Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আন্দোলনে যাচ্ছে চট্টগ্রাম বিএনপি

রফিকুল ইসলাম সেলিম | প্রকাশের সময় : ৯ জুন, ২০১৮, ১২:০০ এএম

চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি আর নির্বাচনকালীন সরকারের দাবিতে আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছে চট্টগ্রাম বিএনপি। কেন্দ্রের নির্দেশনায় মহানগর ও জেলা নেতারা তৃণমূল থেকে প্রস্তুতি শুরু করেছেন। পবিত্র মাহে রমজানে ইফতার মাহফিলে চলছে নেতাকর্মীদের সুসংগঠিত করার কাজ। ঈদ শুভেচ্ছার আড়ালেও চলবে কর্মী-সমর্থক ও জনগণকে সংগঠিত করার প্রক্রিয়া। কেন্দ্র থেকে ডাক আসলে যাতে সবাই একযোগে রাজপথে নামতে পারেন যে প্রস্তুতি এগিয়ে চলেছে পুরোদমে। অনুরূপ প্রস্তুতি চলছে বিশ দলীয় জোটের শরিক দলগুলোতেও। গতকাল (শুক্রবার) মাঠের প্রধান বিরোধী দল বিএনপির কয়েকজন কেন্দ্রীয়, মহানগর ও জেলা নেতার সাথে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে। বিএনপির নেতারা বলছেন, ঈদের পর আন্দোলনের ডাক আসতে পারে। এবারের আন্দোলন হবে সর্বাত্মক, স্বতঃস্ফূর্ত এবং শান্তিপূর্ণ। আন্দোলনকে চূড়ান্ত লক্ষ্যে নিয়ে যেতে জনগণের সম্পৃক্ততাও বাড়ানো হবে।
দলের চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন থেকে কারাগারে বন্দি। এক মামলায় জামিন পাওয়ার পর অন্য মামলায় গ্রেফতার দেখানো হচ্ছে। আবার জামিন পাওয়ার সাথে সাথেই সরকারী তরফে আপিল করে ওই জামিন স্থগিত করার আবেদন করা হচ্ছে। বিএনপির নেতারা মনে করছেন আইনি লড়াইয়ে বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করার সম্ভাবনা একেবারেই ক্ষীণ। অন্যদিকে জাতীয় নির্বাচনও আসন্ন। নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক বিশেষ করে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে একটি নির্বাচনকালীন সরকারের দাবি করে আসছে দলটি। তবে সরকার তাদের সে দাবিকে পাত্তাই দিচ্ছে না। এ অবস্থায় বিএনপি মনে করছে দাবি আদায়ে রাজপথে আন্দোলনের কোন বিকল্প নেই।
অতীতের যেকোন গণতান্ত্রিক আন্দোলনের সূচনা আন্দোলন সংগ্রামের ঐতিহ্যের নগরী চট্টগ্রাম থেকেই। এবারও তার ব্যতিক্রম হবে না বলে মনে করেন বিএনপির নেতারা। বিগত ৫ জানুয়ারি এক তরফা নির্বাচন প্রতিহত করার আন্দোলনের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগাতে চান নেতারা।
তবে এবারের আন্দোলনে ভিন্ন কৌশল নেওয়া হবে। বিএনপি নেতাদের প্রত্যাশা এবারের আন্দোলনে সর্বস্তরের মানুষ শরিক হবে, পেশাজীবীরাও মাঠে নামবে। এই আন্দোলন হবে অহিংস এবং স্বতঃস্ফূর্ত গণআন্দোলন। গণতন্ত্র রক্ষার এই চূড়ান্ত আন্দোলনে দেশের প্রতিটি গণতন্ত্রমনা দল ও সংগঠন এবং নানা শ্রেণি পেশার মানুষ সম্পৃক্ত করা হবে। আর তা হলে কোন রকম দমন-পীড়ন চালিয়েও আন্দোলন দমানো যাবে না বলেও মনে করেন নেতারা।
টানা প্রায় এক যুগ ক্ষমতার বাইরে দেশের বড় রাজনৈতিক দল বিএনপি। ওয়ান ইলেভেন পরবর্তি রাজনৈতিক সিডরে বিধ্বস্ত বিএনপি নেতাকর্মীরা এখনও রাষ্ট্রীয় জুলুম, নিপীড়নের শিকার। তারাও মনে করেন এই দুঃসহ অবস্থার অবসানে সর্বাত্মক গণআন্দোলনের কোন বিকল্প নেই। তৃণমূল নেতাকর্মীদের অভিমত, অস্তিত্ব রক্ষার এই সংগ্রামে বিজয়ই একমাত্র লক্ষ্য।
বিএনপির নেতারা জানান, ইতোমধ্যে ঘর গোছানোর কাজ শেষ হয়েছে। চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির পূর্নাঙ্গ কমিটি হয়েছে। থানা ও ওয়ার্ড পর্যায়েও নতুন কমিটি হয়েছে। মহানগর যুবদলের নতুন কমিটি ঘোষনা করা হয়েছে। মহিলা দলের সম্মেলন থেকে এসেছে নতুন কমিটি। দলে আগে কিছুটা কলহ কোন্দল থাকলেও এখন তা নেই। কোথাও কোথাও নেতাদের মধ্যে দূরত্ব থাকলেও কর্মীরা ঐক্যবদ্ধ। মাহে রমজানে ইফতার মাহফিলকে ঘিরে তৃণমূলের নেতাকর্মীদের সংগঠিত করা হচ্ছে। আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে নেতারা নিজ নিজ এলাকায় সক্রিয় রয়েছেন। তারা নেতাকর্মী ও সমর্থকদের সংগঠিত করছেন। ঈদের ছুটিতে নানা অনুষ্ঠান আয়োজনের মাধ্যমে দলকে সংগঠিত করার সাথে চলবে ব্যাপক গণসংযোগ। ইতোমধ্যে কেন্দ্র থেকে সাংগঠনিক সফর হয়েছে। ওই সফরে বন্দরনগরীসহ বৃহত্তর চট্টগ্রামের পাঁচ জেলায় বিএনপির নেতাকর্মীদের আগামী দিনগুলোতে যেকোন আন্দোলন সংগ্রাম এবং প্রয়োজনে যেকোন ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত থাকার বার্তা দেওয়া হয়েছে।
চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি এখন গণদাবিতে পরিনত হয়েছে। গণতন্ত্রের জন্য আপোসহীন লড়াকু বেগম খালেদা জিয়া মুক্তি পেলেই গণতন্ত্র মুক্তি পাবে। বিএনপি জনগণের অধিকার নিয়ে আন্দোলন করে যাচ্ছে। আগামী দিনে মানুষের ভোটের অধিকার আদায়ের আন্দোলন আরও বেগবান করার কোন বিকল্প নেই। এই আন্দোলনে গণতন্ত্রকামী প্রতিটি মানুষ শরিক হবে জানিয়ে তিনি বলেন, চূড়ান্ত আন্দোলনের জন্য চট্টগ্রাম প্রস্তুত।
চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির সভাপতি জাফরুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, অতীতে গণতন্ত্রের লড়াইয়ে বিএনপি রাজপথে ছিল এখনও আছে। বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও মানুষের কেড়ে নেয়া ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠায় যে আন্দোলন তাতে চট্টগ্রামের মানুষ বিএনপির সাথে আছে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত দক্ষিণ চট্টগ্রামের বিএনপির তৃণমূলের নেতাকর্মীরা জনগণকে সাথে নিয়ে রাজপথে থাকবে।



 

Show all comments
  • সাজ্জাদ ৯ জুন, ২০১৮, ২:৪৮ এএম says : 0
    এগুলো আর বলবেন না। আগে শুরু করেন
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আন্দোলনে

২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২২
২৩ জানুয়ারি, ২০২২
১৮ জানুয়ারি, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ