পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ইনকিলাবে সংবাদ প্রকাশের জের : অপরাধীদের গ্রেফতারে আশ্বাস
এসকেএম নূর হোসেন, পটিয়া থেকে : দৈনিক ইনকিলাবে গতকাল (সোমবার) প্রথম পাতায় প্রকাশিত ‘প্রতিবন্ধী কিশোরী বিচার চাইবে কার কাছে?’ শীর্ষক সংবাদ এবং ওই বিষয়ে সম্পাদকীয় প্রকাশের জের ধরে অবশেষে সেই হতভাগী প্রতিবন্ধী কিশোরীর নবজাতক শিশুসহ তাকে সরকারি সমাজসেবা বিভাগের বেবি হোমে (ছোটমণি নিবাস) পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এ সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর এনজিও সংস্থা হিউম্যান ইমপ্রোভ ইন্টারন্যাশনাল এজেন্সী (হেনা) বিষয়টি আমলে নেয়। সংস্থাটির পক্ষ থেকে বেবি হোমে উক্ত নবজাতকসহ তার মাকে আশ্রয় দেওয়ার জন্য সমাজসেবা অধিদপ্তরে সুপারিশ করা হয়। এর প্রেক্ষিতে সমাজসেবা অধিদপ্তর চট্টগ্রাম উপ-পরিচালক বন্দনা দাশ গতকাল চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তাদের দু’জন কর্মকর্তা-কর্মচারী নবজাতক শিশু ও তার মাকে দেখার জন্য যান। কয়েকদিনের মধ্যে প্রয়োজনীয় আনুষ্ঠানিকতা শেষে তাদের চট্টগ্রাম নগরীর রৌফাবাদস্থ বেবি হোমে প্রেরণ করা হবে বলে সমাজসেবা কর্মকর্তা জানান।
তাছাড়া ইনকিলাবে সংবাদ প্রকাশের পরই নবজাতক ও প্রসূতি মায়ের উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাদের ৩৩নং ওয়ার্ড থেকে স্থানান্তর করে গাইনি ৩১নং ওয়ার্ডে নিয়েছে বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে।
গতকাল দৈনিক ইনকিলাবে প্রতিবন্ধী কিশোরীকে নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর সংবাদটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উচ্চপর্যায়ে দৃষ্টিগোচর ও গুরুত্বের সাথে আলোচিত হয়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে চিহ্নিত ধর্ষক অপরাধীদের যতশীঘ্র সম্ভব গ্রেফতারের জন্য পটিয়া থানা পুলিশের কাছে একটি নির্দেশনা পৌঁছেছে বলে জানা গেছে।
পটিয়া থানার ওসি রেফায়েত উল্লাহ চৌধুরী এ প্রতিবেদককে জানান, আসামীদের গ্রেফতারে জোর প্রচেষ্টা চলছে এবং বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে, অবিলম্বে তারা ধরা পড়বে। ইনকিলাবের সংবাদটি অনলাইনে দেখে অনেক পাঠক হৃদয়গ্রাহী মন্তব্য, অভিমতসহ অর্ধসহস্রাধিক লাইক দিয়েছে। ইনকিলাব পত্রিকা দক্ষিণ চট্টগ্রামের পটিয়া শহরে পৌঁছার পরপরই পত্রিকা নিয়ে পাঠকদের মধ্যে কাড়াকাড়ি শুরু হয়ে যায়। অনেক স্থানে পাঠক পত্রিকা না পাওয়ায় হকারদের ফটোকপি করে প্রতি কপি ৫ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত দামে বিক্রি করতে দেখা যায়। প্রতিবন্ধী কিশোরীর মা মঞ্জু রানী দে-কে তার এক আত্মীয় ইনকিলাব পত্রিকা এনে দেখান এবং পড়ে শোনান। সেখানে নিজের নবজাতক নাতনীর ছবি দেখে আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন মঞ্জু রানী ইনকিলাবে সংবাদ প্রকাশের কারণে কিশোরী ও তার নবজাতক নিয়ে সরকারি বেবি হোমে আশ্রয় পাওয়ার সিদ্ধান্তে ইনকিলাবের প্রতি তিনি অশেষ কৃতজ্ঞ ও ঋণী বলে জানান।
গতকাল ইনকিলাবের সংবাদ ও সম্পাদকীয় পটিয়া ছাড়াও সমগ্র চট্টগ্রাম অঞ্চলের পাঠক সমাজে বেশ তোলপাড় সৃষ্টি করে। সুচক্রদন্ডী এলাকার লোকজনকে দোকানে বসে ওই সংবাদের ফটোকপি পড়তে দেখা গেছে। এ ঘটনায় লোকজন অপরাধীদের নিন্দা ও ধিক্কার দিচ্ছে এবং যারা অপরাধীদের পক্ষ নিয়েছে তাদের গ্রেফতারসহ বিচারে যারা বাধা দিচ্ছে তাদেরকেও আইনের আওতায় আনার জন্য প্রশাসনের কাছে দাবি জানান। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ প্রভাবশালী মহলের কয়েকজন বারবার প্রতিবন্ধী পরিবারকে হুমকি দেয়ায় তারা এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। সংশ্লিষ্ট জনপ্রতিনিধিসহ প্রভাবশালীদের বিচারের আওতায় আনতে এলাকার লোকজন দাবি জানিয়েছেন। হিন্দু অধ্যুষিত সুচক্রদন্ডী এলাকার খলনায়ক চরিত্রের একটি মহল প্রতিবন্ধী ধর্ষিতা কিশোরীর বিচার চাওয়ায় প্রভাবশালী মহলের চাপে সমাজপতিরা প্রতিবন্ধী পরিবারকে সমাজচ্যুত করে। যার কারণে পাড়ার নিমন্ত্রণ, উৎসব-পার্বণে প্রতিবন্ধী পরিবার আমন্ত্রণ পায় না। এতে দু’মুঠো উৎস খাবার খেতে পারে না প্রতিবন্ধী পরিবারের সদস্যরা। সবাই খায় কিন্তু প্রতিবন্ধী পরিবারের সদস্যরা ঘরে বসে থাকে। এ ধরনের ন্যাক্কারজনক ঘটনায় সচেতন লোকজন সমাজপতিদের ধিক্কারসহ বিচারের দাবি করেছেন।
পটিয়া সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার শামীম হোসেন জানান, ধর্ষকদের গ্রেফতারে তিনি থানা পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবুল হাশেম বলেন, আসামীরা যাতে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড়ায় তিনি সে ব্যাপারে উপযুক্ত ভূমিকা রাখবেন এবং প্রতিবন্ধী পরিবার যা সহযোগিতা চাইবে তিনি এতে ব্যবস্থা নিবেন। উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা ওয়াহিদুল আলম জানান, প্রতিবন্ধী উক্ত কিশোরীসহ তার নবজাতককে বেবি হোমে পাঠাতে যে ধরনের সহযোগিতা প্রয়োজন সে সহযোগিতা তিনি করবেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।