বাড়িতেই ফাইনাল দেখবেন আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট কাতারে
বিশ্বকাপ ফুটবলের ফাইনাল ম্যাচ দেখতে কাতারে যাচ্ছেন না আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট আলবার্তো ফার্নান্দেজ। তিনি জানান, আজ
আগের ম্যাচে দক্ষিণ কোরিয়ার কাছে হেরে বিশ্বকাপের গ্রæপ পর্ব থেকে বিদায় নিয়েছে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন জার্মানি। পরের ম্যাচে ব্রাজিলকে নিয়েও ছিল একই শঙ্কা- হারলেই বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে যাওয়ার শঙ্কা পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের। পরের রাউন্ড নিশ্চিত করতে অবশ্য ড্র করলেই চলত তাদের। কিন্তু অমন কঠিন পথে হাটেনি সেলেসাওরা। গ্রæপ পর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচে সার্বিয়াকে ২-০ গোলে হারিয়ে গ্রæপ চ্যাম্পিয়ন হয়েই শেষ ষোলয় উঠেছে ব্রাজিল। প্রথমার্ধে তিতের দলকে এগিয়ে নেন পাওলিনহো, দ্বিতীয়ার্ধে ব্যবধান বাড়ান ফিলিপ লুইস।
‘ই’ গ্রæপ থেকে নক আউট পর্বে ব্রাজিলের সঙ্গী সুইজারল্যান্ড। একই সময়ে অনুষ্ঠিত কোস্টারিকা ও সুইজারল্যান্ডের মধ্যকার শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচটি ২-২ গোলে ড্র হয়। ২ জুলাই সামারায় নক আউট পর্বে ব্রাজিলের প্রতিপক্ষ ‘এফ’ গ্রæপের রানার্স আপ মেক্সিকো। পরের দিন সেন্ট পিটার্সবার্গে সুইজারল্যান্ড খেলবে সুইডেনের বিপক্ষে।
আসরের প্রথম ম্যাচে সুইজারল্যান্ডের সঙ্গে ১-১ ড্র করে ব্রাজিল। পরের ম্যাচে ৯০ মিনিট পর্যন্ত গোলশূন্য থাকার পর শঙ্কায় পড়ে যায় আসরের অন্যতম ফেভারিটদের টিকে থাকা। কিন্তু যোগ করা সময়ের ঝড়ে ঠিকই ২-০ গোলের জয় ছিনিয়ে নেয় কুতিনহো-নেইমাররা।
একই গ্রæপে নিজেদের প্রথম ম্যাচ ড্রয়ের পর সার্বিয়াকে হারিয়ে শেষ ষোলর শক্ত দাবি জানিয়ে রাখে সুইজারল্যান্ড। গত রাতে ব্রাজিল না হারার শর্তে কোস্টারিকার বিপক্ষে ড্র করলেই চলত সুইসদের। ওদিকে টানা দুই পরাজয়ে আগেই আসর থেকে বিদায় নিশ্চিত হয় কোস্টারিকার। আটলান্টিক পাড়ের দেশকে হারিয়ে শেষ ষোলর আশা জিইয়ে রাখে সার্বিয়াও। এজন্য শেষ ম্যাচে ব্রাজিলকে হারাতে হত তাদের। কিন্তু তা না হওয়ায় কোস্টারিকার সঙ্গে বিদায় নিতে হচ্ছে তাদেরও।
মস্কোর স্পার্তাক স্টেডিয়ামে বলের দখল রেখে শুরু থেকে আক্রমণ শানালেও প্রথম ২৫ মিনিট পর্যন্ত সার্বিয়ার পোস্টে কোন শটই নিতে পারেননি জেসুস-নেইমার-কুতিনহোরা। এরপরই শুরু হয় হলুদের ঝলকানি। বামপ্রান্ত থেকে নেইমারের বিপজ্জক ক্রস রুখে দেন সার্বিয়া গোলরক্ষক। সময় গড়ানোর সাথে সাথে ধার বাড়ে পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের খেলায়। ৩৫তম মিনিটে ফিলিপ কুতিনহোর মাঝমাঠ থেকে লম্বা করে পাস দেন পাওলিনহোর উদ্দেশ্যে। সুযোগ সন্ধানি বার্সা ফরোয়ার্ড সার্বিয়ার ডিফেন্স চিরে দারুণ চিপ শটে গোলরক্ষক ভøাদিমির স্তজকোভিচের মাথার উপর দিয়ে বল পাঠিয়ে দেন জালে।
ওদিকে সুইজারল্যান্ডও তখন বেøরিম জিমাইলির গোলে এগিয়ে। পাওলিনহোর মিনিট তিনেক আগে স্কোরবোর্ডে নাম লেখান বলোনিয়া মিডফিল্ডার। বলের দখল কম থাকলেও পাল্টা আক্রমণে ত্রাস ছড়ায় কোস্টারিকা। তেমনি এক আক্রমণে ড্যানিয়েল কলিনড্রেসের শট ক্রসেবারে লেগে প্রতিহত হয়। প্রথমার্ধে আর গোলের দেখা পায়নি কেউই।
৫১তম মিনিটে পাল্টা আক্রমণে দারুণ সুযোগ তৈরী করে সার্বিয়া। কিন্তু প্রতিপক্ষে ডি বক্সে গিয়ে তালগোল পাকিয়ে ফেলে তারা। ৬০তম মিনিটে সহজতম সুযোগ হাতছাড়া করে সার্বিয়া। অ্যাডাম জালিচের শট ফিরিয়ে দেন ব্রাজিল গোলরক্ষক আলিসন। কিন্তু ফিরতি বল কাছ থেকে হেড নিয়ে জালে পাঠাতে পারেননি আলেক্সান্ডার মিত্রভিচ। তার হেড দুঃর্ভাগ্যক্রমে ডিফেন্ডারের পায়ে লেকে প্রতিহত হয়। আলিসন সহজে সেই বল নিয়ন্ত্রণে নেন। এরপরও কিছু সময় একই রকম নাটক চলে ব্রাজিলের রক্ষণে কিন্তু জাল আবিষ্কার করতে পারেনি সার্বিয়া। ততক্ষণে গ্রæপের অপর ম্যাচে কর্নার কিক থেকে হেড করে কোস্টারিকাকে সমতায় ফেরান ডিফেন্ডার কেন্দেল ওয়াটসন।
সার্বিয়া না পারলেও সুযোগ কাজে লাগায় ব্রাজিল। নেইমারের নেয়া কর্নার কিক খুঁজে নেয় থিয়াগো সিলভার মাথা। সফল হেডে বল জালে পাঠিয়ে দেন ৩৩ বছর বয়সী অভিজ্ঞ ডিফেন্ডার। পরক্ষণেই ঝটিকা আক্রমণে সার্বিয়ার রক্ষণে ভীতি ছড়ান নেইমার। গোলের বেশ কয়েক সুযোগ হাতছাড়া করেন পিএসজি তারকা। ফলে গোলের ব্যবধান আর বাড়েনি।
ওদিকে জসিপ দ্রামিচের শেষ সময়ের গোলে জয়ের আবহ তৈরী করে সুইসরা। কিন্তু যোগ করা সময়েরও শেষ মুহূর্তে ব্রায়ান রুইজের গোলে আসরে প্রথমবারের মত হার এড়ায় কোস্টারিকা।
জয়ের আনন্দের মাঝে বড় একটা ধাক্কা সইতে হচ্ছে ব্রাজিল ভক্তদের, মার্সেলোর ইনজুরি। ম্যাচের দশম মিনিটে খুঁড়িয়ে মাঠ ছাড়েন লেফট উইংয়ে দলটির সবচেয়ে বড় ভরসা। দু’জনের কাঁধে ভর দিয়ে মার্সেলোর ড্রেসিংরুমের দিকে যাওয়ার দৃশ্য বলছিল বিশ্বকাপ হয়ত এখানেই শেষ রিয়াল মাদ্রিদ তারকার। তার বদলি নামেন অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ ডিফেন্ডার ফিলিপ লুইস। কস্তা ও দানিলোর তিতের দলে চোটের তালিকায় যোগ হয় মার্সেলোর নাম।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।