পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
রাঙ্গামাটি জেলা সংবাদদাতা : বান্দরবানের ঐতিহ্যবাহী স্বর্ণমন্দিরের পর এবার রাঙ্গামাটি রাজবন বিহারে অনির্দিষ্টকালের জন্য পর্যটকদের ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। এ বিষয়ে রাঙ্গামাটি রাজবন বিহারে একটি নোটিশ টাঙানো হয়েছে। গত ২০ ফেব্রুয়ারি বান্দরবানের স্বর্ণমন্দিরে পর্যটক ভ্রমণের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়েছিল।
নোটিশে উল্লেখ করা হয়, রাজবন বিহার বাংলাদেশের একটি সুপরিচিত বৌদ্ধধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, যেখানে পূজা-পার্বণাদি ও ধর্মীয় নীতিমালা প্রতিপালনের সঙ্গে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখা হয়। এ পুণ্যতীর্থে প্রতিদিন দেশ-বিদেশের বিভিন্ন জাতের বৌদ্ধ পুণ্যার্থীর আগমন ঘটে। কিন্তু দুঃখের সঙ্গে বলতে হচ্ছে, ইদানীং পুণ্যার্থী ছাড়াও প্রচুর পর্যটক দর্শনার্থীদের আগমনের ফলে তাদের পক্ষে যেসব নীতিমালা, আচরণ করা সম্ভব হচ্ছে না।
অন্যদিকে পর্যটন কেন্দ্র সদৃশ তুলনা করে তাদের নিজস্ব নানারকম আপত্তিকর ভঙ্গিমায় ছবি তোলা, ভিডিও করা, ঘোরাঘুরি, চিৎকার, উচ্চ শব্দ-মহাশব্দ, হৈচৈ করার মাধ্যমে বিহারের স্থিতিশীল ও শান্ত পরিবেশকে নষ্ট করা হচ্ছে।
যার পরিপ্রেক্ষিতে পর্যটন ভ্রমণকারীদের কাছে আন্তরিকভাবে দুঃখিত যে, পূজারি, পুণ্যার্থী, ধর্মীয় উপাসক-উপাসিকা ও বিহারের কাজে নিয়োজিত কর্মচারী ব্যতিত দর্শনার্থী, পর্যটক বহনকারীদের রাজবন বিহারে আগমন ও ভ্রমণ করা অনির্দিষ্টকালের জন্য সম্পূর্ণ বন্ধ রাখা হয়েছে।
রাঙ্গামাটি রাজবন বিহারের উপাসক-উপাসিকার পরিষদের সহ-সভাপতি গৌতম দেওয়ান বলেন, এটা সাময়িক নিষেধাজ্ঞা। রাজবন বিহারের প্রতিদিন প্রচুর পর্যটকের আনাগোনার কারণে ভান্তেদের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যহত হচ্ছে। তাই সাময়িকভাবে ভিক্ষুসংঘের পক্ষ থেকে রাজবন বিহারে দর্শনার্থীদের ভ্রমণে সাময়িকভাবে নিষেধ আরোপ করা হয়েছে।
এদিকে রাজবন বিহারে পর্যটকদের নিষেধাজ্ঞার কারণে রাঙ্গামাটির পর্যটন শিল্প হুমকির মুখে পড়বে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। ব্যবসায়ীরা নির্দিষ্ট একটি এরিয়া পর্যটকদের জন্য নির্ধারণ করে দেওয়ার জন্য বিহার কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানান।
দূরদূরান্ত থেকে রাঙ্গামাটিতে বেড়াতে আসা পর্যটকরা রাজবন পরিদর্শনে গেলে বিহারে প্রবেশ করার আগে নোটিশ দেখে হতাশ হয়ে ফিরে আসেন। তারা বলেন, রাঙ্গামাটির প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের পাশাপাশি রাজবন বিহারের নির্মাণ শৈলি ও এর প্রকৃতিগত সৌন্দর্যের জন্য দেশ-বিদেশে খুবই পরিচিত। কিন্তু হঠাৎ করে দর্শনার্থীদের জন্য নিষেধাজ্ঞা আরোপ করায় আমরা হতাশ। কর্তৃপক্ষ একটি নির্দিষ্ট সময় কিংবা একটি নির্দিষ্ট এরিয়া নির্ধারণ করে দিলে দর্শনার্থীরা এর সৌন্দর্য অবলোকন করতে পারতেন।
রাঙ্গামাটি হোটেল ব্যবসায়ীর সমিতির যুগ্ম-সম্পাদক নেছার আহম্মেদ বলেন, এটা আমাদের জন্য খুবই হতাশার বিষয়। আমি রাজবন কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানাবো, নির্দিষ্ট একটি সময় বেধে দিলে দর্শনার্থীরা ভ্রমণ করতে পারবে এবং তাদের ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠানেও কোন সমস্যা হবে না।
রাজবন বিহারের ভিক্ষুসংঘের মহামিত্র ভান্তে বলেন, নিষেধাজ্ঞা অনির্দিষ্টকালের জন্য করা হলেও এটি সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে বিভিন্ন অনুষ্ঠানাদিতে সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে। এছাড়া ভবিষ্যতে আমরা পরিস্থিতি বিবেচনা করে রেজিস্ট্রি খাতায় অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে দর্শনার্থীদের প্রবেশাধিকার দেওয়ার চিন্তা ভাবনা আছে। যেহেতু এটি কোনো পর্যটন কেন্দ্র নয়, ধর্মীয় তীর্থ ভূমি। তাই ধর্মীয় পরিবেশ বজায় রেখে কাজ করা হবে।
রাঙ্গামাটি রাজবন বিহার ১৯৭৪ সালে প্রতিষ্ঠার পর এর নির্মাণশৈলি ও বনভন্তের বিহার হিসেবে দর্শনার্থীদের অন্যতম একটি প্রিয় স্থান। প্রতিদিন এ স্থানে প্রচুর পর্যটক পরিদর্শনে আসেন। এছাড়া প্রতিবছর কঠিন চীবর দানোৎসবে দেশ, বিদেশ থেকে কয়েক লাখ পুণ্যার্থীর সমাগম ঘটে। যদি অনিদিষ্টকালের জন্য নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয় তা হলে এই ধর্মীয় তীর্থ স্থানটি দেশ বিদেশের দর্শনার্থীরা আর দেখতে আসবেনা বলে মনে করছেন অভিজ্ঞমহল।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।