Inqilab Logo

শুক্রবার, ০৫ জুলাই ২০২৪, ২১ আষাঢ় ১৪৩১, ২৮ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

‘ইমাম-মুয়াজ্জিন পীর-মাশায়েখ হত্যার বিচার হয় না কেন?’

সংখ্যালঘু হত্যা নির্যাতন হলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা

প্রকাশের সময় : ৮ এপ্রিল, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : পুরান ঢাকায় মসজিদের ভেতর মোয়াজ্জিন হত্যার দ্রুত বিচার শুরুর দাবিতে ওলামা-মাশায়েখ আইম্মাহ পরিষদ বাংলাদেশ ছাত্র খেলাফত গতকাল রাজধানীতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করছে।
এছাড়া বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের উদ্যোগে এক প্রতিবাদ সমাবেশ হয়েছে। এসব কর্মসূচিতে নেতৃবৃন্দ বলেছেন সংখ্যালঘু হত্যাকা-ের বিষয়ে দ্রুত বিচার শুরু করা হয় অথচ ঈমাম-মোয়াজ্জিন পীর-মাশায়েখ হত্যাকা-ের ঘটনাসমূহের কোনো বিচারই হচ্ছে না। এ কারণে হত্যাকারীরা বেশি আশকারা পাচ্ছে। নেতৃবৃন্দ মোয়াজ্জিন হত্যাসহ এসব হত্যাকা-ের দ্রুত বিচার শুরু করে দোষীদের গ্রেফতার করে কঠিন শাস্তি না দিলে রাজপথে আন্দোলনকে ডেকে আনা হবে।
ওলামা মাশায়েখ আইম্মাহ পরিষদ
মসজিদের ভেতর ইমাম-মুয়াজ্জিন হত্যাসহ বিশিষ্ট পীর-মাশায়েখদের হত্যার ঘটনার দ্বারা প্রমাণ হচ্ছে দেশে কোনো প্রশাসন নেই, মানুষের জান-মালের নিরাপত্তা নেই, মানুষের বেঁচে থাকার কোনে াগ্যারান্টি নেই। এসকল হত্যাকা-ের জন্যে সরকারই দায়ী। যে দেশে হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান হত্যা হলে দ্রুত বিচার কার্যকর করা হয় সেখানে আলেম-ওলামাদের অহেতুক হয়রানি করা হয়। কিন্তু আজ মসজিদের নিরীহ মুয়াজ্জিনকে হত্যা করা হয়েছে, বিগত সময়ে ইমাম ও পীর-মাশায়েখদের হত্যার বিচারের বিষয়ে সরকারের তৎপরতা নেই।
গতকাল দুপুর ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মুয়াজ্জিন মাওলানা বেলাল হোসাইন হত্যার বিচারের দাবিতে জাতীয় ওলামা-মাশায়েখ আইম্মাহ পরিষদ ঢাকা মহানগরের উদ্যোগে আয়োজিত মানববন্ধনে বক্তারা এসব কথা বলেন। জাতীয় ওলামা-মাশায়েখ আইম্মাহ পরিষদ ঢাকা মহানগরের আহ্বায়ক প্রিন্সিপাল মুফতি হাবিবুর রহমান মিছবাহ-এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আইম্মাহ পরিষদের কেন্দ্রীয় সদস্য সচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান অবিলম্বে মুয়াজ্জিন হত্যার সাথে জড়িত সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। মানববন্ধনে সংহতি জানিয়ে একাত্মতা ঘোষণা করে বক্তব্য রাখেন ইসলামী শ্রমিক আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সভাপতি মুহাম্মদ আশরাফ আলী আকন, ইসলামী আন্দোলন ঢাকা মহানগর সভাপতি অধ্যাপক হাফেজ মাওলানা এটিএম হেমায়েত উদ্দিন। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, সংগঠনের সদস্য সচিব মুফতি মুহিব্বুল্লাহ, মাওলানা ফখরুল ইসলাম, মুফতি জহির ইবনে মুসলিম, মুফতি সাঈদুর রহমান আরাবী, মাওলানা লোকমান হোসাইন জাফরী, মাওলানা ওয়াহিদুল আলম, হাফেজ মাওলানা আহমদুল্লাহ আমজাদ, মাওলানা সিরাজুল ইসলাম।
বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস
বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদ বলেছেন, দেশের মানুষ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে।  যে সমাজে একজন মুয়াজ্জিনকে মসজিদের ভিতরে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। সেখানে অন্যরা তো নিরাপত্তার আশাই করতে পারে না। হত্যার পর এখনো হত্যাকারীদের গ্রেফতার করতে না পারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ব্যর্থতার পরিচয়। এ হত্যার দায় সরকার এড়াতে পারে না। অতীতেও বিভিন্ন জায়গায় ইমাম, মুয়াজ্জিন ও পীর-মাশায়েখ হযরানি ও হত্যাকা-ের ঘটনা ঘটছে। সেগুলোর সুষ্ঠু বিচার না হওয়ার কারণে আবারও এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি। তিনি বলেন, অবিলম্বে হত্যাকারীদের গেফতার করে কঠিন শাস্তি দিতে হবে। যাতে অন্য কেউ এ ধরনের ঘটনা ঘটানোর সাহসও না পায়। তিনি তনু হত্যাসহ সকল হত্যাকা-ের বিচারের দাবি করেন। তিনি আরও বলেন, বাঁশখালীর গেন্ডামারা এলাকায় কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের প্রতিবাদে স্থানীয় জনতার মিছিলে পুলিশ গুলি করে মানুষ হত্যা করা হয়েছে। এসব হত্যাকা-ের ঘটনা তদন্ত করে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। অন্যথায় পরিণতি ভালো হবে না।
তিনি আজ বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস হবিগঞ্জ জেলার প্রশিক্ষণ মজলিসে প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন। জেলা সভাপতি মাওলানা আব্দুল্লাহ-এর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আনোয়ার আলীর পরিচালনায় আরও উপস্থিত ছিলেন  কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আব্দুল আজীজ, জেলা সহ-সভাপতি মাওলানা আব্দুল হামিদ, মাওলানা আমীমুল এহসান মাসুম, সহ-সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আব্দুল্লাহ বিন নূরী, মাওলানা নোমান আহমদ, সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস নোমান, বায়তুলমাল সম্পাদক মাওলানা আতিকুর রহমান প্রমুখ।
ছাত্র খেলাফত
ঢাকায় মসজিদের ভেতর মুয়াজ্জিন হত্যার প্রতিবাদে গতকাল সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে ইসলামী ছাত্র খেলাফত বাংলাদেশ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে। মানববন্ধনে নেতৃবৃন্দ বলেছেন, রাজধানীতে মসজিদে প্রবেশ করে প্রকাশ্যে যারা মুয়াজ্জিনকে হত্যা করেছে তারা ইসলামী ব্যক্তিদের বিনাশে মাঠে নেমেছে। আর এর পেছনে রয়েছে সা¤্রাজ্যবাদ, ইহুদিবাদ ও জঙ্গিবাদের সম্পৃক্ততা রয়েছে। কাজেই মুয়াজ্জিন হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় আনতে হবে। তা না হলে ছাত্র খেলাফত রাজপথে গণআন্দোলন গড়ে তুলবে।
সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি মো. খোরশেদ আলমের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক মু. আবুল হাসিমের সঞ্চালনায় এতে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন, ইসলামী ঐক্যজোটের ভাইস চেয়ারম্যান মাওলানা যুবায়ের আহমদ। আরও বক্তব্য রাখেন ছাত্র খেলাফত বাংলাদেশ-এর সিনিয়র সহ-সভাপতি আবু জাফর, সাংগঠনিক সম্পাদক মহিউদ্দিন, কেন্দ্রীয় ও মহানগর নেতৃবৃন্দ।




 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ‘ইমাম-মুয়াজ্জিন পীর-মাশায়েখ হত্যার বিচার হয় না কেন?’
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ