Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

লম্পট শিক্ষক রবিউলের বিরুদ্ধে নির্যাতিত ছাত্রীর মায়ের মামলা

মিলছে আরো ভয়াবহ তথ্য

| প্রকাশের সময় : ৯ মে, ২০১৮, ১২:০০ এএম

শিবচর (মাদারীপুর) উপজেলা সংবাদদাতা : বিভিন্ন মিডিয়ায় সংবাদ প্রকাশের পর অবশেষে পুলিশের উদ্যোগে মাদারীপুরের শিবচরের উমেদপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের লম্পট ধর্ষক শিক্ষক রবিউল ইসলামের বিরুদ্ধে দশম শ্রেনীর এক নির্যাতিত ছাত্রীর মা মামলা দায়ের করেছেন। মঙ্গলবার মধ্যরাতে শিবচর থানায় মামলাটি দায়ের হয়। মামলার এক মাত্র আসামী লম্পট ওই শিক্ষক প্রায় দেড় মাস যাবৎ পলাতক রয়েছে। মায়ের সাথে মামলা করতে গিয়ে ওই শিক্ষার্থী বারবার কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশ কর্মকর্তারা শিক্ষক রবিউলের বিরুদ্ধে একাধিক শিক্ষার্থীর সাথে অনৈতিক সম্পর্কে বাধ্য করার তথ্য পেয়েছেন।
একাধিক সূত্রে জানা যায়, উপজেলার উমেদপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক রবিউল ইসলাম তরুন শিক্ষক। ৫ম ও ৮ম শ্রেনীতে বৃত্তিপ্রাপ্ত একই বিদ্যালয়ের এক দরিদ্র মেধাবী সুন্দরী ছাত্রীর সাথে সে ৭ ম শ্রেনীতে পড়–য়া অবস্থায় বিশেষ খেয়াল রাখতো। দরিদ্র হওয়ায় সহযোগিতার কারনে ওই ছাত্রী সহজেই রবিউলের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়ে। তার স্ত্রী অন্য উপজেলায় চাকুরী করার সুবাদে তার বাসায় নির্বিঘেœই সবাই যাতায়াত করতো। ৮ম শ্রেনীতে পড়–য়া অবস্থায় একদিন রবিউল মেয়েটিকে জোরপূর্বক ধর্ষন করে ভিডিও করে রাখে। এরপর থেকেই সুযোগ বুঝেই ভিডিও অন্যদের দেখানোর ভয় দেখিয়ে ও বিয়ের প্রলোভনে মেয়েটির সাথে নিয়মিত শারীরিক সম্পর্ক গড়ে। একাধিকবার গর্ভপাতের ঘটনাও ঘটায়। কিন্তু ৬ মাস-১ বছর আগে থেকে মেয়েটি অন্য ছাত্রীদের বাসায় আনা দেখে আপত্তি করে। মেয়েটি এক পর্যায়ে জানতে পারে বিদ্যালয়ের আরো বেশ কয়েকটি শিক্ষার্থীর সাথে শিক্ষক রবিউলের একই ধরনের সম্পর্কে বাধ্য করছে। এতে সে সম্পর্ক ছিন্ন করতে চাইলে তাকে বিভিন্ন ভয়-ভীতি আবারও ধর্ষন করে। এভাবে ২০১৮ সালের ফেব্রæয়ারি পর্যন্ত রবিউল ওই ছাত্রীকে ধর্ষন করেছে। মেয়েটি বর্তমানে দশম শ্রেনীতে অধ্যায়নরত। সম্প্রতি তাদের এই সম্পর্কের অপব্যাখা দিয়ে মেয়েটির নামে কুৎসা ছড়ায় রবিউল ছাত্র-ছাত্রী ও শিক্ষকদের মাঝে। মেয়েটি বাধ্য হয়ে ওই শিক্ষকের বিচারের দাবীতে গত ১৩ মার্চ ওই শিক্ষার্থী বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটি বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এরপরই বের হয়ে আসে একের পর এক অপকর্মর তথ্য। বের হয় একাধিক মেয়ের সাথে আপত্তিকর ছবি অডিও রেকর্ডিং। এরপর ৯ম ও দশম শ্রেনীর আরও দুই শিক্ষার্থীর পরিবারের পক্ষ থেকেও নাম প্রকাশে না করার শর্তে শিক্ষক রবিউলের বিরুদ্ধে শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ তুলেছে। এ নিয়ে বিভিন্ন মিডিয়ায় সংবাদ প্রচার হলে নড়েচড়ে উঠে প্রশাসন ও পুলিশ। গত ২ দিন পুলিশি অনুসন্ধানের পর গতকার মঙ্গলবার মধ্যরাতে শিক্ষক রবিউলকে আসামী করে শিবচর থানায় মামলা করেন দশম শ্রেনী পড়–য়া ওই ছাত্রীর মা। শিবচর থানার ওসি জাকির হোসেন, পরিদর্শক (তদন্ত) শাজাহান মিয়া, পরিদর্শক(অপারেশন) শাজাহান মিয়া দীর্ঘ সময় মেয়েটিকে কাউন্সিলিং এর মাধ্যমে স্বাভাবিক করার চেষ্টা করেন। তারা দোষীকে গ্রেফতার ও শাস্তির আশ^াস দেন। তবুও মেয়েটির চোখে বইছিল অশ্রæধারা।
থানায় বসে ধর্ষনের শিকার স্কুল ছাত্রী বলেন, পুলিশ নিজে থেকেই আমাদের বাড়ি ও স্কুলে গিয়ে ঘটনার খোঁজখবর নিয়েছে। আমি ওনার বিচার চাই, দ্রæত গ্রেফতার চাই।
মামলার বাদী মেয়েটির মা বলেন, সে আমার মেয়েসহ অনেক মেয়ের জীবন নষ্ট করে দিয়েছে। ওকে দ্রæত গ্রেফতার করুক।
উমেদপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রোকনুজ্জামান বলেন, বিভিন্ন মিডিয়ায় সংবাদটি প্রচারের পর পুলিশ নিজে থেকেই সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। তাদের তৎপরতাতেই দরিদ্র মেয়েটির মা মামলা করার সাহস পেয়েছে। এই শিক্ষক রবিউলের জন্য আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থাই কলুসিত হয়েছে। দ্রæত ওকে গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি চাই।
শিবচর থানার ওসি জাকির হোসেন বলেন, এই মেয়েটি যে তথ্য দিয়েছে তা লোমহর্ষকর। প্রেমের ফাদে ফেলে ধর্ষনের ভিডিও করে শতাধিক সময় তার সাথে শারীরিক সম্পর্ক করেছে। এছাড়াও আরো ঘটনাও রয়েছে। মামলা হয়েছে। গ্রেফতারে জোরালো অভিযান শুরু হয়েছে।

 



 

Show all comments
  • Niloy ৯ মে, ২০১৮, ১:৪২ এএম says : 0
    Please arrest him and let girl decide what punishment she wants, and accordingly punish him.
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ