পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
হাসান সোহেল : কৃষি ঋণ বিতরণের জন্য বিশেষভাবে প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক চলতি অর্থবছরের প্রথম আট মাসে (জুলাই-ফেব্রুয়ারি) সর্বোচ্চ ৩ হাজার ৭০ কোটি ২৬ লাখ টাকা ঋণ বিতরণ করেছে। চলতি অর্থবছরে ব্যাংকটির লক্ষ্যমাত্রা ৪ হাজার ৮০০ কোটি টাকা। ব্যাংটির গ্রহক সংখ্যা ১০ লাখ ৩৭ হাজার। বাংলাদেশ ব্যাংকে পাঠানো কৃষি ব্যাংকের স্থিতিপত্র অনুযায়ী, ২০১৩-১৪ অর্থ বছরের তুলনায় গেল অর্থবছরে ব্যাংকের নীট ক্ষতি কমেছে ২ হাজার ৭৭৬ কোটি টাকা। ২০১৩-১৪ অর্থ বছরে নীট ক্ষতি ছিলো ২ হাজার ৯৯১ দশমিক ০৫ কোটি। ২০১৪-১৫ অর্থ বছরে এটা দাঁড়িয়েছে মাত্র ২১৫ কোটি টাকায়। একই সঙ্গে কমেছে ব্যাংকটির পরিচালনাগত ক্ষতিও। ২০১৩-১৪ অর্থ বছরের তুলনায় ব্যাংকের পরিচালনাগত ক্ষতি কমেছে প্রায় ৫০ কোটি টাকা। যা ব্যাংকের ক্রমবর্ধমান ক্ষতির ধারাকে উল্টে দিয়েছে। কৃষি ব্যাংকের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইসমাইল বলেন, কৃষিতে সাফল্য ও দেশের উন্নয়ন অগ্রগতিতে কৃষি ব্যাংক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখায় ব্যাংকটি এখন গ্রাম বাংলার গণমানুষের ব্যাংক হয়ে গেছে। লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি অর্জনের আশাবাদ ব্যক্ত করে কৃষি ব্যাংকের চেয়ারম্যান বলেন, আমরা লক্ষ্য অনুযায়ী কৃষি ঋণ বিতরণের সব ধরনের ব্যবস্থা করেছি। সামনে বর্ষা মৌসুম। যা কৃষি ঋণ বিতরণের গুরুত্বপূর্ণ সময়। এই সময়ে কৃষি ঋণ বিতরণের হার আরও বাড়বে বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, আশা করছি, লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি অর্জন করতে পারবো। তিনি বলেন, ব্যাংকিং খাতে সেবার মানের প্রতিযোগিতা চলছে। বেসরকারি ব্যাংকগুলোর সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হলে সরকারী ব্যাংকগুলোর সেবার মান বাড়াতে হবে।
ব্যাংকটির ধারাবাহিক উন্নতির বিবরণ দিয়ে তিনি বলেন, চলতি বছরে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক আগের চেয়ে ক্ষতি অনেকটা কমিয়ে এনেছে। বছর শেষে ব্যাংকটিকে লাভের ধারায় ফিরিয়ে আনার দৃঢ়প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন তিনি।
মোহাম্মদ ইসমাইল বলেন, কৃষি ব্যাংক এখন সাধারণ মানুষের আরও কাছে পৌঁছাতে বাংলা ক্যাশ চালু করার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। এর মাধ্যমে মুহূর্তের মধ্যে সেবা পাবেন সাধারণ মানুষ। পাশাপাশি টাকা সঞ্চয়ও করতে পারবে। তিনি বলেন, এটা করতে পারলে সাধারণ মানুষ টাকা রাখার সহজ সুযোগ পাবে। একই সঙ্গে কম খরচে সহজে সেবা পাবে। এছাড়া কৃষি ব্যাংক নতুন জনবল নিয়োগে আইটি ক্ষেত্রে দক্ষতাকে প্রাধান্য দিবে বলে উল্লেখ করেন তিনি। চেয়ারম্যান বলেন, কৃষি ব্যাংকের গ্রাহকরা হলেন গ্রাম পর্যায়ের। কর্মকর্তাদেরকে গ্রাহকের বাড়ি বাড়ি যেতে হয়। এ জন্য অধিক খরচ হয়, যা সঠিকভাবে উঠাতে না পারায় ক্ষতির মুখে পড়তে হয়। এছাড়া ব্যাংকের সেই পরিমাণ কর্মকর্তা-কর্মচারী নেই। তাই ঋণ উত্তোলন ও তদারকিতে বিপাকে পড়তে হয়। যদিও অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমতি মিলেছে ৩ বছরে তিনটি ধাপে ৫ হাজার জনবল নিয়োগের। যার প্রথমধাপের ১২শ’ কর্মকর্তা নিয়োগের কাজ চলমান রয়েছে।
তিনি বলেন, ব্যাংকগুলো নতুন নতুন প্রযুক্তির ব্যবহার নিয়ে আসলেও কৃষি ব্যাংকের কর্মকর্তাদের মধ্যে এই প্রযুক্তি ব্যবহারের দক্ষতার অভাব রয়েছে। অধিকাংশ কর্মকর্তা সেকেলে হওয়ায় মানসিকভাবে দুর্বল। দক্ষতা কম। আইটি খাতে কৃষি ব্যাংকের কর্মকর্তাদের সীমাবদ্ধতার কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, এখানকার অধিকাংশ কর্মকর্তার বয়স ৫০ বছরের অধিক। ১৯৮৬ সাল থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সমস্যায় ব্যাংকে কোন ধরণের নিয়োগ হয়নি। আর তাই বর্তমানে প্রতিমাসে ৬শ’র অধিক কর্মকর্তা অবসরে যাচ্ছেন। তিনি বলেন, এই ১৫ বছরে কর্মকর্তা নিয়োগ না হওয়ায় প্রযুক্তির ব্যবহারে কৃষি ব্যাংক পিছিয়ে আছে। কৃষি ব্যাংকের নতুন কর্মকর্তা নিয়োগ শেষ হলে প্রযুক্তি ক্ষেত্রে ব্যাংকটি অনেক এগিয়ে যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
চেয়ারম্যান বলেন, কৃষি ব্যাংকের আধুনিকায়নে ব্যাপক পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। ব্যাংককে পুরোপুরি অনলাইনের আওতায় আনার প্রক্রিয়া চলছে। কৃষি ব্যাংকের সেবায় শিগগিরই আমূল পরিবর্তন আসছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ব্যাংকে ঋণের ধারা বদলাতে চাই। কৃষি ঋণের পাশাপাশি বিভিন্ন উৎপাদনমুখী খাতে ঋণ প্রদানে গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। তিনি বলেন, যান্ত্রিকীকরণ হোক। এখন গরু দিয়ে জমি চাষ উঠে গেছে, ট্রাক্টর, থাসারসহ বিভিন্ন অত্যাধুনিক যন্ত্র চলে আসায় চাষ ব্যবস্থা অনেকটা আধুনিকায়ন হয়েছে। একই সঙ্গে ব্যাংকিং ব্যবস্থাও যুগের সাথে তাল মিলিয়ে আধুনিকায়ন হচ্ছে বলে উল্লেখ করেন।
জানা যায়, বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে প্রথমবারের মতো স্থিতিপত্র (ব্যালেন্স সীট) প্রদান করেছে ব্যাংকটি। একই সঙ্গে কৃষকদের দোড়গোড়ায় সেবা পৌঁছে দিতে ব্যাংকটি সব ধরণের ব্যবস্থা নিয়েছে। ফাইন্যান্সিয়াল ইনক্লুশন কার্যক্রমের আওতায় কৃষক/উপকারভোগীদের জন্য ১০ লাখ ৩৭ হাজার বেশি সঞ্চয়ী হিসাব খুলেছে। একই সঙ্গে প্রায় ২৬ হাজার স্টুডেন্টস সেভিংস অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে স্কুল ব্যাংকিং কার্যক্রমকে আরো প্রসারিত করছে।
চেয়ারম্যান জানান, ১৯৯১ সালে শ্রেণীবিন্যাস চালু করার পর থেকে এখন পর্যন্ত লাভে আসতে পারেনি কৃষি ব্যাংক। চলতি অর্থবছরে এ ধারা ভাঙ্গবে বলে প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি।
সূত্র জানায়, ২০১৪ সালেও ব্যাংকটির অসমন্বিত টাকার পরিমাণ ছিল ১ লাখ ১৬ হাজার ৯৪৪ কোটি টাকা। নভেম্বর ২০১৫ যা কমে দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৫৪২ কোটি টাকায়। সারা দেশে কৃষি ব্যাংকের বর্তমানে ১০৩০টি শাখা আছে। যার মধ্যে গ্রামীণ শাখাই ৯০ শতাংশ। অনুমোদিত ১৫ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী থাকার কথা থাকলে ১০ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়েই কাজ করতে হচ্ছে ব্যাংকটির।
ব্যাংকের নীট ক্ষতি প্রায় শূন্যের কোটায় নিয়ে আসা ও অন্যান্য সাফল্যের কৃতিত্ব ব্যাংক কর্মকর্তাদের দিয়ে চেয়ারম্যান বলেন, ব্যাংকের বর্তমান সফলতা সমস্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীর। কর্মকর্তারা দিক নির্দেশনা মোতাবেক কাজ করেছে বলেই এটা সম্ভব হয়েছে। তিনি বলেন, কর্মকর্তাদের কাজের ফলেই ঋণ আদায় বেড়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।