পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
রফিকুল ইসলাম সেলিম : অসহনীয় লোডশেডিংয়ের কবলে পড়েছে দেশের বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রাম। রাতে-দিনে দফায় দফায় বিদ্যুৎ চলে যাচ্ছে। চৈত্রের তীব্র তাপদাহের সাথে বিদ্যুতের আসা-যাওয়ায় নগরজীবন বিপর্যস্ত। বিদ্যুতের অভাবে শিল্পোৎপাদন বিঘিœত হচ্ছে। ব্যাহত হচ্ছে ব্যবসা-বাণিজ্য, আমদানি-রফতানি কার্যক্রম।
গ্যাসের অভাবে দুটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ রয়েছে। গ্যাসনির্ভর আরও দু’টি বিদ্যুৎ কেন্দ্রে গ্যাস সরবরাহ কমে যাওয়ায় উৎপাদনও কম হচ্ছে। কাপ্তাই হ্রদের পানি কমে যাওয়ায় একটি ইউনিট দিনের বেলায় বন্ধ রাখা হচ্ছে। আবার খরচ কমাতে দিনের বেলায় বন্ধ থাকছে প্রতিটি ১০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার তিনটি পিকিং পাওয়ার প্লান্ট। এ কারণে রাতের চেয়ে দিনের বেলায় বেশি লোডশেডিং করতে হচ্ছে। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর বিদ্যুৎ সংকট নিরসনকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়েছে। চট্টগ্রাম অঞ্চলে সরকারি-বেসরকারি খাতে গড়ে উঠেছে বেশ কয়েকটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র। নতুন পুরাতন মিলে এ অঞ্চলে এখন ১৩টি বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ১৮টি ইউনিট রয়েছে। এ খাতে হাজার হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ হলেও বিদ্যুৎ সংকটের কবল থেকে মুক্তি মিলছে না।
সরকারিভাবে বলা হচ্ছে দেশে কোন লোডশেডিং নেই। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন। গত কয়েকদিন ধরে তীব্র লোডশেডিংয়ের কবলে বন্দরনগরীসহ বৃহত্তর চট্টগ্রাম। পিডিবির হিসেবে লোডশেডিংয়ের পরিমাণ দিনের বেলা ১০০ মেগাওয়াট আর রাতে ৫০ মেগাওয়াট হলেও বাস্তবে লোডশেডিং আরও বেশি।
ভোর থেকেই লোডশেডিং দেয়া হচ্ছে। দিনভর দফায় দফায় বিদ্যুৎহীন থাকছে মহানগরীর বিভিন্ন এলাকা। সন্ধ্যায় পিকআওয়ারেও মুক্তি মিলছে না লোডশেডিংয়ের যন্ত্রণা থেকে। আগ্রাবাদ এলাকার বাসিন্দা মোঃ আবদুল হালিম বলেন, গত কয়েকদিন ধরে ভোরবেলায় লোডশেডিং দেয়া হচ্ছে। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত অন্তত তিন দফা তিন ঘণ্টা লোডশেডিং করা হচ্ছে।
বিদ্যুৎ না থাকায় আগ্রাবাদ বাণিজ্যিক এলাকার অফিস-আদালত, ব্যাংক-বীমায় স্বাভাবিক কার্যক্রম মারাত্মক বিঘিœত হচ্ছে। ব্যাংক-বীমাসহ বেশিরভাগ অফিস-আদালতের কার্যক্রম এখন ডিজিটাল। ঘণ্টায় ঘণ্টায় বিদ্যুৎ চলে যাওয়ায় ওই ডিজিটাল সিস্টেম বিকল হয়ে পড়ছে। এতে লোকজনকে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে।
একই অবস্থা মহানগরীর অন্যান্য বাণিজ্যিক এলাকাতেও। খাতুনগঞ্জ এলাকার ব্যবসায়ীরা জানান, সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত তিন থেকে চার দফায় লোডশেডিং হচ্ছে। এতে করে স্বাভাবিক ব্যবসা বাণিজ্য ও আমদানি রফতানি কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। বিদ্যুৎ চলে যাওয়ায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষার্থীরা চরম দুর্ভোগে পড়ছে। কলকারখানায় উৎপাদন বিঘিœত হচ্ছে। মহানগরীর শিল্পাঞ্চলগুলোতে লোডশেডিং চলছে। বিজিএমইএ’র একজন কর্মকর্তা জানান, গত এক সপ্তাহ ধরে লোডশেডিং অসহনীয় পর্যায়ে পৌঁছেছে। গরমের তীব্রতা বাড়ার আগেই এবার বিদ্যুৎ সংকট প্রকট আকার ধারণ করেছে। বিদ্যুৎ সংকটে শতভাগ রফতানিমুখী তৈরি পোশাক খাতে উৎপাদন ব্যয় বাড়ছে। উৎপাদন বিঘিœত হওয়ায় সময়মতো পণ্য শিপমেন্ট করা অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে।
দিনের বেলায় রাতের তুলনায় লোডশেডিং বেশি হওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেন পিডিবির কর্মকর্তারা। পিডিবি সূত্র জানায়, দিনের বেলা বেশ কয়েকটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ রাখতে হচ্ছে। এ কারণে বিদ্যুৎ ঘাটতি বেশি হচ্ছে। কাপ্তাই হ্রদের পানির স্তর কমে যাওয়ায় কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ মহাপ্রকল্পের ৫টি ইউনিটের একটি দিনভর বন্ধ থাকছে। অন্যদিকে গ্যাসের অভাবে বন্ধ রাউজান তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ২১০ মেগাওয়াট ক্ষমতার একটি ইউনিট। অপর ইউনিটটি চালু থাকলেও গ্যাসের সরবরাহ কম হওয়ায় উৎপাদনও কম হচ্ছে। গ্যাস না থাকায় বন্ধ ৬০ মেগাওয়াট ক্ষমতার শিকলবাহা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র। একই এলাকার ১৫০ মেগাওয়াট ক্ষমতার পিকিং পাওয়ার প্ল্যান্টটি কোনমতে চালু আছে। অন্যদিকে খরচ কমাতে দোহাজারী, জুলধা ও হাটহাজারীর প্রতিটি ১০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার তিনটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র দিনের বেলায় বন্ধ থাকছে। ছোটখাটো কয়েকটি বেসরকারি বিদ্যুৎ কেন্দ্র দিনের বেলায় তাদের নিজস্ব কলকারখানায় বিদ্যুৎ সরবরাহ দিচ্ছে। এসব কারণেই দিনে বিদ্যুৎ উৎপাদন কম হচ্ছে। লোডশেডিংও বেশি করতে হচ্ছে। পিডিবির হিসেবে দিনের বেলায় গড়ে ১০০-১২০ মেগাওয়াট লোডশেডিং দেয়া হচ্ছে। পিকআওয়ারে লোডশেডিংয়ের পরিমাণ ৫০ মেগাওয়াট ছাড়িয়ে যাচ্ছে। পিডিবির হিসেবে রোববার চট্টগ্রাম অঞ্চলে ৮৫৭ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়। চট্টগ্রাম অঞ্চলের চাহিদা ছিল ৮২০ মেগাওয়াট। ওইদিন সরবরাহ দেয়া হয়েছে ৭৯৫ মেগাওয়াট। লোডশেডিং করা হয়েছে ৩৪ মেগাওয়াট।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।