, মেক্সিকোর অন্য রাজনীতিকরাও ট্রাম্পবিরোধী অবস্থান নিয়েছিলেন। ওব্রাদরের প্রতিপক্ষ রিকার্দো নাইয়াও ট্রাম্পবিরোধী জনমত লক্ষ্য করে বলেছিলেন, ‘মেক্সিকানদের সম্মান দেখিয়ে কথা বলার বিষয়ে ট্রাম্পের কাছে দাবি জানানো উচিত।’
পলিটিকো সাময়িকী জানায়, ট্রাম্পবিরোধী অবস্থান দিয়েই মেক্সিকানদের সবচেয়ে দ্রæত একতাবদ্ধ করা যায়। মেক্সিকান সংস্থা কনসালটা মিটোফ্সকির গত জুনে চালানো জরিপ মোতাবেক, দেশটির ৮০ শতাংশ মানুষই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে অপছন্দ করেন। আর তারই ফলাফল পাওয়া গেছে দেশটির প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে। সূত্র : রয়টারস ও টাইমস অব ইন্ডিয়া।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।