পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : নির্বাচন নিয়ে মতবিনিয়ম সভায় বক্তারা বলেছেন, নির্বাচন কমিশন নিজেকে সরকারের অনুগত প্রতিষ্ঠানে পরিণত করে জনগণের ভোটাধিকার ও সমগ্র নির্বাচনী ব্যবস্থা ধ্বংসে নেতৃত্ব দিচ্ছে। সাংবিধানিকভাবে একটি স্বাধীন প্রতিষ্ঠান হিসাবে নিজের ক্ষমতার ৫ শতাংশও কাজে লাগায়নি নির্বাচন কমিশন। নির্বাচন কমিশনের অন্য কোনো এজেন্ডা আছে কিনা সেটি খতিয়ে দেখা দরকার।
গতকাল শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন, নির্বাচনী ব্যবস্থা ও স্থানীয় সরকারের ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশ বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি সভাপতি সাইফুল হক লিখিত বক্তব্যে বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের দুই পর্বের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যে শিশু, মহিলা, পুরুষসহ ৪০ জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে সহস্রাধিক, যাদের অনেকেই পঙ্গু হয়ে যাবে। এই ধারা অব্যাহত থাকলে আগামী চার পর্বের নির্বাচনে আরো বহু মানুষ প্রাণ হারাবে এবং আহত হবে।
দেশের নির্বাচন ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে মন্তব্য করে স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ ড. তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, নির্বাচনে অবৈধ অর্থ ও পেশী শক্তি ব্যবহারের ধারা পাল্টে পুলিশ এখন কেন্দ্রবিন্দুতে চলে এসেছে। নির্বাচনে ভোটারদের পেছনে অবৈধ অর্থ খরচ করা হলে সেটা অল্প কিংবা বেশি পরিমাণে ভোটারদের পেছনে যেত; এরপর মাস্তানদের পেছনে টাকা খরচ করা হতো। আর এখন টাকা ঢালা হয় পুলিশের পেছনে। পুলিশই মাস্তানি করবে সেজন্য। মতবিনিময় সভায় তোফায়েল আহমেদ বলেন, নির্বাচন ব্যতীত প্রতিনিধিত্বমূলক গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার বিকল্প পদ্ধতি আমাদের কাছে নেই। ইলেকশন একটি সভ্য পদ্ধতি। কিন্তু এই পদ্ধতি যখন খারাপ মানুষদের দ্বারা ঘেরাও হয়ে যায়, তখন আর ভালো ফলাফল আসবে কি করে।
পরিবর্তনের বিষয়টি ব্যাখ্যা করে তোফায়েল আহমেদ বলেন, বাংলাদেশের নির্বাচন ব্যবস্থা তিনটি কাল পর্বে এগিয়েছে। প্রথম পর্বে ১৯৭০-৮৯ সাল পর্যন্ত হয়েছে প্রতারণার নির্বাচন। দ্বিতীয় পর্বে ১৯৯০ থেকে ২০০৮ পর্যন্ত নির্বাচন হয়েছে বিশেষ ব্যবস্থায়। ২০১৪ সালের পর নির্বাচনী ব্যবস্থাটাই ভেঙে যাওয়া শুরু হয়েছে। সর্বশেষ পৌরসভা ও ইউপি নির্বাচনে দেখা গেল নির্বাচনী সিস্টেমই নেই।
স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা ভেঙে যাওয়ার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, স্থানীয় সরকারে শুধু মেয়র বা চেয়ারম্যানই সব নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন, এ কারণে এই দুটি পদকে দলীয়ভাবে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হয়। অবস্থাদৃষ্টে মনে হয়, আমাদের সরকার চলে প্রধানমন্ত্রীর শাসনে আর স্থানীয় সরকার চলে প্রেসিডেন্ট শাসনে। এই অবস্থা থেকে উত্তরণে পুরো স্থানীয় সরকার ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানো এবং নির্বাচন প্রক্রিয়া পরিবর্তনের সুপারিশও আসে সভায়।
আলোচনায় অংশ নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের প্রফেসর নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ বলেন, আমাদের নির্বাচনী ব্যবস্থার মধ্যে এক ধরনের ‘বিল্ট-ইন’ সমস্যা আছে। সেটা থেকে মুক্ত হওয়ার উপায় বের করতে হবে। ইউপি নির্বাচনে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের হয়ে নির্বাচন কমিশন আউটসোর্সিংয়ের মতো কাজ করছে। জাতীয় নির্বাচনে যা হয়েছে, তার মতো সমস্যা এখানেও দেখা দিয়েছে।
সভায় অংশ নিয়ে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকী বলেন, ইউপি নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের প্রতিনিধিত্ব আগেও কখনো কায়েম হয়নি। বর্তমান সরকারের আমলে ক্ষমতাসীনদের নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ার একটি প্রক্রিয়া চলছে। তিনি বলেন, নির্বাচন বর্জন না করে আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে, নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে নির্বাচনী ব্যবস্থার অগণতান্ত্রিক চরিত্র উন্মোচন করা। এই নির্বাচন কমিশনের কাছে আমাদের আশা করার কিছু নেই। আওয়ামী লীগ তাদের ক্ষমতার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চায়। এজন্যই এমন নির্বাচনী ব্যবস্থা কায়েম করা হচ্ছে।
জোনায়েদ সাকী বলেন, সকল অগণতান্ত্রিক ব্যবস্থার বিরুদ্ধে জনগণকে একত্রিত করতে হলে আমাদের একটি ন্যূনতম লক্ষ্য নির্ধারণ করতে হবে। সেটি করতে না পারলে জনগণ কেন একত্রিত হবে?
মতবিনিময় সভায় আরো বক্তব্য রাখেন, গণতান্ত্রিক বাম মোর্চার সমন্বয়ক প্রফেসর আব্দুস সাত্তার, নাগরিক ঐক্যের ইফতেখার আহমেদ বাবু, লেখক ও সাংবাদিক সোহরাব হাসান, সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা, এডভোকেট হাসনাত কাইয়ুম, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আবু হাসান টিপু, বাসদের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বজলুর রশীদ ফিরোজ, ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া, সাংবাদিক আলতাফ পারভেজ প্রমুখ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।