পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : সরকার ও কারাকর্তৃপক্ষ বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে টালবাহনা করছে বলে অভিযোগ করেছেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার কারাগারে পড়ে যাওয়ার বিষয়ে কারা কর্তৃপক্ষ অবগত নয় বলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী যে বক্তব্য দিয়েছেন তার মাধ্যমেই পরিস্কার হয়ে যায় যে, সরকার তার (খালেদা জিয়া) চিকিৎসা ও অসুস্থতা নিয়ে অবহেলা ও টালবাহনা করছে। কারাবন্দি খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে অতিদ্রæত তাকে ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তির দাবি জানান বিএনপির এই নেতা। গতকাল (রোববার) দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। গত ৫ জুন কারাগারে হঠাৎ পড়ে যান খালেদা জিয়া। ৭৩ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসকরা শনিবার কারাগারে দেখে এসে তার ‘মাইল্ড স্ট্রোকের’ ধারণার কথা জানিয়ে ইউনাইটেড হাসপাতালে তাকে স্থানান্তরের সুপারিশ করেছেন।
রিজভী বলেন, কারা কর্তৃপক্ষ সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করছে বলেই বন্দী খালেদা জিয়ার গুরুতর শারীরিক অসুস্থতার বিষয়ে ভ্রæক্ষেপহীন থেকেছে। সেটিই প্রমাণিত হলো স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যের মধ্য দিয়ে। দেশনেত্রী কারাগারে অজ্ঞান হয়ে ৫-৭ মিনিট পড়েছিলেন, অথচ সেটি কারাকর্তৃপক্ষ জানে না, তার মানে এটাই প্রমাণিত হয় বেগম জিয়া কারাকর্তৃপক্ষের কতখানি অবহেলার শিকার।
খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে সরকার ও কারা কর্তৃপক্ষ উদাসীন বলে অভিযোগ করে রিজভী বলেন, দেশনেত্রীর স্বাস্থ্যের অবস্থা জেনে শুধু বিএনপিই নয়, দেশবাসীও গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। ঘটনা শোনার সাথে সাথে বেগম জিয়ার চিকিৎসার কোনো ব্যবস্থা না করে দেশনেত্রীর অসুস্থতাকে আরও গুরুতর করে তাকে রাজনৈতিক ময়দান থেকে সরিয়ে দেওয়ার সুগভীর চক্রান্ত কি না, তা নিয়ে মানুষের মনে নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। বেসরকারি ইউনাইটেড হাসপাতালে খালেদা জিয়াকে নেওয়ার দাবি জানিয়ে সরকারকে হুঁশিয়ার করে বলেন, বিশেষায়িত হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা না দিলে তার যদি বড় ধরনের কোনো ক্ষতি হয়, এর দায়-দায়িত্ব সরকারকেই বহন করতে হবে।
রিজভী অভিযোগ করে বলেন, খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ হওয়া সত্তে¡ও এখনও তাকে তার পছন্দ অনুযায়ী বিশেষায়িত হাসপাতালে ভর্তি না করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পিজি (বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়) হাসপাতালের কথা বলছেন। তার ব্যক্তিগত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা যেসব পরীক্ষা নিরীক্ষার সুপারিশ করেছেন সেগুলো পিজিতে সম্ভব নয়। আধুনিক যন্ত্রপাতির সকল ব্যবস্থা ইউনাটেড হাসপাতালে রয়েছে। অতীতেও আওয়ামী লীগের সভানেত্রীসহ অনেক নেতাকে কারাগারে বন্দী থাকা অবস্থায় প্রাইভেট হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। তাহলে খালেদা জিয়াকে তার পছন্দ মতো চিকিৎসা পেতে না দেওয়া একজন বন্দীর প্রতি চরম মানবধিকার লঙ্ঘন নয় কী?
বিএসএমএমইউতে খালেদা জিয়াকে নেয়ার বিরোধিতা করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, আমি কোথায় চিকিৎসা করব, সেটা আমার মৌলিক অধিকার, মানবিক অধিকার। তাকে (খালেদা জিয়া) ইচ্ছেমত হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে না দেয়া দেশনেত্রীর মৌলিক অধিকার হরণের নামান্তর। তিনি বলেন, আমরা সরকারকে দ্ব্যর্থহীন ভাষায় জানিয়ে দিতে চাই, দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রীর কারামুক্তি ও চিকিৎসা নিয়ে যে নির্মমতা প্রদর্শন করা হচ্ছে, তাতে ক্ষমতাসীনদের জন্য রাজনীতির ময়দান শান্ত, নিরাপদ ও সুখময় হয়ে উঠবে না। এসময় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা তৈমুর আলম খন্দকার, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, কেন্দ্রীয় নেতা অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ প্রমুখ।
সুগার ফল হয়েছিল : অ্যাটর্নি জেনারেল
অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেছেন, তিনি (খালেদা জিয়া) যে অজ্ঞান হয়ে গিয়েছিলেন, এটা ঠিক না। বা অজ্ঞান ছিলেন, এটাও ঠিক না। সুগার লেভেল পরে যাওয়ার পরে উনি দাঁড়ানো থেকে ঘুরে গিয়েছিলেন। সঙ্গে সঙ্গে তাকে চকলেট খাইয়ে ঠিক করা হয়েছিলো। এই বয়সে যার ডায়াবেটিক আছে তার সুগার লেভেল তো সারাদিনের পরে একটু এদিক ওদিক হতেই পারে।আদালতের সহানূভুতি পাওয়ার জন্যেই তারা (খালেদা জিয়ার চিকিৎসকরা) এমন করছেন বলে অভিযোগ করেন বলে মন্তব্য করেন তিনি। গতকাল রোববার খালেদা জিয়ার জামিন চেয়ে করা আবেদনের শুনানি শেষে নিজ কার্যালয়ে এ সব কথা বলেন তিনি।্ এর আগে জামিন শুনানিতে খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের বিষয়ে আদালতে বক্তব্য দেন তার আইনজীবীরা।
মাহবুবে আলম বলেন, আর এটা আমার কাছে বিশেষ রকম ব্যাপার মনে হয়, আজ একটি মামলার তারিখ, আর তার আগের দিন গতকাল তার চিকিৎসকরা কারাগারে গেলেন। তারা এসেই এমন একটা প্রেস কনফারেন্স করে ফেললেন যে, তিনি অজ্ঞান ছিলেন। তিনি যদি অজ্ঞান হতেন তাহলে নিশ্চয়ই আইজি প্রিজনের কাছে রিপোর্ট থাকতো, সিভিল সার্জন জানতো। এগুলো নিয়ে তারা একটি জনমত সৃষ্টির চেষ্টার করছেন। উনি অজ্ঞান হননি, উনার সুগার লেভেল কমে গিয়েছিলো। এই হলো আসল কথা।
মাইল্ড স্ট্রোক সম্পর্কে অ্যাটর্নি বলেন, এটাও ঠিক না। তিনি অসুস্থ্য হলে বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে এনে স্ক্যান করা হতো। তার চিকিৎসায় সরকার কতটা গুরুত্ব দিচ্ছে, কোন আসামির ব্যাপারে আপনারা দেখেছেন ব্যক্তিগত চিকিৎসকদের চলে যেতে দেয়া হয়? কিন্তু তারা যাতে কোন রকম সরকারকে দোষারোপ করতে না পারে এজন্যই সরকার বেশ কয়েকবার তার ব্যক্তিগত চিকিৎসকদের জেলে যেতে অনুমতি দিয়েছে। তিনি বলেন, দুঃখজনক ব্যাপার হলো, চিকিৎসকরাও যদি রাজনীতির সাথে যুক্ত হয়ে যান এবং এ ধরণের কথা বলেন যে, সাত/আট মিনিট অজ্ঞান ছিলেন, এটা দুঃখজনক। আজকে মামলার শুনানি অথচ ব্যক্তিগত চিকিৎসকরা গতকাল গেলো তার সঙ্গে দেখা করতে। ৫ জুন যদি তিনি অজ্ঞান হতেন তাহলে সেদিনই বিষয়টি মিডিয়াতে আসতো। কিন্তু তা আসেনি। আজ ১০ জুন। এ বিষয়টি নিয়ে পরিস্থিতি ঘোলাটে করার চেষ্টা হচ্ছে। একটা বিভ্রান্ত তথ্য দেয়া হচ্ছে।
অ্যাটর্নি আরো বলেন, আমাদের বিচার বিভাগ সম্পূর্ণ স্বাধীন। তারা তাদের নিজেদের বিবেক, বিচার, বিশ্লেষণ দ্বারা পরিচালিত হবেন। সুতরাং এ রকম কোন অভিযোগ করা অহেতুক যে, অ্যাটর্নি জেনারেলের সম্মতি ছাড়া কোন জামিন হবেনা। বহু মামলায় তারা জামিন নিয়েছেন এবং নিচ্ছেন।
বঙ্গবন্ধু মেডিকেলে যেতেচান না বেগম খালেদা জিয়া : আইজি প্রিজনস
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে যেতে চান না বলে জানিয়েছেন আইজি প্রিজনস ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ ইফতেখার উদ্দিন। গতকাল বিকালে আইজি প্রিজনস সাংবাদিকদের বলেন, বঙ্গবন্ধু মেডিকেলে নেয়ার কথা জানালে খালেদা জিয়া বলেন- আমি ওই হাসপাতালে যাব না। কেন যাব না, তার কোনো ব্যাখ্যা দিতেও বাধ্য নই। বিএনপির একাধিক সূত্রে জানা গেছে, বেগম খালেদা জিয়া বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আগ্রহী নন। তিনি বেসরকারি ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আগ্রহী। এর আগে শনিবার বিএনপি চেয়ারপারসনের ব্যক্তিগত চিকিৎসকরা দাবি করেন, কারাবন্দি খালেদা জিয়া ‘মাইল্ড স্ট্রোকে’ আক্রান্ত হয়েছেন। দ্রæত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা না গেলে তিনি বড় ধরনের স্ট্রোকে আক্রান্ত হতে পারেন। গতকাল রোববার সচিবালয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, খুব সম্ভবত গত পরশু খালেদা জিয়া রোজা রেখেছিলেন। বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে হেলে পড়ে যাচ্ছিলেন। তখন তার সঙ্গে থাকা গৃহপরিচারিকা ফাতেমা ধরে ফেলেন। তাৎক্ষণিকভাবে জেলের চিকিৎসকরা তাকে শারীরিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।