Inqilab Logo

শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জড়িতদের কঠিন শাস্তি দিতে হবে : ইসলামী নেতৃবৃন্দ

প্রশ্নপত্রে ইসলাম অবমাননার দায় সরকার এড়াতে পারে না

প্রকাশের সময় : ৮ এপ্রিল, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : এইচএসসি’র প্রশ্নপত্রে অত্যন্ত সুকৌশলে ইসলামের অবমাননা ও পীর-মাশায়েখগণের চরিত্র হননের অপচেষ্টার তীব্র প্রতিবাদ করেছেন বিভিন্ন ইসলামী নেতৃবৃন্দ ও পীর- মাশায়েখগণ। তারা বলেন, পাঠ্যপুস্তক ও প্রশ্নপত্র প্রণয়নের দায়িত্ব এমন লোকদের উপরই দেওয়া হয়েছে যাদের ইসলামের সাথে কোনো সম্পৃক্ততা নেই বরং বৈরি মনোভাব পোষণ করে। তারা বলেন, বাংলা প্রশ্নপত্রের এ অপকর্মের দায় শিক্ষামন্ত্রী এড়াতে পারেন না। নেতৃবৃন্দ এ কর্মের সাথে জড়িতদের চিহ্নিত করে তাদের অপসারণসহ কঠিন শাস্তির জোর দাবি জানান। অন্যথায় সরকারকে কঠিন পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হবে।
খেলাফত আন্দোলন ঢাকা মহানগর
বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন ঢাকা মহানগর নেতৃবৃন্দ সম্প্রতি এইচএসসি পরীক্ষায় বাংলা প্রথমপত্রের প্রশ্নপত্রে দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের ধর্ম ইসলাম ও এর আনুষঙ্গিক বিভিন্ন বিষয়ের ব্যাপারে কটাক্ষপূর্ণ ও ব্যাঙ্গাত্মক প্রশ্ন সংযোজনের ঘটনায় তীব্র নিন্দা, ক্ষোভ ও প্রতিবাদ জানিয়ে বলেছেন, যে বা যারা এ ধরনের প্রশ্নপত্র প্রণয়নের সাথে জড়িত তাদের খুুঁজে বের করে গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। তারা বলেন, এ থেকে এটা স্পষ্ট যে, এ রকম প্রশ্নপত্র প্রণয়ন কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয় বরং এদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষকে কোণঠাসা করার মতো এক ভয়ানক ও সুদূর প্রসারী ষড়যন্ত্রের অংশমাত্র।
নেতৃবৃন্দ হুঁশিয়ার করে বলেন, বর্তমান সরকারের ঘাড়ে সওয়ার হয়ে যেসব নাস্তিক-মুরতাদ ও ইসলামবিদ্বেষীরা ইসলাম, মুসলমান এবং এদেশের স্বাধীনতা-স্বকীয়তার বিরুদ্ধে একের পর এক ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে জনগণ অবশ্যই রুখে দাড়াবে। তখন উদ্ভূত পরিস্থিতির দায় তাদেরকেই বহন করতে হবে।
জমিয়ত ঢাকা মহানগর নেতৃবৃন্দ
এইচইসসি’র প্রশ্নপত্রে অত্যন্ত সুকৌশলে ইসলামের অবমাননা ও পীর-মাশায়েখগণের চরিত্র হননের অপচেষ্টাকে মারাত্মক দৃষ্টতা উল্লেখ করে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ ঢাকা মহানগরীর নেতৃবৃন্দ বলেছেন, সরকারের গুরুত্বপূর্ণ নানা দায়িত্বে গাপটি মেরে থাকা কতিপয় ইসলামবিদ্বেষীদের অব্যাহত কুরআন, হাদিস ও দ্বীন-ধর্ম নিয়ে বিষোদগার রহস্যপূর্ণ। কার ছত্রচ্ছায়ায় বাংলাদেশের হাজার বছরের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিকে বিনষ্ট ও শান্তিপূর্ণ পরিস্থিতিকে গোলাটে করার জন্য ফেরাউনের প্রেতাত্মারা এ ষড়যন্ত্র করছে, তা এখন খতিয়ে দেখার সময় এসেছে। নেতারা এইচএসসি পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে ইসলামের অবমানার সাথে সংশ্লিষ্ট সকলের অপসারণসহ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়ে বলেন, ইসলামের বিরুদ্ধে এ ষড়যন্ত্রের দায় শিক্ষামন্ত্রী এড়াতে পারেন না। এটা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ব্যর্থতা।
গতকাল বিকালে পল্টনস্থ দলীয় কার্যালয়ে মহানগর জমিয়তের বিভিন্ন দায়িত্বশীলদের এক জরুরি বৈঠকে নেতৃবৃন্দ এসব কথা বলেন। মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বক্তৃতা করেন, মাওলানা মতিউর রহমান গাজীপুরী, মাওলানা তোফায়েল গাজালি, হাফেজ ওমর ফারুক, বোরহান উদ্দীন প্রমুখ।
কসরে হাদী খানকা শরীফ
প্রশ্নপত্রে ইসলামবিদ্বেষী প্রশ্ন, সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও প্রশ্ন প্রণয়নকারীদের সুদূর প্রসারী পরিকল্পনার অংশ। বর্তমান প্রশাসনের মধ্যে ঘাপটি মেরে থাকা নাস্তিক ব্রা‏‏হ্মণ্যবাদী ও জঙ্গিবাদীদের কাজ এরাই হরহামেসা পীর, বুজুর্গ, ওলী-আল্লাহদের বিরুদ্ধে বক্তব্য রেখে আসছে এবং পীর-দরবেশ ও খেলাফত আন্দোলন নিয়ে উস্কানি দিচ্ছে। তারা জানে যে, আধুনিক শিক্ষা সিলেবাসে মানুষকে ধর্মবিদ্বেষী নাস্তিক বানায়। এ পরিস্থিতিতে তিনি বর্তমান শিক্ষার পাঠ্যসূচিতে ধর্মীয় মূল্যবোধ ও চেতনা সমৃদ্ধ হওয়া দরকার যাতে ছাত্ররা উত্তম চরিত্রবান ও দেশপ্রেমিক হয়ে গড়ে উঠতে পারে। নচেৎ ইলামবিরোধী শিক্ষাব্যবস্থা নাগরিকদের নাস্তিক বানিয়ে দেশকে ধ্বংষের শেষ সীমানায় নিয়ে তাদের প্রভু ব্রাহ্মণ্যবাদ, ইহুদি, খ্রিষ্টান ও কমনিস্টদের অধীনে ঢুকিয়ে দিবে। কসরে হাদী খানকা শরীফের খলিফা শাহ্ সূফী সৈয়দ আবদুল হান্নান আল হাদী এসব কথা বলেছেন। তিনি প্রশ্নপত্রের মতো সকল ইসলাম ও দেশদ্রোহীদের খুঁজে বের করে অভিলম্বে গ্রেফতার করে শাস্তির ব্যবস্থা করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
জমিয়তের উলামায়ে ইসলাম
জমিয়তের সহ-সভাপতি মাওলানা আব্দুল রব ইউসুফী বলেছেন, আমাদের জাতীয় শিক্ষা ব্যবস্থার পুরোটাই ঢেলে সাজানো হয়েছে ইসলামবিদ্বেষ দিয়ে। বর্তমান শিক্ষানীতিকে হিন্দুত্বমুখী করে ঢেলে সাজানো হয়েছে। পাঠ্যপুস্তক প্রণয়নের দায়িত্বও এমন লোকদের দেওয়া হয়েছে। বোর্ড পরিচালন পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ এবং প্রশ্নপত্র তৈরির দায়িত্বও ওই আকিদা বিশ্বাসের লোকদের হাতেই সমর্পণ করা হয়েছে। পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের চেয়ারম্যান নারায়ণচন্দ্র পাল এবং পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক শ্রীকান্ত কুমার চন্দ্রের মতো এমন বহুলোকই সংগ্রহ করা হয়েছে শিক্ষানীতি বাস্তবায়নের জন্য। তিনি বলেন, এইচএসসি পরীক্ষার বাংলা প্রথম পর্বের প্রশ্নেপত্রেও উল্লিখিত যুবক এমদাদ এবং লেংটা বাবার কবর নিয়ে গল্প তৈরি করা হয়েছে। এসব কারণে ধর্ম অবমাননার জন্য সরকারকে কঠিন পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হবে। মাও: ইউসুফী বলেন, মুলমানরা এক আল্লাহর ইবাদত করে, একাধিক দেবতা বা কোনো বস্তু অথবা স্বহস্তে তৈরি কোনো কিছুর পূজা করে না। এরপরেও যারা হিন্দু-মুসলমানের মধ্যে মিলনের অন্তরায় খুঁজে পান না তারা হয়তো জ্ঞানহীন মূর্খ অথবা জ্ঞানপাপী। শিক্ষামন্ত্রীকে স্বপদে বহাল রেখে এদেশের ইসলাম ও মুসলমানদের বিরুদ্ধে পরিচালিত ষড়যন্ত্র বন্ধ করা যাবে না। সরকারের উচিত অবিলম্বে ইসলামবিদ্বেষী জড়িতদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা। শিক্ষামন্ত্রীও এ সবের দায় এড়াতে পারে না। জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ এক বৈঠকে সভাপতির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। বৈঠকে উপস্থিত মাওলানা মকবুল হাসান, মাওলানা  উবায়দুল্লাহ ফারুক প্রমুখ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: জড়িতদের কঠিন শাস্তি দিতে হবে : ইসলামী নেতৃবৃন্দ
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ