পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
‘আরে ভাই ভেজাল কারবার নেই কোথায়? যারা ভেজাল প্রতিরোধ করবে তারাই তো ভেজাল। মাঝেমধ্যে ভ্রাম্যমান টিম আসে, জরিমানা করে মাত্র। জরিমানার পর লোকসান পুষিয়ে নিতে বরং অতিমাত্রায় ভেজাল কারবার করা হয়।’ যশোর শহরের বড় বাজারে আখের গুড় ক্রয়ের সময় কথা প্রসঙ্গে এক ক্ষুদে দোকানী এভাবেই মন্তব্য করলেন। শুধু যশোর নয়, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সবখানে ভেজাল কারবার চলছে রমরমা। প্রতিরোধ ব্যবস্থা একবারেই ঢিলেঢালা। সরকারী নির্দেশ মাঠপর্যায়ে কখনো কার্যকর হয় না। যার জন্য ভেজাল কারবার দিনে দিনে বাড়ছেই। বিশেষ করে গোটা অঞ্চল জুড়ে রমজানের বাজারে নিত্য পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির পাশাপাশি মুনাফালোভী ব্যবসায়ীরা খাদ্য সামগ্রীতে ভেজাল দিচ্ছে। এতে জনস্বাস্থ্য মারাত্মক হুমকির মুখে পড়ছে। ক্রেতা সাধারণের অভিযোগ, রমজানে জিনিসপত্রের মূল্য বৃদ্ধির পাশাপাশি ভেজাল কারবারে জেরবার হয়ে গেলাম। কয়েকটি জেলা ও উপজেলা হাসপাতাল সুত্র জানায়, সামপ্রতিককালে পেটের পীড়ায় আক্রান্ত হওয়া চিকিৎসাপ্রার্থী মানুষের সংখ্যা বাড়ছে।
মুড়িতে ভেজাল, গুড়ে ভেজাল, চিনিতে ভেজাল, ইফতারীতে ভেজাল ও তেলে ভেজাল, প্রায় -সবকিছুতেই ভেজাল আর ভেজাল। খুরমা-খেজুরে তেল ও চিটা গুড়, ইউরিয়া দিয়ে মুড়ি ভাজা, পিয়াজুতে পিয়াজের বদলে পেপে, যার নাম পেপেজী, বেগুনের মূল্য প্রতি কেজি ৮০টাকা হওয়ায় পেপে চিকন করে বেসন দিয়ে ভাজি করে ইফতারী বিক্রি করা হচ্ছে। বিশেষ করে ব্যবহৃত তেলে শাহী জিলাপী ভাজা হচ্ছে। দেয়া হচ্ছে ওজনে ভেজাল। খাসীর গোশতের বদলে দুগ্ধছাগী, রুগ্ন গরুর গোশত বিক্রিসহ খাদ্যদ্রব্যে অতিমাত্রায় ভেজাল দেয়া হচ্ছে। এ অঞ্চলের বিভিন্ন হাট-বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ভেজাল ছাড়াও প্রায় সব জিনিসের ওজনে কম দেয়া হচ্ছে। কেজিতে প্রায় ২শ’ গ্রাম কম হচ্ছে অধিকাংশ পণ্যে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এখনো বহুস্থানে পণ্য ওজনে কাঠের দাড়ি ও বাটখারা ব্যবহুত হচ্ছে। এটি ব্যবহার নিষিদ্ধ থাকলেও অনেক ক্ষেত্রে পাইকারী ও খুচরা ব্যবসায়ীরা তা মানছে না। মার্কেটিং অফিস সুত্রে জানা যায়, ১৯৩৯ সালের স্টান্ডার্র্ট ওয়েট এ্যাক্ট অনুযায়ী ‘ওয়েট বার’ কোনভাবেই কাঠের হওয়ার সুযোগ নেই। কিন্তু বাস্তবে যুগ যুগ ধরে বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই কাঠের ‘ওয়েট বার’ ব্যবহার করা হচ্ছে। এতে ওজন ও পরিমাপে মারাত্মক ঠকছেন ক্রেতাসাধারণ।
সংশ্লিষ্ট একাধিক সুত্র জানায়, রমজানের আগে থেকেই যশোর ও খুলনাসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সকল জেলায় নিত্যপণ্য মূল্য নিয়ন্ত্রণ ও ভেজাল কারবার বন্ধে অভিযান চলছে। বিভিন্নস্থানে অভিযান চালিয়ে প্রায়ই জরিমানা করা হচ্ছে বলে দাবি স্থানীয় প্রশাসনের। তবে প্রশাসনের কয়েকজন কর্মকর্তার কাছে জানতে চাইলে তারা বলেন ‘অভিযান তো মাঝেমধ্যেই চলে। ভেজাল কারবারীরা এতটা বেপরোয়া হয়েছে যে তাদের লাগাম টেনে ধরা কঠিন হচ্ছে’। সুত্র জানায়, ভেজাল কারবার বৃদ্ধি পাওয়ায় হাট-বাজারে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের মধ্যে বচসা হচ্ছে প্রতিনিয়ত। যশোর শহরের দড়াটানা, তসবির পট্রি, চুয়াডাঙ্গা বাস স্ট্যান্ড, আর এন রোড, খুলনার নিউ মার্কেট, ডাকবাংলোর মোড়, ময়লাপোতার মোড়, চুয়াডাঙ্গা ও ঝিনাইদহের বড় বাজারসহ বিভিন্নস্থানে বিকাল থেকে বেশীরভাগক্ষেত্রেই ভেজাল ইফতার সামগ্রী তৈরী করা হয় বলে বিস্তর অভিযোগ রয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।