Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

প্রতিকূল আবহাওয়া দক্ষিণাঞ্চলের ইফতার বাজারকে ম্লান করতে পারেনি

বরিশাল ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ২৬ মে, ২০১৮, ১২:০০ এএম

বিরুপ আবহাওয়া সত্বেও রোজার শুরু থেকেই দক্ষিণাঞ্চলের ইফতারির বাজার এবারো জমজমাট। এবারের রমজানে ছোলাবুট, খেসারী ডাল, ভোজ্য তেল ও চিনি সহ বেশ কয়েকটি নিত্য পণ্যের দাম না বাড়ার পাশাপাশি এখনো পেয়াজের দাম কিছুটা নিয়ন্ত্রনে থাকায় ইফতার সামগ্রীর দামও গত বছরের সম পর্যায়েই রয়েছে। ফলে সাধারন মানুষ কিছুটা সাচ্ছন্দেই ইফতারি কিনছেন এবারের রমজানে। গতবছরের মত এবারো টিসিবি বরিশালে ছোলাবুট, সয়াবিন তেল, চিনি ও খেজুর বিক্রি কার্যক্রম শুরু করলেও শুরুতে দাম খোলা বাজারের সমতুল্য থাকায় যথেষ্ট বিপাকে পড়তে হয় ক্রেতার অভাবে। শুরুতে কোন ডিলার টিসিবি পণ্য উত্তোলন করেনি। তবে রোজা শুরুর পরে ছোলা বুট প্রতি কেজি ৫৫ টাকা আর খেজুর ১শ’ টাকায় হ্রাস করার পরে কিছু ডিলার এসব পণ্য তুলতে শুরু করলেও তা খুব একটা আশাব্যাঞ্জক নয়। গতকাল পর্যন্ত ১২৩ জন ডিলারের মধ্যে মাত্র ৪০ জন টিসিবি’র পণ্য উত্তলন করেছে বলে জানা গেছে।
এদিকে রোজার শুরু থেকেই বরিশাল মহানগরী সহ সমগ্র দক্ষিণাঞ্চলেই ইফতারির বাজার যথেষ্ট জমজমাট। অথচ পহেলা রোজার দুপুরেই বরিশাল মহানগরীতে প্রায় ২৫ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। গত এক সপ্তাহে বরিশালে বৃষ্টি হয়েছে প্রায় দেড়শ মিলিমিটার। অনেক মুসল্লী প্রথম রোজার দিন জুমার নামাজ আদায় করতে পারেননি প্রবল বর্ষন আর বজ্রপাতের কারনে। বরিশাল মহানগরীর বেশীরভাগ রাস্তাঘাটই নিমজ্জিত হয় বৃষ্টির পানিতে। কিন্তু দুপুর ২ টার পরে বৃষ্টি থেমে গেলেই যে যার মত করেই ইফতারির বাজারে ভিড় জমায়।
বরিশাল মহানগরীর নামী-দামী রেস্তোরাঁগুলো ছাড়াও ঐতিহ্যবাহী ‘নাজেম’স রেস্তোরাঁ’ এবারো তার ইফতারির পসরা নিয়ে বসেছে। এ রেস্তোরাঁটিতে এবার কোন ইফতার সামগ্রীর দাম বাড়ানো হয়নি। নগরীর বগুড়া রোড পেস্কার বাড়ী এলাকায় নাজেম’স রেস্তোরাঁর স্পেশাল ইফতারি কিনতে প্রতিদিনই এ শহরের বাইরে, এমনকি ঝালকাঠী, গৌরনদী, উজিরপুর ও বাবুগঞ্জ থেকেও অনেকে গাড়ী নিয়ে ছুটে আসছেন প্রতিদিন। তবে এখানে বিকেল সাড়ে ৫টার পরে তেমন কোন ইফতার সামগ্রী পাওয়া যায়না। রেস্তোরাঁটির সামনে যানবাহনের ভিড় সামাল দিতে ট্রাফিক পুশি পর্যন্ত মোতায়েন করা হচ্ছে। এখানের ঘি-এ ভাজা শাহী জিলাপি থেকে শুরু করে বোরহানী, পেয়াজু, বেগুনী, আলুর চপ, চিকেন চপ, তেহারী, চিকেন বিরিয়ানী, হালিম, ছানার পোলাও ছাড়াও গরু ও খাশির গোসতের ভুনা সবার পছন্দ। নাজেম’স-এর প্রতিটি ইফতার সামগ্রীই এবারো সকলের কাছে গ্রহণযোগ্যতা পাচ্ছে অতীতের মত।
এছাড়াও বরিশাল মহানগরীর বনেদী রেস্তোরাঁ ‘হান্ডি কড়াই, রয়েল রেস্তোরাঁ, রোজ গার্ডেন এবং রিভার ভিউ’র মত অভিজাত আবাসিক হোটেল ‘গ্রান্ড পার্ক’এ এবারো অত্যন্ত উন্নতমানের ইফতারি বিক্রি হচ্ছে। নতুন করে ‘তাওয়া’ ও ‘লেক ভিউ’ নামে সিএন্ডবি রোডের দুটি রেস্তোরাঁতেও উন্নতমানের ও স্বাস্থ্য সম্মত ইফতারি বিক্রি হচ্ছে। তবে রেস্তোরাঁগুলো অবশ্য অপেক্ষাকৃত বিত্তবানদের জন্যই ইফতারি বিক্রি করছে। ১শ’ টাকা থেকে ৪শ’ টাকায় একজনের জন্য প্যাকেজ ইফতারিও বিক্রি হচ্ছে বরিশালের নামী দামী রেস্তোরাঁগুলোতে।
এর বাইরে বরিশাল মহানগরীর আনাচে কানাচে ছড়িয়ে থাকা হোটেল রেস্তোরাঁগুলোতেও ইফতারির পসরা নিয়ে বসেছেন দোকানীরা। বরিশাল মহানগরী সহ এ জেলা ছাড়িয়ে দক্ষিণাঞ্চলের অন্যান্য জেলা-উপজেলা সহ বন্দর আর হাট-বাজারগুলোতেও এবারো ইফতারি বাজার জমজমাট হয়ে উঠেছে প্রথম রোজা থেকেই। তবে রোজা শুরুর দিন থেকে প্রতিদিনের গ্রীষ্মের বর্ষণ জনজীবনে স্বস্তি দিলেও রোজার বাজারকে কিছুটা হলেও নির্জীব করছে।
কিন্তু আবহাওয়া প্রতিকুল হলেও ইফতারির বাজারে তার খুব একটা বিরূপ প্রভাব এখনো লক্ষ্য করা যায়নি। বরিশাল মহানগরী সহ সমগ্র দক্ষিণাঞ্চলের অর্থনীতিতেই ইফতার বাজার কিছুটা হলেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে এবারো।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ