Inqilab Logo

রোববার ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

খালেদা জিয়ার জামিন বিষয়ে আদেশ ২ জুলাই

কুমিল্লার এক মামলা

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৪ জুন, ২০১৮, ১১:১৩ পিএম

কুমিল্লার দুই মামলার মধ্যে হত্যার অভিযোগে দায়ের করা একটি মামলায় খালেদা জিয়াকে হাইকোর্টের দেয়া জামিনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের লিভ টু আপিলের শুনানি শেষ হয়েছে। এ বিষয়ে আগামী ২ জুলাই আদেশ দেবেন আপিল বিভাগ। এছাড়াও কুমিল্লার অপর একটি মামলায় শুনানির জন্য আজ (সোমবার) দিন ধার্য করেছেন আদালত। গতকাল বোববার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন চার বিচারপতির বেঞ্চ এ আদেশ দেন। এর আগে সকাল থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত হত্যা মামলার শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।
এর আগে গত ২৮ মে হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ কুমিল্লার নাশকতার দুই মামলায় খালেদাকে জামিন দেন। এ জামিনাদেশ স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের পর ২৯ মে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত জামিন স্থগিত রেখে ৩১ মে পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানির আদেশ দেন। সেই অনুসারে ৩১ মে শুনানির পর আপিল বিভাগ খালেদা জিয়াকে হাইকোর্টের দেয়া জামিন স্থগিত রেখে রাষ্ট্রপক্ষকে লিভ টু আপিল করতে আদেশ দেন। পরে রাষ্ট্রপক্ষ লিভ টু আপিল দায়ের করেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। খালেদা জিয়ার পক্ষে শুনানিতে করেন খন্দকার মাহবুব হোসেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন এজে মোহাম্মদ আলী, মওদুদ আহমেদ, জয়নুল আবেদীন ও মাহবুব উদ্দিন খোকন।সকাল পৌনে ১০টার দিকে লিভ টু আপিলের শুনানি শুরু হয়।
শুরুতেই অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম কুমিল্লায় পেট্রোল বোমায় বাস পুড়িয়ে মানুষ হত্যার মামলার অভিযোগপত্র, ঘটনার কিছু স্থিরচিত্র এবং ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন থেকে ঘটনার ভয়াবহতা ও মামলার আদ্যোপান্ত তুলে ধরেন। পরে খালেদা জিয়াকে এ ঘটনার নির্দেশদাতা হিসেবে বর্ণনা করে রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা বলেন, হরতাল ও অবরোধ এক বিষয় না। হরতাল ও অবরোধের মাঝে পার্থক্য হচ্ছে, হরতালে সীমিতভাবে গাড়ি চলে, দোকানপাটও খোলা থাকে। আর অবরোধে গাড়ি চলতে দেয়া হয় না। সবকিছু অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। তখন লাগাতার অবরোধ চলছিল। তাছাড়া অবরোধ সফল করার ক্ষেত্রে খালেদা জিয়াই তখন প্রধান ব্যক্তি। টেলি কথপোকথনেই প্রমাণ হয়, খালেদা জিয়ার নির্দেশেই ওই ঘটনা ঘটেছে। অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, এতবড় নৃসংশ ঘটনায় করা মামলার প্রধান ব্যক্তি হওয়ার পরও যদি তাকে জামিন দেয়া হয়, তবে এ ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্থি ব্যক্তি ও তাদের পরিবারগুলোর কছে কী বার্তা যাবে? ফলে আমার আরজি হল, হাইকোর্টের দেয়া জামিন বাতিল করা হোক।
এরপর প্রধান বিচারপতি অ্যাটর্নি জেনারেলের কাছে জানতে চান, এ বিষয়ে তার আরও কিছু বলার আছে কি না। তখন অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, আরেকটু আছে। আগামীকাল করতে চাচ্ছি।
প্রধান বিচারপতি তখন বলেন, আগামীকাল (সোমবার) আমাদের একজন ব্রাদার জাজ থাকবেন না। দেশের বাইরে যাবেন। তাহলে আগামী সোমবারের পরের সোমবার শুনব। খন্দকার মাহবুব হোসেনসহ খালেদা জিয়ার অপর আইনজীবীরা এর বিরোধিতা করলে আদালত এ আবেদনের ওপর তাদের শুনানি নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।
খন্দকার মাহবুব শুনানিতে বলেন, খালেদা জিয়ার সম্মানহানী করতেই পেট্রোল বোমা মেরে মানুষ হত্যা করা হয়েছে। বিরোধীদলের ওপর দোষ চাপিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত ও শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে নস্যাৎ করতে সরকারের এজেন্টরা পেট্রোল বোমা মেরে নাশকতা করেছে। তার দায়-দায়িত্ব বেগম খালেদা জিয়ার না।
এ মামলার এফআইআরএ ৫৬ জনের নাম ছিল, সেখানে খালেদা জিয়ার নাম ছিল না। পরে দ্বিতীয়বার অভিযোগপত্রে তার নাম ঢুকানো হয়েছে। আর যদি ধরেও নেয়া হয়, তিনি নির্দেশদাতা; তবে যাদের তিনি নির্দেশ দিলেন তাদের সবাই তো জামিনে আছেন। খন্দকার মাহবুব বলেন, অ্যাটর্নি জেনারেল অভিযোগপত্র, ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন, ছবি দেখালেন। আমরা কি মামলা বাতিল চাইতে এসেছি? এসেছি জামিনের জন্য। ৭০ বছর বয়সী অসুস্থ একজন নারী। যিনি জীবন ঝুঁকিতে রয়েছেন। ফলে হাইকোর্টের দেয়া জামিন বহাল রাখার জন্য প্রার্থনা করছি। উভয় পক্ষের শুনানি শেষ হলে প্রধান বিচারপতি বলেন, এ আবেদনটির আদেশ আগামী ২ জুলাই।
আর ১০ নম্বর আইটেম (বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলা) আগামীকাল শুনব।
খালেদা জিয়ার আপিল শুনানির দিন ধার্য আজ:
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় দন্ডপ্রাপ্ত খালেদা জিয়ার সাজার বিরুদ্ধে আপিল শুনানির দিন ধার্য বিষয়ে আজ আদেন দিবেন হাইকোর্ট। রোববার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
আদালতে দুদকের আইনজীবী খুরশিদ আলম খান বলেন, অরফানেজ মামলায় খালেদা জিয়ার আপিলসহ পৃথক তিনটি আপিল শুনানির দিন ধার্য করার জন্য আবেদন করছি। আপিল বিভাগের নির্দেশনা আছে ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে আপিল নিষ্পত্তি করার। তখন আদালত বলেন, আপিল বিভাগের নির্দেশনা অনুযায়ী শুধু খালেদা জিয়ার আপিলটি শুনতে পারব। কিন্তু দুদকের মামলার শুনানির এখতিয়ার না থাকায় বাকী আসামির আপিল শুনতে পারব না। এরপর আদালত বলেন, খালেদা জিয়ার আপিল শুনানির দিন ধার্যের জন্য আগামীকাল আদেশের জন্য থাকবে। #######



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: খালেদা জিয়া

২২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ