পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
মোঃ আবু শহীদ ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) থেকে : উৎপাদন যন্ত্রের অভাবে ৭ মাস থেকে পুরোপুরি ভাবে পাথর উৎপাদন বন্ধ রয়েছে দেশের একমাত্র উৎপাদনশীল দিনাজপুরের মধ্যপাড়া পাথর খনি। পাথর উৎপাদন বন্ধ থাকায় সরকারকে লোকসান গুনতে হচ্ছে কোটি কোটি টাকা। বেকার হয়ে পড়েছে খনিতে কর্মরত ৭শ’ শ্রমিক। গতকাল (বুধবার) মধ্যপাড়া খনিতে গিয়ে দেখা যায়, পাথর ইয়ার্ডে কোন পাথর নেই। নেই কোন কোলাহল। দেখে মনে হয়, যেন পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে দেশের সম্ভাবনাময় এই পাথর খনিটি। এক সময় এই পাথর খনিকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছিল মধ্যপাড়া শহর। এখন পাথর না থাকায় আসা যাওয়া নেই বড় বড় ট্রাক, ব্যবসায়ী ও ঠিকাদারদের। কাজ না থাকায় আসছে না শ্রমিকেরা। ফলে জনশূন্য হয়ে পড়েছে মধ্যপাড়ার কঠিন শিলা প্রকল্পের এই জনপদ।
খনি সূত্রে জানা গেছে, উৎপাদন যন্ত্রের অভাবে গত ২০১৫ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর থেকে পুরোপুরি ভাবে পাথর উৎপাদন বন্ধ করে দেয়, খনিটির উৎপাদনের দায়িত্বে থাকা ঠিকাদারী কোম্পানী জার্মানিয়া ট্রেস্ট কনসোর্টিয়াম (জিটিসি)। খনি কর্তৃপক্ষ জানায়, প্রয়োজনীয় ১৩০ প্রকার উৎপাদন যন্ত্র বিদেশ থেকে আমদানি করার জন্য গত ২০১৫ সালের মে মাসে ৮৫ কোটি টাকার ৩৬টি এলসি খোলা হয়েছে। যা ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান জার্মানিয়া ট্রেস্ট কনসোর্টিয়াম (জিটিসি) বিদেশ থেকে আমদানি করা মাত্র মূল্য পরিশোধ করা হবে। কিন্তু এখন পর্যন্ত ৭মাস পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান প্রয়োজনীয় যন্ত্র আমদানি করতে পারেনি। যার ফলে খনিটি পুনরায় উৎপাদনে যেতে পারছে না।
মধ্যপাড়া গ্রানাইট মাইনিং কোম্পানি লিমিটেড-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ নওশাদ ইসলাম বলেন, গত ২০০৭ সালের ২৫ মে থেকে মধ্যপাড়া পাথর খনিতে বাণিজ্যিক ভাবে পাথর উৎপাদন শুরু হয়। প্রথম অবস্থায় প্রতিদিনের উৎপাদন ২ হাজার থেকে ২ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন হলেও ২০১২ সালে এসে প্রতিদিনের উৎপাদন নেমে আসে মাত্র ৮০০ মেট্রিক টনে। যার ফলে মধ্যপাড়া খনি কর্তৃপক্ষ, খনিটির উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে গত ২০১৩ সালের ২ সেপ্টেম্বর, বেলারুশ ভিত্তিক কোম্পানী জার্মানিয়া ট্রেস্ট কনসোর্টিয়াম (জিটিসি) এর সাথে চুক্তি করে। চুক্তি অনুযায়ী জিটিসি গত ২০১৪ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে পাথর উৎপাদন শুরু করে। এতে খনিটির উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়ে প্রতিদিনের উৎপাদন সাড়ে ৪ হাজার মেট্রিক টনে দাঁড়ায়। কিন্তু উৎপাদন যন্ত্রের অভাবে ২০১৫ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর থেকে খনিটির উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। সদ্য দায়িত্ব নেওয়া ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরও বলেন যে, সম্ভাবনাময় এই খনিকে একটি লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।
মধ্যপাড়া গ্রানাইট মাইনিং কোম্পানী মহা-ব্যবস্থাপক (উৎপাদন, অপারেশন) মীর আব্দুল হান্নান জানায়, চুক্তি অনুযায়ী প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান আমদানি করবে। মধ্যপাড়া খনি কর্তৃপক্ষ, আমদানিকৃত যন্ত্রের মূল্য পরিশোধ করবে। চুক্তি অনুযায়ী গত ২০১৫ সালের মে মাসের ১৭ তারিখ হতে ২৩ তারিখের মধ্যেই ১২৯ প্রকার খুচরা এবং ভারি যন্ত্র আমদানির জন্য ২শ’ ৪০ কোটি টাকার ৩৬টি এলসি খোলা হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত সে যন্ত্র খনিতে এসে পৌঁছায়নি।
এ বিষয়ে জিটিসি’র মহা-ব্যবস্থাপক (প্রশাসন) মোঃ জাবেদ সিদ্দিকীর সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বিদেশ থেকে প্রয়োজনীয় সকল যন্ত্র আমদানি করা হয়েছে যা আগামী ১ থেকে ২ সপ্তাহের মধ্যে খনিতে এসে পৌঁছাবে।
তিনি বলেন, খনিতে পাথর উত্তোলন বন্ধ থাকায় শ্রমিক-কর্মচারীদের বসিয়ে রেখে বেতন-ভাতা পরিশোধ করতেও কোম্পানিটির লাখ লাখ টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে। তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, আগামী ১ মাসের মধ্যেই পুনরায় পুরোদমে শুরু হবে পাথর উৎপাদন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।