বাড়িতেই ফাইনাল দেখবেন আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট কাতারে
বিশ্বকাপ ফুটবলের ফাইনাল ম্যাচ দেখতে কাতারে যাচ্ছেন না আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট আলবার্তো ফার্নান্দেজ। তিনি জানান, আজ
কতটা জাতীয়তা বোধ কাজ করলে এমন দৃঢ় সিদ্ধান্ত নেয়া সম্ভব? নাইজেরিয়া অধিনায়ক যে মানসিকতার পরিচয় দিয়েছেন তা সত্যিই অবাক করার মত। রাশিয়া বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার বিপক্ষে নিজেদের গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচের চার ঘণ্টা আগে ভয়ঙ্কর এক দুঃসংবাদ পেয়েছিলেন জন ওবি মিকেল, মুক্তিপণের জন্য অপহরণ করা হয়েছে তার বাবাকে! খবরটি কাউকে না জানিয়ে আর্জেন্টিনার বিপক্ষে খেলতে নেমেছিলেন নাইজেরিয়া অধিনায়ক। কর্তৃপক্ষকে বললে বাবাকে মেরে ফেলা হবে, এমন হুমকির কারণে কাউকে কিছুই বলতে পারেননি তিনি। ম্যাচে আর্জেন্টিনার কাছে ২-১ গোলে হেরে বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে যায় নাইজেরিয়া। ম্যাচের চার ঘণ্টা আগে অপহরণকারীদের কাছ থেকে ফোন পান মিকেল। ২৮ হাজার ডলার মুক্তিপণ দাবি করে অপহরণকারীরা।
গত ২৬ জুন নাইজেরিয়ার দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের দিকে এক অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় অংশ নিতে যাওয়ার পথে মিকেলের বাবা পা মাইকেল ওবি অপহৃত হন। প্রায় এক সপ্তাহ পর গত সোমবার ‘বন্দুকযুদ্ধের’ পর অপহরণকারীদের হাত থেকে মিকেলের বাবা ও তার গাড়িচালককে উদ্ধার করে নাইজেরিয়ার পুলিশ। উদ্ধারের পর তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। মিকেলের পরিবার ইএসপিএনকে জানায় পা ওবিকে নির্যাতন করা হয়েছিল এবং তার শরীরে অনেকগুলো সেলাই দিতে হয়েছে।
বাবা উদ্ধার হওয়ার পর ইএসপিএনকে মিকেল জানান, ‘আমি দ্বিধার মধ্যে ছিলাম। কি করব বুঝতে পারছিলাম না। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এটা জানতাম ১৮ কোটি নাইজেরিয়ানকে আমি হতাশ করতে পারি না।’ নাইজেরিয়া নাম্বার টেন বলেন, ‘অবশ্যই মাথা থেকে বিষয়টা ঝেড়ে ফেলতে বাধ্য হয়েছিলাম এবং খেলতে নেমেছিলাম। নাইজেরিয়াকে প্রতিনিধিত্ব করাটা সবার আগে। আমাকে বলা হয়েছিল, যদি আমি কর্তৃপক্ষকে বা কাউকে অপহরণের বিষয়ে কিছু বলি তাহলে সঙ্গে সঙ্গে বাবাকে গুলি করা হবে। এবং আমি চাইনি বিষয়টি নিয়ে কোচের সঙ্গে আলোচনা করতে। কেননা, আমি চাইনি এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের দিনে আমার সমস্যা কোচ এবং দলের বাকিদের মনোযোগ নষ্ট করে দিক। বিষয়টি আমি কোচের সঙ্গে খুব করে আলোচনা করতে চেয়েছিলাম কিন্তু পারিনি।’
পরে অবশ্য তার বাবাকে উদ্ধার করেছে দেশটির আইন শৃঙ্খলা বাহিনী। কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সোমবারই আমার বাবাকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। তার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই তাদের। আমাকে যারা সহযোগিতা করেছে তাদেরকেও ধন্যবাদ জানাই। দুর্ভাগ্যশত আমার বাবা এখন হাসপাতালে আছেন। অপহরণকারীদের নির্যাতনের শিকার হয়ে তিনি চিকিতসা নিচ্ছেন সেখানে।’
এর আগেও একবার অপহরণের শিকার হয়েছিলেন ওবি মিকেলের বাবা। ২০১১ সালের সেই ঘটনার ১০ দিন পর মুক্তি পান তিনি। একদিকে বাবা অন্যদিকে কোটি মানুষের স্বপ্ন। এমন সমীকরণেও দেশপ্রেমকেই বেছে নিয়ে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন ওবি মিকেল।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।