Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

দাতা দেশগুলোতেও বাল্যবিবাহের বিধান আছে -সর্বস্তরের ইসলাম প্রিয় জনতা

সুন্নাহর বিরোধিতা করতেই এনজিও মাঠে সক্রিয়

রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২২ জুন, ২০১৮, ৬:০৫ পিএম

হযরত রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সুন্নাহর বিরোধিতা করতেই বিদেশী অনুদানে লালিত পালিত এনজিওগুলো বাংলাদেশে বাল্যবিবাহের বিরোধিতা করে যাচ্ছে। অথচ তারা যেসব দেশের অনুদান দিয়ে এনজিও পরিচালনা করছে সেসব দেশেই অনুমতিক্রমে ১৫ বছরের মেয়েদেরও বাল্যবিবাহ হচ্ছে। পবিত্র কুরআনে বাল্যবিবাহের নিষেধাজ্ঞা নেই। গতকাল চট্টগ্রামে নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ‘সর্বস্তরের ইসলামপ্রিয় জনতা’ নামক সংগঠনের সভাপতি মাওলানা হাফেজ শেখ জুনায়েদুর রহমান একথা বলেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের নেতা মামুনসহ অন্য নেতাকর্মীরা।
তিনি বলেন, অস্ট্রিয়ায় মেয়েদের বিয়ের সর্বনিম্ন বয়স ১৮, কিন্তু কোর্টের অনুমতিতে ১৬ বছর বয়সেও বিয়ের নিয়ম আছে। বেলজিয়ামে আদালতের অনুমতিতে ১৮ বছর বয়সের কমে বিয়ের নিয়ম আছে। বুলগেরিয়ায় আদালতের অনুমতিতে ১৬ বছর বয়সে বিয়ে হতে পারে। ডেনমার্কে রাজার অনুমতিতে ১৫ বছর বয়সেও বিয়ে হতে পারে। ফ্রান্সে পিতা-মাতা ও আদালতের সম্মতিতে ১৮ বছরের নিচে বিয়ে হতে পারে। জার্মানিতে আদালত ও পিতা-মাতার ইচ্ছায় ১৬ বছর বয়সে বিয়ে হতে পারে। ইটালিতে আদালতের অনুমতিতে ১৬ বছর বয়সে বিয়ে হতে পারে। অনুরূপভাবে নেদারল্যান্ড, নরওয়ে, পোল্যান্ড, রাশিয়া এবং ইংল্যান্ডে মেয়েরা ১৬ বছর বয়সে বিয়ে করতে পারে। কানাডায় কোর্টের অনুমতিতে ১৫ বছর বয়সে মেয়েরা বিয়ে করতে পারে। অস্ট্রেলিয়ায় ১৬ বছর বয়সে বিয়ে করতে পারে। আমেরিকায় বহু স্টেটে মেয়েরা কোর্টের অনুমতি নিয়ে বাল্যবয়সে বিয়ে করতে পারে।
কিন্তু বাংলাদেশে ১৮ বছরের নিচের মেয়েদের বাল্যাবিবাহ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। যে কারণে বাংলাদেশে প্রচুর অবৈধ গর্ভপাত হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান গুতম্যাকার ইনস্টিটিউট বাংলাদেশে এ বিষয়ে জরিপ করেছে। অ্যাসোসিয়েশন ফর প্রিভেনশন অব সেপটিক অ্যাবরশন বাংলাদেশ (বাপসা)। গুতম্যাকার ইনস্টিটিউটের জরিপে বলা হয়েছে, ২০১৪ সালে বাংলাদেশে ১১ লাখ ৯৪ হাজার অবৈধ গর্ভপাত হয়েছে। এ হিসাবে গড়ে দিনে ৩ হাজার ২৭১টি গর্ভপাত করা হয়েছে। স্বাস্থ্য বিষয়ক আন্তর্জাতিক গবেষণা সংস্থা গাটমেচারের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে প্রতিবছর প্রায় ৬ লাখের বেশি অবৈধ গর্ভপাতের ঘটনা ঘটে।
বক্তারা বলেন, যমুনা টিভি’র এক গবেষণা প্রতিবেদনে এসেছে, বছরে বাংলাদেশে প্রায় ৫ লাখ ভ্রুণ শিশু হত্যা করা হচ্ছে। এর অধিকাংশই হচ্ছে ১৮ বছরের নিচের কুমারী মাতাদের অবৈধ ফসল। এনজিও, নারীবাদী সংগঠনসমূহ এবং বাংলাদেশ সরকার অবৈধ কুমারী মাতা হওয়াকে সমর্থন করছে এবং সুন্নাহ অনুযায়ী বাল্যবিবাহের বিরুদ্ধে অপতৎপরতা চালাচ্ছে। কিন্তু ১৮ বছরের নিচের ছেলেমেয়েদের দ্বারা অবৈধ গর্ভপাত ও ভ্রæণ হত্যার বিরুদ্ধে কোন টু শব্দ করছে না।
বক্তারা বলেন, মেয়েরা বয়ঃপ্রাপ্ত হওয়ার পর বিবাহ অস্বাস্থ্যকর নয় একথা বৈজ্ঞানিকভাবে সমর্থিত। গবেষণা মতে, ১৯ এর নিচে মা হতে যদি সিজারিয়ান অপরেশন লাগে ৫%, আর ২৬-এ মা হলে সিজারিয়ান হার বেড়ে দাঁড়ায় ২৫% -এ। এছাড়া লন্ডন থেকে প্রকাশিত গার্ডিয়ানের রিপোর্ট অনুযায়ী, অতি সম্প্রতি বিজ্ঞানিরা আবিষ্কার করেছে, সময় যত যাচ্ছে, ছেলে ও মেয়েরা তত তাড়াতাড়ি বয়ঃপ্রাপ্ত হচ্ছে। বর্তমানে বাংলাদেশে এই বয়স ৯ এর ঘরে নেমে এসেছে। সুতরাং দেখা যাচ্ছে, বাল্যবিবাহের ফলে মায়ের স্বাস্থ্যগত ঝুঁকির প্রচারণাও মূলত পবিত্র দ্বীন ইসলাম বিদ্বেষী এনজিও, নারীবাদীদের মিথ্যা প্রোপাগান্ডা।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, দেশে ১৮ বছরের নীচে ছেলে-মেয়ের অবৈধ সম্পর্ক করার বিরুদ্ধে আইন নেই; কিন্তু বাল্যবিবাহের বিরুদ্ধে আইন করা হয়েছে। এতে সামাজিক অস্থিরতা ও অবক্ষয় আরো বাড়ছে। তাই অবিলম্বে বাল্যবিবাহ নিরোধ নামক সুন্নাহ বিরোধী আইন প্রত্যাহার করতে হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ