পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
মালেক মল্লিক : জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত সাবেক প্রধান মন্ত্রী বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে হাইকোর্টের দেয়া জামিন বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ। একই সঙ্গে আগামী ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে আপিল নিষ্পত্তি করার জন্য হাইকোর্টকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। দুদক ও রাষ্ট্রপক্ষের দুটি আপিলই খারিজ করে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বেঞ্চ এ রায় দেন। বেঞ্চের অপর সদস্যরা হলেন- বিচারপতি মুহাম্মদ ইমান আলী, বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী ও বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার।
এদিকে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার জামিন আপিলে বহাল থাকলেও আরও কয়েকটি মামলায় থাকায় এই মুহুতেই তার কারামুক্তিতে কিছু সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা। তবে তারা প্রত্যাশা করছেন শিগগরই খালেদা জিয়ার কারামুক্তি পাবেন। তবে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরাও বলেছেন, অন্যন্য মামলা জামিন নেয়ার পরই তিনি মুক্তি পাবেন।
এদিকে খালেদা জিয়ার দ্রæত মুক্তির জন্য জামিননামা দাখিল করতে আপিল বিভাগের রায়ের সংক্ষিপ্ত আদেশ চেয়ে আবেদন প্রত্যাখ্যান করেছেন আদালত। তবে জামিনের রায় দ্রæত প্রকাশ করা হবে বলে খালেদা জিয়ার আইনজীবীকে আশ্বস্ত করেছেন আপিল বিভাগ ।
এর আগে দুদক ও রাষ্ট্রপক্ষের পৃথক আপিলের ওপর শুনানি শেষে ৯ মে আপিল বিভাগ রায়ের জন্য ১৫ মে দিন রেখেছিলেন। এদিন অ্যাটর্নি জেনারেল ফের যুক্তিতর্ক করার জন্য আদালতে আবেদন করেন। পরে তাঁর যুক্তিতর্ক শুনে ১৬ মে রায় ঘোষণার দিন ঠিক করেন আপিল বিভাগ। বিষয়টি আপিল বিভাগের রায়ের জন্য কার্যতালিকায় ১ নম্বরে ছিল। গতকাল বুধবার আদালতের কার্যক্রম শুরুর শুরুতেই প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বেঞ্চ খালেদা জিযার মামলা এই রায় দেন।
রায় উপলক্ষে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়। সবকটি ফটকে সবাইকে তল্লাশি করে প্রবেশ করতে দেয়া হয়। আদালতের চারপাশে বিভিন্ন গোয়েন্দা বাহিনীর সদস্যদের ব্যাপক উপস্থিতিও লক্ষ করা যায়। ৯টার আগেই আসামী পক্ষ ও রাষ্ট্রপক্ষ, সাধারণ আইনজীবী, সাংবাদিকদের উপস্থিতি হন। খালেদা জিয়ার পক্ষে উপস্থিত ছিলেন ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, এ জে মোহাম্মদ আলী, জয়নুল আবেদীন, মীর নাসির উদ্দিন, ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর, ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদল, ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদল, ব্যারিস্টার কায়সার কামালহ বিএনপি সমর্থিত শতাাধিত আইনজীবীরা। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, অতিরিক্ত অ্যার্টনি জেনারেল মো. মমতাজ উদ্দিন ফকির। দুদকের পক্ষে ছিলেন খুরশীদ আলম খান। এছাড়াও বিএনপির কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতাকে দেয়া যায়।
৯টা ৫ মিনিটের দিকে প্রধান বিচারপতি নেতৃত্বধীন আপিল বেঞ্চ এজলাসে বসেন। এরপর প্রধান বিচারপতি নেতৃত্বধীন ব্ঞ্চে রায় দেন। আদেশে আদালত বলেছেন, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় হাইকোর্টে পেপারবুক প্রন্তুুত। হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চকে আপিল আগামী ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে নিষ্পত্তির নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এরপর বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জামিননামা দাখিল করতে আপিল বিভাগের রায়ের সংক্ষিপ্ত আদেশ চেয়ে করা আবেদন মৌখিকভাবে আবেদন জানান খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা। এসময় আদালত বলেন, আইনে আপিল বিভাগ থেকে এমন কোনো প্রক্রিয়ার সুযোগ নেই। দুই দিন শুনানিতে জামিন বাতিলের পক্ষে রাষ্ট্রপক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম এবং দুদকের পক্ষে খুরশিদ আলম খান। অপরদিকে জামিন বহাল রাখতে তার পক্ষে শুনানি করেন মওদুদ আহমেদ, খন্দকার মাহবুব হোসেন, এ জে মোহাম্মদ আলী, জয়নুল আবেদন। আসামী পক্ষের আইনজীবীরা হাইকোর্টের জামিন আপিল বিভাগ হস্থক্ষেপ করে না এমন যুক্তি উপস্থাপনা করেন। অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষ গুরুত্ব অসুস্থ না থাকলে জামিন দেয়া যায় না বলে শুনাতিতে যুকিত্তর্ক তুলে ধরেন।
গত ৮ ফেব্রæয়ারি খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছর সশ্রম কারাদন্ড ও অর্থদন্ডাদেশ দেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫। রায়ের পর আপিল করে জামিন চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন খালেদা জিয়া। এরপর গত ১২ মার্চ দুদকের আবেদনের শুনানি নিয়ে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়াকে চার মাসের অন্তর্বতীকালীন জামিন দেন বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ। জামিনের বিরুদ্ধে দুদক ও রাষ্ট্রপক্ষ পৃথক লিভ টু আপিল করে। গত ১৯ মার্চ মামলাটি শুনানির জন্য ৮ মে দিন ধার্য করেছিলেন প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ। খালেদা জিয়াকে হাইকোর্টের দেয়া জামিন আদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ ও দুদকের লিভ টু আপিল এবং আপিল বিভাগের স্থগিতাদেশ তুলে নেয়া সংক্রান্ত খালেদা জিয়ার আবেদনের ওপর শুনানি হয়।
আসামী পক্ষের আইনজীবীদের বক্তব্য:
খালেদা জিয়ার আইনজীবী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেছেন, মুক্তিতে কিছুটা বাধা আছে। কারণ সরকার নানা কৌশলে চেষ্টা করবে তার মুক্তিটা বিলম্বিত করার জন্য। নিচের আদালতের কতগুলো মামলায় তাকে আসামি দেখানো হয়েছে। সে মামলাগুলোতে তার জন্য আমাদের জামিন নিতে হবে। সেই জামিন নিতে যতটুকু সময় লাগে সেই সময়টুকু পর্যন্ত আমাদের অপেক্ষা করতে হবে। তিনি আরো বলেন, একেবারে ভুয়া-ভিত্তিহীন কতগুলো মামলা। এসব মামলার যে অভিযোগ, তাতে উনার কোনো ভূমিকা ছিল না। আইনের অপব্যবহার এবং অপপ্রয়োগ করে তাকে আসামি করা হয়েছে।
অপর আইনজীবী জয়নুল আবেদীন বলেছেন,অন্য মামলাগুলোতে জামিন আবেদনের প্রক্রিয়া শুরু করবেন। সরকার তো সবসময় বাধা দেয়ার চেষ্টা করবে। তবে আমরা আশা করছি, আইনগতভাবে আমরা সব বাধা অতিক্রম করতে পারব
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীদের বক্তব্য:
অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেছেন, সচরাচর কোনো আসামির যদি একাধিক মামলা থাকে, তাহলে সেসব মামলায় জামিন না পাওয়া গেলে মুক্তি পাওয়া যায় না। খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে আরও মামলা রয়েছে। সেগুলো থেকে জামিন নেয়ার পরই তিনি মুক্তি পাবেন। দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেন, এখন আপিল বিভাগের এ রায় পাওয়ার পর আমরা হাইকোর্ট বিভাগে যাব।
প্রসঙ্গত, বিদেশ থেকে জিয়া অরফানেস ট্রাস্টের নামে আসা দুই কোটি ১০ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে দুদকের এই মামলা দায়ের করা হয়েছিল জরুরি অবস্থার মধ্যে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই। ঢাকার পঞ্চম বিশেষ জজ আখতারুজ্জামান গত ৮ ফেব্রæয়ারি এ মামলার রায়ে খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের সাজা দেন। মূল রায়সহ ১২২৩ পৃষ্ঠার আপিল আবেদনে ৪৪টি যুক্তি দেখিয়ে খালেদা জিয়ার খালাস চাওয়া হয়।
খালেদা জিয়ার জামিননামা দাখিল
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জামিননামা দাখিল করেছেন তার আইনজীবী। গতকাল বুধবার ঢাকা মহানগর জুডিশিয়াল মুন্সিখানায় এ জামিননামা দাখিল করেন আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া ও জয়নাল আবেদীন মেজবাহ। তবে আপিল বিভাগের আদেশ না পাওয়া জামিননামাটি আদালতে উপস্থাপন করা হয়নি বলে সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন জুডিশিয়াল মুন্সিখানা শাখার পেশকার ওমর ফারুক চৌধুরী। তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার জামিননামা আমাদের শাখায় দাখিল করা হয়েছে। কিন্তু আপিল বিভাগের আদেশ না পাওয়া পর্যন্ত তা আমরা আদালতে উপস্থাপন করতে পারব না। আপিল বিভাগের আদেশ আসার পর আদালত অনুমতি দিলে আমরা তা কারাগারে পাঠাবো।
খালেদার জামিননামা দাখিল
প্রসঙ্গত, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে হাইকোর্টের দেয়া জামিন আদেশ বহাল রেখেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। একই সঙ্গে সাজার বিরুদ্ধে খালেদা জিয়ার দায়ের করা হাইকোর্টের আপিল আগামী ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে নিষ্পত্তি করার জন্য সংশ্লিষ্ট বেঞ্চকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।