Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪, ০২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৭ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

আর্টিকেল-১৯’র প্রতিবেদন- বাকস্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ বেশি ২০১৭ সালে

| প্রকাশের সময় : ৪ মে, ২০১৮, ১২:০০ এএম

দেশে গত পাঁচ বছরে (২০১৩ সাল থেকে) বাকস্বাধীনতায় হস্তক্ষেপের সবচেয়ে বেশি ঘটনা ঘটেছে ২০১৭ সালে। এ বছর বাকস্বাধীনতায় ৩৩৫টি হস্তক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ৭০ শতাংশ ঘটনাই ঘটেছে তৃণম‚ল পর্যায়ে কর্মরত সাংবাদিকদের সঙ্গে। যুক্তরাজ্যভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন আর্টিকেল-১৯ এর ‘মতপ্রকাশ’ বিষয়ক বার্ষিক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস উপলক্ষে বুধবার নিজেদের ওয়েবসাইটে এ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সংগঠনটি। প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে ২০১৭ সালে আইনি প্রক্রিয়ায় হয়রানির শিকার হওয়ার মোট ঘটনা ঘটেছে ১৬৯টি, যা ২০১৩ সালে ছিল ৩৩টি। গতবছর আইনি প্রক্রিয়ায় শুধু সাংবাদিক হয়রানির ঘটনা ঘটেছে ৭৬টি। এর মধ্যে মানহানির অভিযোগে ৩৫টি, মিথ্যা তথ্যের ওপর ভিত্তি করে ১৯টি, রাষ্ট্র বা কোনো বিশেষ ব্যক্তির সামাজিক মর্যাদা ক্ষুন্ন হওয়ার অভিযোগে ১৪টি, উসকানির অভিযোগে তিনটি, অশ্লীলতার অভিযোগে দু’টি এবং ধর্মীয় অনুভ‚তিতে আঘাত হানার অভিযোগে দু’টি মামলা হয়েছে। ২০১৭ সালে সাংবাদিকদের ওপর শারীরিক হামলার ঘটনা কমেছে। গতবছর সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে ১১৩টি, যা ২০১৩ সালে ছিল ১৭৩টি। ২০১৭ সালে একজন সাংবাদিক হত্যা, ২৮ জন মারাত্মক, ৭৫ জন সাধারণ শারীরিক আঘাত এবং ১০ জন সাংবাদিক অপহরণের শিকার হয়েছেন বলে উল্লেখ করা হয় প্রতিবেদনে। গতবছর দৈনিক সমকালের সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুর উপজেলার প্রতিনিধি আব্দুল হাকিম শিমুলকে হত্যা করা হয়।
‘মুপ্রকাশ’ বিষয়ক বার্ষিক এ প্রতিবেদনে বলা হয়, গণমাধ্যম কর্মীদের প্রতি সংঘটিত এসব অপরাধের শতকরা ৯৩ ভাগের ক্ষেত্রে রাষ্ট্র জড়িত নয় (নন স্টেট) এবং শতকরা ৪৯ ভাগ ঘটনায় ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মী ও অন্যদের সম্পৃক্ততা রয়েছে।
২০১৭ সালে ৬৫টি মানহানি মামলা, আইসিটি অ্যাক্টের ৫৭ ধারায় ৭৬টি, দুইটি আইন বহির্ভ‚ত আটকাদেশ এবং বিভিন্ন রকমের হয়রানিমূলক মামলায় ২৪টি ঘটনা রেকর্ড করা হয়েছে।
গণমাধ্যম ও মানবাধিকারকর্মী সংক্রান্ত অপরাধের বিচার প্রক্রিয়াজনিত কার্যক্রম যেমন- তদন্ত, অভিযোগ গঠন ও গ্রেপ্তারে ধীরগতির কথাও জানানো হয় প্রতিবেদনে।
প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, নারী সাংবাদিকরা তথ্যপ্রযুক্তি উদ্ভ‚ত ঝুঁকির সম্মুখীন হন। ক্ষমতাসীন দলের স্থানীয় পর্যায়ের নেতাকর্মী, আইনশৃংঙ্খলা বাহিনীর সদস্য এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে সরকারি কর্মকর্তারা সাংবাদিকদের ওপর চড়াও হন বলেও তথ্য রয়েছে প্রতিবেদনে।
বাকস্বাধীনতার ক্ষেত্রে এ ধরনের আঘাত গণমাধ্যমকর্মীদের স্বাধীনভাবে কাজ করার ক্ষেত্রকে সঙ্কুচিত করে এবং তা চ‚ড়ান্তভাবে জনগণের মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে বাধাগ্রস্ত করে বলে মনে করে আর্টিকেল-১৯।
আর্টিকেল-১৯ এর বাংলাদেশ এবং দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক তাহমিনা রহমান বলেন, ‘আমাদের এই গবেষণাধর্মী প্রতিবেদনে বাংলাদেশের বাকস্বাধীনতায় বিরাজমান প্রকৃত চিত্র উঠে এসেছে, যা বিগত সময়ের তুলনায় অনেক বেশি উদ্বেগজনক। এটা নির্বাচনের বছর বিবেচনায় আমরা বিষয়টিকে অণ্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করছি’।
বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবসে আন্তর্জাতিক মানদÐের আলোকে সব অপরাধের বিচার কার্যকর করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহŸান জানিয়েছে সংগঠনটি। সূত্র : বিডিনিউজ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সাংবাদিক

১৫ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ