Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ২২ আগস্ট ২০২৪, ০৭ ভাদ্র ১৪৩১, ১৬ সফর ১৪৪৬ হিজরী

সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে স্বার্থ জলাঞ্জলি দিলে জনগণ মেনে নেবে না -মির্জা ফখরুল

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৭ মে, ২০১৮, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১২:২৭ এএম, ২৭ মে, ২০১৮

ভারতের সাথে সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে নিজেদের অধিকার ও স্বার্থ জলাঞ্জলি দিলে জনগণ তা মেনে নেবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। দেশের স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়ে সুসম্পর্ক হয় না মন্তব্য করে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শান্তি নিকেতনে গেছেন। আমাদের অনেকেরই প্রিয় জায়গা সেটি। সেখানে বাংলাদেশ ভবন উদ্বোধন করেছেন। ভালো কথা। কিন্তু আমাদের অধিকারের কথা বলা যাবে না কেন? পত্রিকায় দেখলাম প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, সমস্যার কথা বলে আজকের এই সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশ নষ্ট করতে চান না। কেন এটা হবে? নিজেদের অধিকারের কথা বললে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক কেন নষ্ট হবে? এ সম্পর্কের জন্য কি আমরা পানি সমস্যা ভুলে যাবো? গতকাল (শনিবার) বিকেলে রাজধানীর পূর্বানী হোটেলে ন্যাশনাল পিপলস পার্টি-এনপিপি আয়োজিত ইফতার অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। মির্জা ফখরুল বলেন, ১০ বছর ধরে তিস্তার পানির সুরাহা হওয়ার কথা শুনছি। পানির অভাবে অনেকের জীবন-জীবিকা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু কোনও সুরাহা হয়নি। আমরাও তাদের সঙ্গে অত্যন্ত সুসম্পর্ক চাই। কিন্তু পারস্পরিক স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়ে নয়। নিজেদের অধিকার জলাঞ্জলি দিয়ে সুসম্পর্ক জনগণ মেনে নিবে না। সরকারের মাদকবিরোধী অভিযানের সমালোচনা করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, দেশে এখন মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করেছে সরকার। সরকারি হিসাব মতো গত প্রায় এক সপ্তাহে ৫০ জনের অধিক লোককে হত্যা করা হয়েছে। আমরা চাই মাদক নির্মূল হোক। কিন্তু মানুষ হত্যা করে মাদক দমন করা যায় না। আগে আপনাদের ঘরকেই সামলান। মাদকের স¤্রাট তো আপনাদের ঘরেই আছে। তার ব্যাপারে ব্যবস্থা নেননি এখনো। উল্টো বলছেন তার অপরাধ প্রমাণিত হয়নি! অথচ সারা দেশ জানে আওয়ামী লীগের একজন এমপি মাদকের স¤্রাট। দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার কারাবাস সম্পর্কে মির্জা ফখরুল বলেন, এসময় কারাগারের অন্ধ প্রকোষ্টে আমাদের নেত্রী খালেদা জিয়া একাকী ইফতার করছেন। এটি আমাদের হৃদয় ভারাক্রান্ত করে। এসময় ইফতার মাহফিলে মন থেকে আসার ইচ্ছা হয় না। তবু কারণে আসতে হয়। সরকার ইচ্ছে করে দেশনেত্রীকে কারাবন্দি করে রেখেছে দাবি করে তিনি বলেন, মিথ্যা মামলায় খালেদা জিয়ার জামিন হয়েছে। সাধারণত এসব মামলায় সঙ্গে সঙ্গে মুক্তি দেয়া হয়। কিন্তু বিভিন্ন কৌশলে খালেদা জিয়াকে এ সরকার মুক্তি দিচ্ছে না। নানা কৌশলে তাকে রাজনীতি থেকে দূরে রাখার চেষ্টা করছে সরকার। আসন্ন নির্বাচন থেকে বেগম জিয়াকে দূরে রাখার জন্য এ কৌশল অবলম্বন করেছে তারা। ফখরুল বলেন, অত্যন্ত সুকৌশলে একদলীয় শাসন কায়েম করেছে সরকার। ভিন্ন মত সহ্য করছে না। তারা বিভিন্ন অভিযান চালিয়ে ভিন্ন মতকে দমন করছে। রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের জীবনের কোনও নিরাপত্তা নেই আজ। দেশে এক ভয়াবহ অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। ১৯৭১ এর চেতনা ধ্বংস করে দিয়ে একটি দুঃসহ রাষ্ট্র তৈরি করেছে আওয়ামী লীগ। তিনি বলেন, এই অবস্থায় ১৯৭১ সালে সমগ্র জাতি যেভাবে ঐক্যবদ্ধ হয়েছিলো ঠিক একইভাবে আজ আবারও ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। আমাদের অধিকারের প্রশ্নে এক হতে হবে। একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন দিতে সরকারকে বাধ্য করতে হবে। নির্বাচন প্রসঙ্গে বিএনপির এই নেতা বলেন, আমরা সবসময় দাবি করে এসেছি যে, প্রধানমন্ত্রীকে পদত্যাগ করতে হবে, সংসদ ভেঙে দিতে হবে ও নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েন করতে হবে। এখনও বলছি- এর বাইরে নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব নয়। এনপিপি চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদের সভাপতিত্বে ইফতার মাহফিলে স্বাগত বক্তব্য দেন দলের মহাসচিব মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা। ইফতার মাহফিলে বিএনপি নেতাদের মধ্যে এসময় উপস্থিত ছিলেন, স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, মির্জা আব্বাস, ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, নিতাই রায় চৌধুরী, উপদেষ্টা তৈমুর আলম খন্দকার, যুগ্ম-মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল প্রমুখ। অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ২০ দলীয় জোটের শরিক জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর মিয়া গোলাম পারোয়ার, নির্বাহী পরিষদ সদস্য মাওলানা আবদুল হালিম, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আমীর নুরুল ইসলাম বুলবুল, জাতীয় পার্টি (জাফর) মহাসচিব মোস্তফা জামাল হায়দার, প্রেসিডিয়াম সদস্য আহসান হাবিব লিঙ্কন, কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহম্মদ ইবরাহিম বীরপ্রতীক, মহাসচিব এম এম আমিনুর রহমান, বাংলাদেশ ন্যাপের মহাসচিব এম গোলাম মোস্তফা ভূঁইয়া, এলডিপি সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম, মুসলিম লীগের সভাপতি এএইচএম কামরুজ্জামান খান, মহাসচিব শেখ জুলফিকার বুলবুল চৌধুরী, জাগপার সাধারণ সম্পাদক খন্দকার লুৎফর রহমান, বিজেপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব আবদুল মতিন সাউদ, লেবার পার্টির (একাংশ) চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, (অপরাংশ) মহাসচিব হামদুল্লাহ আল মেহেদি, এনডিপি ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসা, খেলাফত মজলিশের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা শেখ গোলাম আজগর, ন্যাপ-ভাসানীর সভাপতি আজহারুল ইসলাম, পিপলস লীগের মহাসচিব সৈয়দ মাহবুব হোসেন, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক সাঈদ আহমেদ, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মহিউদ্দিন ইকরাম প্রমুখ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: জনগণ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ