পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : ঈদের দিন কারাগারে বন্দি বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে দেখেই স্বজনরা আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। স্বাস্থ্যের ভগ্নদশা দেখে স্বজনদের সবাই কান্নায় ভেঙে পড়েন। এ সময় আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। খালেদা জিয়া তাদেরকে আল্লাহর ওপর ভরসা রেখে ধৈর্য ধরতে বলেন।
ঈদের দিন জোহরের নামাজের পর কারাগারে খালেদা জিয়ার সাথে দেখা করতে যাওয়া এক স্বজন ইনকিলাবকে এসব কথা বলেছেন। তিনি জানান, ছোট ভাইসহ তাদের সন্তানরা খালেদা জিয়াকে পায়ে হাত দিয়ে সালাম করেন। তিনি স্বজনদের নাম ধরে সবার খোঁজ-খবর নেন। বিশেষ করে শিশু-বাচ্চারা কেমন আছে জানতে চান। খালেদা জিয়া পরিবারের সদস্যদের মাধ্যমে দেশবাসী ও দলের সিনিয়র নেতাসহ সর্বস্তরের নেতা-কর্মীদের ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়ে দোয়া চেয়েছেন।
খালেদা জিয়ার পরিবারের ২০ জন সদস্য কারাগারে তাঁর সঙ্গে সাক্ষাত করতে যান। স্বজনদের মধ্যে ছিলেন খালেদা জিয়ার ভাই সাঈদ এস্কান্দরের স্ত্রী নাসরিন এস্কান্দার ও তার ছেলে শামস এস্কান্দার, শাফিন এস্কান্দার, ছোট ভাই শামীম এস্কান্দার, তার স্ত্রী কানিজ ফাতেমা, ছেলে অভিক এস্কান্দার, এরিক এস্কান্দার, ভাগ্নি অরনি এস্কান্দার, অনন্যা এস্কান্দার, শাফিয়া ইসলাম, ভাগিনা সাইফুল ইসলাম ডিউক, মো. মেহরাব ও মো. আল মামুন, বড় ছেলে তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমানের বড় বোন শাহিনা খান জামান বিন্দু, তার স্বামী শফিউজ্জামান। দলের চেয়ারপার্সনের একান্ত সচিব এবিএম আবদুস সাত্তার, গুলশানের বাসভবন ‘ফিরোজা’র গৃহকর্মী ও গাড়ি চালক। খালেদা জিয়া কারাগারে আসা স্বজনদের সাথে বসে বাসার রান্না করা খাাবারও খেয়েছেন। তারা সবাই প্রায় আড়াই ঘণ্টা খালেদা জিয়ার সাথে কারাগারে অবস্থান করার পর বিকেল ৪টা ৪০ মিনিটে কারাফটক দিয়ে বেরিয়ে আসেন।
পরিবারের সদস্যরা জানান, খালেদা জিয়া ঈদের দিনে যেসব খাবার পছন্দ করেন, সেগুলো তারা রান্না করে এনেছেন। ওইসব খাবার ভেতরে নিয়ে কারা কর্তৃপক্ষ পরীক্ষা করে। তারা জানান, বেগুনি সাদা অর্কিডের একটি ফুলের তোড়া দিয়ে খালেদা জিয়াকে ঈদের শুভেচ্ছা জানান স্বজনরা।
খালেদা জিয়া বোন, ভাবী ও স্বজনদের বুকে জড়িয়ে নিয়ে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। এক সাথে অনেক স্বজনকে পেয়ে তিনি আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। স্বজনদের একজন ইনকিলাবকে বলেন, তারা খালেদা জিয়ার জন্য তার পছন্দের মিষ্টি এবং সেমাই রান্না করে নিয়ে যান। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে মিলে মিষ্টি-সেমাই খেয়েছেন। তবে শারীরিক অসুস্থতার কারণে ভালো করে খেতে পারেননি। তিনি বলেন, কারাগারের ভেতরে প্রবেশের পর স্বজনদের দেখে খালেদা জিয়া আবেগ ধরে রাখতে পারেননি। তাঁর স্বাস্থ্যের ভগ্নদশা দেখে সবাই কান্নায় ভেঙে পড়েন।
খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা খুবই খারাপ অভিযোগ করে স্বজনরা বলেন, তাঁর শারীরিক অবস্থা ভালো নয়। তিনি কারও সাহায্য ছাড়া দাঁড়াতে পারেন না। নিজের কক্ষ থেকে অসুস্থ শরীর নিয়ে আত্মীয়-স্বজনদের সাথে সাক্ষাতের জন্য আসেন। তাকে দুই পাশ দিয়ে দুই জন ধরে নিয়ে আসেন সাক্ষাতের নির্ধারিত কক্ষে। তাঁর মনটাও ভালো ছিলো না। ঈদের দিন তিনি নতুন শাড়ি পরেননি। স্বজনরা যে যার মতো খালেদা জিয়ার পছন্দের খাবার রান্না করে নিয়েছিলেন। সেই খাবার সবাই একত্রে খেয়েছেন। তবে খালেদা জিয়া খেয়েছেন সামান্য।
নতুন শাড়ি না পরার কারণ জানতে চাইলে ওই স্বজন বলেন, ‘নির্যাতন এবং কারাবন্দী অবস্থায় নতুন শাড়ি পরে আনন্দ করার মনোভাব থাকে না।’ তিনি আরও বলেন, নিকটাত্মীয়দের দেখে একপর্যায়ে খালেদা জিয়ার মন কিছুটা ভালো হয়। পরিবারের সদস্যরা জানান, দলের সিনিয়র নেতারা দুপুরে কারাফটকে গিয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা করার অনুমতি না পাওয়ার বিষয়টি খালেদা জিয়া শুনেছেন। এ জন্য হতাশা প্রকাশ করেন।
খালেদা জিয়া পরিবারের সদস্যদের মাধ্যমে দেশবাসী, দলের জ্যেষ্ঠ নেতাসহ সর্বস্তরের নেতা-কর্মীদের ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়ে দোয়া চেয়েছেন। এদিকে ঈদের দিন সকাল ১০টা থেকে পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারের বাইরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। বিএনপির নেতা-কর্মীরা কারাগারের সামনে আসবে- এমন কর্মসূচির পরিপ্রেক্ষিতে নিরাপত্তা জোরদারের অংশ হিসেবে এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে পুলিশ কর্মকর্তারা জানান।
প্রসঙ্গত গত ৮ ফেব্রæয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় ৫ বছরের সাজার পর বিএনপি চেয়ারপারসন নাজিমউদ্দিন রোডের পুরনো কারগারে বন্দি রয়েছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।