পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
![img_img-1720108328](https://old.dailyinqilab.com/resources/images/cache/169x169x3_1678437663_IMG-20230310-WA0005.jpg)
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
আগাম বৃষ্টিপাতের কারণে এবার দেশে পাটের আবাদ লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী এগোয়নি। তবে আগামী জুনের মধ্যভাগ পর্যন্ত পাট আবাদের সময় থাকায় এখনো কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তর-ডিএই আশাবাদী হলেও জৈষ্ঠ্যের আগাম বর্ষণ নিয়ে দুঃশ্চিন্তা রয়েছে কৃষিবিদদের মধ্যে। জুনের প্রথম সপ্তাহ থেকেই স্বাভাবিক বর্ষন শুরুর সম্ভবনা রয়েছে। এমনকি গত মাসের মত চলতি মাসেও দেশে স্বাভাবাবিকের চেয়ে অনেক বেশী বৃষ্টিপাত উদ্বেগ সৃষ্টি করছে। চলতি মৌসুমে দেশের ৮ লাখ পাঁচ হাজার হেক্টর জমিতে আবাদের মাধ্যমে ৮৮ লাখ ৪০ হাজার বেল বিভিন্ন মানের পাট উৎপাদনের লক্ষ্য স্থির করেছে কৃষি মন্ত্রনালয়। গতকাল পর্যন্ত প্রায় ৬ লাখ ৪৪ হাজার হেক্টর জমিতে পাট আবাদ সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছে ডিএই’র দায়িত্বশীল মহল। যা লক্ষ্যমাত্রার প্রায় ৮০ ভাগের কাছাকাছি।
গতবছর দেশে ৮ লাখ ১৮ হাজার হেক্টর লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে প্রায় ৭ লাখ ৮০ হাজার হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত ছিল প্রায় ৮৮ লাখ ৬ হাজার বেল। আবাদ কিছুটা কম হলেও উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রার প্রায় কাছাকাছি অর্জন করা সম্ভব হয়েছিল বলে মনে করছেন দায়িত্বশীল মহল। কিন্তু চলতি বছর আবাদ মওশুম শেষ হতে চললেও পাটের আবাদ এখনো গত বছরের চেয়ে প্রায় ১লাখ ৪০হাজার হেক্টর পেছনে। এ পরিস্থিতি ইতোমধ্যে কৃষিবীদদের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করলেও পুরো বিষয়টি এখন প্রকৃতির আচরনের ওপরই নির্ভরশীল হয়ে আছে। আগাম অতি বর্ষণের ফলে পাট বীজ বপন বাধাগ্রস্থ হচ্ছে। আর কয়েকদিন পরে কৃষকদের মধ্যে এ সোনালী ফসল আবাদে আর কোন আগ্রহ থাকবে না। আর যে হারে ইতোমধ্যে বৃষ্টি হয়েছে, তাতে বেশীরভাগ জমিই আর পাট বীজ বপনের অবস্থায় নেই।
আগামী মধ্য জুন পর্যন্ত দেশে পাট আবাদ সম্ভব হলেও ইতোমধ্যে লাগাতার মাঝারী বর্ষণে অনেক ফসলি জমি প্লাবিত হয়েছে। ফলে চলতি মৌসুমে পাটের আবাদ ৭ লাখ হেক্টর অতিক্রম করা নিয়ে সন্দেহ সৃষ্টি হয়েছে ইতোমধ্যে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন না হওয়া সহ গত বছরের চেয়ে দেশে পাটের আবাদ ও উৎপাদন কিছুটা হ্রাস পাবার আশঙ্কা থাকলেও এখনো কোন মন্তব্য করতে রাজি নন ডিএই’র দায়িত্বশীল মহল।
আমাদের পাট গবেষনা ইনস্টিটিউট ইতোমধ্যে উচ্চ ফলনশীল ও উন্নতমানের তোষা পাটের বেশ কয়েকটি জাত উদ্ভাবন করেছে। এসব উচ্চফলনশীল তোষা পাটের ফলন হেক্টর প্রতি ৮-৯ বেল আর দেশী সনাতন জাতের পাটের ফলন ৫ বেল। পাশাপাশি দেশের উপক‚লীয় এলাকার লবনাক্ত জমিতেও উচ্চ ফলনশীল পাট উৎপাদনের নতুন জাত উদ্ভাবন করেছেন আমাদের কৃষি বিজ্ঞানীগন। ফলে অদূর ভবিষ্যতেই দেশের উপক‚লীয় লবনাক্ত জমিতেও পাট আবাদের সম্ভবনার দ্বার উন্মোচিত হবে বলে আশাবাদী কৃষিবিদগণ। এতে করে পাটের আবাদ ও উৎপাদন আরো বৃদ্ধির বিষয়ে যথেষ্ট আশাবাদী কৃষি মন্ত্রনালয়ের দাত্বিশীল মহল। চলতি মৌসুমে বরিশাল ও ফরিদপুর কৃষি অঞ্চলের ১১টি জেলার প্রায় ২ লাখ ৩০ হাজার হেক্টর জমিতে পাট আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হলেও সে লক্ষ্যে পৌছেছেন এ অঞ্চলের কৃষি যোদ্ধাগণ। শুধুমাত্র ফরিদপুর কৃষি অঞ্চলের ৫টি জেলাতেই ২ লাখ ১৬ হাজার হেক্টর জমিতে আবাদ লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ইতোমধ্যে ২ লাখ ২০ হাজার হেক্টরে পাটের আবাদ সম্পন্ন হয়েছে। ফরিদপুর, রাজবাড়ী, শরিয়তপুর, মাদারীপুর ও গোপালগঞ্জের দিগন্ত বিস্তৃত জমিতে চোখ রাখলেই এখন ঘন সবুজ পাটের সমারহ চোখে পড়ে। তবে বরিশাল সহ দক্ষিণাঞ্চলে এখনো পাটের বাণিজ্যিক আবাদ স¤প্রসারণ না ঘটলেও তা ক্রমশ বাড়ছে। দক্ষিণাঞ্চলের কয়েকটি জেলায় পাটের শাক উন্নত ও পুষ্টিকর খাবার হিসেবেও গ্রহণ করছেন বিপুল সংখ্যক মানুষ। ফলে এ অঞ্চলে পাটের আঁশের চেয়ে শাক বিক্রী করেও লাভবান হচ্ছেন কৃষককুল।
পাট ও বস্ত্র মন্ত্রনালয়ের মতে, দেশের প্রায় চার কোটি মানুষ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে পাট খাতের উপর নির্ভরশীল। সা¤প্রতিককালে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন উদ্যোগ এবং চেষ্টায় দেশের অভ্যন্তরে পাট ও পাটজাত পণ্যের চাহিদা যথেষ্ঠ বৃদ্ধি পেয়েছে। সরকারি তরফ থেকে পাট পণ্যের ব্যবহারকে উৎসাহিত ও বাধ্যতামূলকও করা হয়েছে। এবার গত ৬ মার্চ ‘সোনালী আশেঁর সোনার দেশ, পাট পণ্যের বাংলাদেশ’ এ প্রতিপাদ্য নিয়ে জাতীয় পাট দিবস উদযাপন করা হয়। সরকার ইতোমধ্যে নির্দিষ্ট ১৭টি পণ্যে পাটের ব্যাগ ব্যবহার নিশ্চিত করতে নানামুখী পদক্ষেপও গ্রহণ করেছে। যেসব ক্ষেত্রে পাট পণ্য ব্যবহার বাধ্যতামূলক সেসব বিষয় নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করতে জেলা প্রশাসনকেও ইতোপূর্বে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
অপরদিকে দাম বেড়ে যাওয়ায় চাল আমদানিতে গত বছর প্লাস্টিকের বস্তা ব্যবহারে সাময়িক অনুমতি দেয়া হলেও গত ২০ ডিসেম্বর সে সুযোগ শেষ হয়েছে। পাট মন্ত্রনালয়ের মতে, চলতি ২০১৭-১৮ অর্থবছরের জুলাই-জানুয়ারি প্রান্তিকে পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানি করে দেশ ৬৬ কোটি ডলার আয় করেছে। যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ১৭ দশমিক ৩৬ শতাংশ বেশি বলে মন্ত্রনালয় সূত্রে জানা গেছে।
পাট এখনো দক্ষিণাঞ্চলসহ সরা দেশের কৃষি-অর্থনীতিতে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। তবে ইতোপূর্বর কয়েকটি বছরে দরপতনের ফলে অনেক কৃষক পাট আবাদে আগ্রহ হারিয়ে ফেললেও ক্রমান্বয়ে পরিস্থিতির উন্নতি ঘটছে। গত দু-তিনটি বছর ধরে পাটের দর দেড় হাজার টাকার ওপরে প্রতিমন। এরফলে সারা দেশের মত দক্ষিণাঞ্চলেও বানিজ্যিকভাবে পাট আবাদে কৃষকদের ইতিবাচক মনোভাব সৃষ্টি হচ্ছে। এমনকি বিপুল সম্ভবনার বৃহত্তর ফরিদপুরের ৫টি জেলাতেও পাট আবাদের পরিমান ইতোপূর্বে একলাখ ৯০ হাজার হেক্টরের নিচে নেমে গেলেও এবার তা ২ লাখ ২০ হাজার হেক্টর অতিক্রম করেছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।