Inqilab Logo

শনিবার, ২২ জুন ২০২৪, ০৮ আষাঢ় ১৪৩১, ১৫ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

সিসি ক্যামেরার সন্ধানে পুলিশ

জবি ছাত্র নাজিম হত্যা

প্রকাশের সময় : ৯ এপ্রিল, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নাজিম উদ্দিন সামাদের খুনিদের চিহ্নিত করতে সিসি ক্যামেরার সন্ধানে নেমেছে পুলিশ। ঘটনাস্থলের আশপাশে কোনো প্রতিষ্ঠানে সিসি ক্যামেরা আছে কি না, তা জানার চেষ্টা চলছে। হাজারো মানুষের সামনে নাজিম উদ্দিনকে কুপিয়ে ফাঁকা গুলি করে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। কিন্তু ঘটনার ৩ দিন পরও খুনের ক্লু এবং ঘাতকদের সম্পর্কে অন্ধকারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এদিকে বৃহস্পতিবার রাতে নাজিমের লাশ গ্রামের বাড়ি সিলেটের বিয়ানীবাজারে নিয়ে গেছেন তার স্বজনরা। কিন্তু তার পরিবার রাজি না হওয়ায় পুলিশ বাদি হয়ে অজ্ঞাত ৫-৬ জনকে আসামি করে সূত্রাপুর থানায় একটি মামলা করে।  
সূত্রাপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) নুরুল ইসলামের দায়ের করা এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নিযুক্ত হয়েছেন একই থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সমীর কুমার সূত্রধর। মামলার তদন্তের অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চাইলে পুলিশের এ কর্মকর্তা বলেন, এ ঘটনায় প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তবে উল্লেখ করার মতো অগ্রগতি নেই। নাজিম যেখানে খুন হয়েছেন, তার আশপাশে কোনো প্রতিষ্ঠানে সিসি ক্যামেরা রয়েছে কি না গতকাল তা জানার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু হত্যাকা-ের স্থানের ১০০ গজের মধ্যে সিসি ক্যমেরাযুক্ত প্রতিষ্ঠান খুঁজে পাওয়া যায়নি। তারপর দূরে কোনো প্রতিষ্ঠানে এরকম পেলে সেখান থেকে ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহের পরিকল্পনা রয়েছে। নাজিমের যেসব স্বজন ঢাকায় এসেছেন তাদের কাছ থেকেও কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। নাজিম খুনের সময় যে বন্ধুরা পাশে ছিলেন তাদেরকে জিজ্ঞাসবাদ করা হয়েছে। কিন্তু তাদের সঙ্গে নাজিমের পরিচয় মাত্র দু’মাস ধরে। তাও একইসাথে ক্লাস করার কারণে পরিচয়। তবে তার গ্রামের বাড়ির কয়েকজন বন্ধুর সাথে বিরোধের কথা জানা গেছে। তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদের প্রক্রিয়া চলছে। খুনিরা কেন ওই স্থানটিই  বেছে নিলো, এমন এক প্রশ্নের জবাবে সমির চন্দ্র সূত্রধর বলেন,  যেখানে খুন করা হয়েছে সেই একরামপুর মোড়েই এসে মিশেছে সদরঘাট যাওয়ার একটি রাস্তা। অন্য আরেকটি রাস্তা গেছে সূত্রাপুর থানার দিকে। খুনিরা সহজে পালিয়ে যাওয়ার জন্যই তিন রাস্তার মোড়টিকে বেছে নিয়েছে বলে ধারণা। রজনী চৌধুরী  রোডের ২৯/গ নম্বর বাড়ির ষষ্ঠ তলার ফ্ল্যাটে মেস করে থাকতেন নাজিমউদ্দিন। সেখানে টেবিলে সাজানো রয়েছে আইন বিভাগের কিছু বই, একটি তোষক ও একটি ব্রিফকেস। পুলিশ ব্রিফকেসটি খুললে দেখা যায়, তাতে একটি ডিজিটাল পাসপোর্ট, কিছু সার্টিফিকেট, একটি ডায়েরি, একটি সাদা শার্ট ও দু’টি প্যান্ট। রয়েছে এক প্যাকেট ওয়ানটাইম রেজারও। তবে তার কক্ষে কোনো কম্পিউটার তো দূরের কথা, ফ্যান পর্যন্ত নেই। বাড়িওয়ালা মহিউদ্দিন ও ওই বাড়ির দারোয়ান আব্দুল কাদের বলেন, নাজিমউদ্দিন গত দু’মাস আগে ওখানে ভাড়া এসেছেন। প্রতিদিন সকাল ১০টার মধ্যে তিনি বের হয়ে ফিরতেন রাত ৯টা থেকে ১০টার মধ্যে। তার সাথে তেমন কোনো বন্ধুবান্ধবও দেখা করতে আসতেন না। এমনকি তার প্রতিবেশীরাও কখনো দেখেননি নাজিমউদ্দিনকে। পুলিশের তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, নিহতের ভাইয়েরা সবাই লন্ডন প্রবাসী হলেও নাজিম উদ্দিন বিলাসিতায় বিশ্বাসী ছিলেন না। তিনি সাধারণ জীবনযাপন করতেন। এমনকি তার অর্থকষ্টও ছিল বলে জানা গেছে। নাজিম খুনের প্রসঙ্গে লালবাগ জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার নুরুল আমিন বলেন, বিষয়টি অত্যধিক গুরুত্বের সাথে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সমস্যা হয়েছে যে, ওই এলাকায় সিসিটিভি ক্যামেরা না থাকায় তদন্তে একটু সময় লাগছে। উল্লেখ্য, গত ৬ এপ্রিল রাত সাড়ে ৮টার দিকে রাজধানীর সূত্রাপুর থানা মোড়ে দুর্বৃত্তদের ধারালো অস্ত্রের আঘাত ও গুলিতে নিহত হন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের বি-সেকশনের ষষ্ঠ ব্যাচের ছাত্র নাজিমউদ্দিন। 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সিসি ক্যামেরার সন্ধানে পুলিশ
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ