পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
চট্টগ্রাম ব্যুরো ঃ পহেলা বৈশাখ বাংলা নববর্ষ বরণের নামে বিভিন্ন জীবজন্তুর মূর্তি নিয়ে মঙ্গল শোভাযাত্রা, মুখে উল্কি আঁকা এবং নারী-পুরুষের অবাধ বিচরণসহ সকল অনৈসলামিকতা ও বিজাতীয় সংস্কৃতি থেকে দূরে থাকার জন্য মুসলিম জনসাধারণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ঈমান-আক্বীদাভিত্তিক অরাজনৈতিক সংগঠন হেফাজতে ইসলাম। সংগঠনটির কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ গতকাল (সোমবার) এক বিবৃতিতে এ আহ্বান জানান।
এতে বলা হয়, বর্ষবরণের নামে মূলতঃ মুসলমনাদের ঈমান-আক্বীদাবিরোধী ভিনদেশী হিন্দুত্ববাদী সাংস্কৃতির প্রসার ঘটানোর চেষ্টা চলছে। নতুন বছরের প্রথম দিন বাঘ-ভাল্লুক, সাপ, বিচ্ছু, কুমির ও বিভিন্ন দেব-দেবীর বড় বড় মূর্তি, ছবি ও মুখোশ নিয়ে মঙ্গল শোভাযাত্রার নামে যে র্যালি বের করা হয়, এখানে কার কাছে নতুন বছরের মঙ্গল ও কল্যাণ কামনা করা হচ্ছে? ইসলামের বিশ্বাস মতে কোন জীবজন্তু, বন্যপ্রাণী ও দেবদেবীর মূর্তির কাছে কল্যাণ ও মঙ্গল কামনা করলে ঈমান থাকবে না। তারা বলেন, মুসলমানদের বিশ্বাস মতে ভাল-মন্দ, মঙ্গল-অমঙ্গল সবকিছুই আল্লাহর হুকুমেই সংঘটিত হয়ে থাকে। মুসলমানকে কল্যাণ ও মঙ্গল কামনা করতে হবে একমাত্র আল্লাহর কাছেই। সুতরাং মুসলমানদের জন্যে মঙ্গল শোভাযাত্রার সংস্কৃতিচর্চা অবশ্যই পরিতাজ্য।
বিবৃতিতে হেফাজত নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, বর্ষবরণের উৎসবের নামে নারী-পুরুষ পরস্পরের মুখে উল্কি আঁকা, জীবজন্তুর মুখোশ পরা, নারীরা লালপাড়ের সাদা শাড়ি পরিধান করে কপালে শাখা-সিঁদুর লাগিয়ে সম্মিলিত উলুধ্বনি দেয়া, এগুলোর সবই হিন্দু ধর্মীয় রীতি। হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ এসব পালন করতে পারে। কিন্তু মুসলমানদের জন্য এসব পালনের কোনই সুযোগ নেই। তাছাড়া পান্তা-ইলিশের নামে যে সংস্কৃতির চর্চা এখন চলে থাকে, তাও আমাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের কোন অংশ নয়, বরং এটা গ্রাম-বাংলার খেটে খাওয়া কোটি কোটি মানুষের দারিদ্র্যতার সাথে উপহাস ছাড়া আর কিছু নয়। জাতীয় সংস্কৃতি ও আনন্দ হতে হবে, যেটা সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের সামাজিক রীতি ও নীতি-আদর্শকে ফুটিয়ে তোলে এবং যে আনন্দে প্রায় সকলেই শরীক হতে পারে। হেফাজত নেতৃবৃন্দ প্রশ্ন রেখে বলেন, বাঘ-ভাল্লুক ও সাপ-বিচ্চুর মঙ্গল শোভাযাত্রা কার প্রতিনিধিত্ব করছে এবং পান্তা-ইলিশে দেশের কত ভাগ মানুষ শরীক হওয়ার সক্ষমতা রাখে?
বিবৃতিতে হেফাজত নেতৃবৃন্দ গত বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ আরো কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে পয়লা বৈশাখের নববর্ষ বরণ অনুষ্ঠানে নারী সমাজের উপর সংঘবদ্ধ যৌন-নির্যাতনের ঘটনার উল্লেখ করে বলেন, নারী-পুরুষের অবাধ চলাচলের বহুমুখী ক্ষতিকর দিক রয়েছে। শুধু গত বছর নয়, এর আগেও বহুবার বর্ষবরণের অনুষ্ঠানে নারী নির্যাতন ও নারীদের সম্ভ্রমহানীর মতো ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটেছে। তাই মা-বোনদের প্রতি আহ্বান জানাব, তারা যেন বর্ষবরণের নামে ইসলামবিরোধী বিজাতীয় এসব অনুষ্ঠানে শরীক হওয়া থেকে বিরত থাকেন।
বিবৃতিতে হেফাজত শীর্ষ নেতৃবৃন্দ ঈমান-আক্বীদাবিরোধী শিরকী এসব প্রথা বন্ধ করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। তারা বলেন, একদিকে ধর্মহীনতার চর্চা এবং অন্যদিকে ইসলাম ও আলেম সমাজের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার ও কটূক্তি সমান্তরালভাবে চলছে। জাতি হিসেবে মূলতঃ আমাদেরকে কোন দিকে ঠেলে দেয়া হচ্ছে, তা প্রত্যেকেরই গভীরভাবে ভাবা দরকার।
বিবৃতিদাতারা হলেনঃ হেফাজতে ইসলামের আমীর শায়খুল ইসলাম আল্লামা শাহ আহমদ শফী, নায়েবে আমীর আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী, মহাসচিব আল্লামা হাফেজ মুহাম্মদ জুনায়েদ বাবুনগরী, কেন্দ্রীয় নেতা মাওলানা নূর হোসাইন কাসেমী, মাওলানা তফাজ্জল হক হবিগঞ্জী, মাওলানা আব্দুল মালেক হালিম, মাওলানা হাফেজ শামসুল আলম, মাওলানা মুফতী মুজাফফর আহমদ, মাওলানা আব্দুল হামিদ পীর সাহেব মধুপুর, মাওলানা সাজেদুর রহমান, মাওলানা জাফরুল্লাহ খান, মাওলানা সালাহ উদ্দীন নানুপুরী, মাওলানা সলিমুল্লাহ, মাওলানা মুহাম্মদ আনাস মাদানী, মাওলানা মুনির আহমদ, মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী, মাওলানা মুঈনুদ্দীন রুহী প্রমুখ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।