Inqilab Logo

সোমবার ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সউদী সফরে পম্পিওর বার্তা- যথেষ্ট হয়েছে, বন্ধ করুন

প্রকাশের সময় : ১ মে, ২০১৮, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১২:০৯ এএম, ১ মে, ২০১৮

টাইমস অব ইন্ডিয়া : সউদী আরব যখন কাতার সীমান্ত বরাবর পরিখা খনন ও কাছেই পারমাণবিক বর্জ্যরে আঁস্তাকুড় তৈরির কথা বিবেচনা করছে সে সময় নয়া মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পিও তার প্রথম বিদেশ সফরে রিয়াদে উপস্থিত হয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ কূটনীতিক সউদী আরবের জন্য একটি সাধারণ বার্তা নিয়ে এসেছেন। তা হল ঃ যথেষ্ট হয়েছে, বন্ধ করুন।
সাংবাদিকদের বিভিন্ন বৈঠক সম্পর্ক ব্রিফিং করেন, যুক্তরাষেট্রর পররাষ্ট্র দফতরের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এমন এক কর্মকর্তার মতে, উপসাগরীয় সহযোগিতা পরিষদের (জিসিসি) মধ্যকার ঝগড়ায় ওয়াশিংটনের ধৈর্য হ্রাস পাচ্ছে। পম্পিও তার সউদী প্রতিপক্ষ আদেল আল-জুবেইরকে বলেছেন যে এ বিরোধের অবসান হওয়া দরকার। তিনি কাতার অবরোধ বন্ধ ও ইয়েমেন সংকট থেকে বেরিয়ে আসার আহবান জানান। সন্তাসবাদে অর্থ প্রদান, ইরানের সাথে ঘনিষ্ঠতা ও ভিন্œ মতাবলম্বীদের আশ্রয় দেয়ার অভিযাগে গত বছরের জুনে গ্যাস সম্পদে সমৃদ্ধ ক্ষুদ্র দেশ কাতারের বিরুদ্ধে সউদী আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের নেতৃত্বাধীন ৪ দেশীয় (বাহরাইন ও মিসরসহ) আরব জোট নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। দু’পক্ষের মধ্যকার বৈরি মনোভাব তাদের সম্পর্ককে আরো তিক্ত করে তুলেছে।
পম্পিওর পূর্বসূরী রেক্স টিলারসন তার মেয়াদের বেশিরভাগ সময়ই এ বিরোধ নিষ্পত্তির চেষ্টায় ব্যয় করে ব্যর্থ হন। ওয়াশিংটনে শক্তির বিন্যাসের আগ্রহী পর্যবেক্ষক সউদীদের জানা ছিল যে ট্রাম্পের সাথে টিলারসনের সম্পর্কে টানাপড়েন আছে। বিশেষ করে কাতারের সাথে বিরোধের প্রথম দিকে ট্রাম্প সউদীদের পক্ষই নিয়েছিলেন। তাই তারা তাকে উপেক্ষা করে। কিন্তু পম্পিও ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ এবং সে কারণে অনেক বেশি প্রভাবশালী ব্যক্তি। কাতারের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রায় ১১ মাসে দোহা ওয়াশিংটনে খুশি রাখার অভিযানে কোটি কোটি ডলার ব্যয় করে। তার ফল দেখা যায় এ মাসে কাতারের আমির তামিম বিন হামাদ আল-সানির ওয়াশিংটন সফরকালে। ওভাল অফিসে ট্রাম্পের সাথে তার বৈঠক কালে ট্রাম্প কাতারের প্রতি জোরালো সমর্থন ব্যক্ত করেন।
শনিবার বিমান বন্দরে অনুষ্ঠিত বৈঠকে পম্পিও আল-জুবেইরকে, রাতে যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানকে এবং রোববারের বৈঠকে বাদশাহ সালমানকেও একই বার্তা দিতে এসেছিলেন।
ইরানকে মোকাবেলা, ইরাক ও সিরিয়াকে স্থিতিশীল, ইসলামিক স্টেটের সর্বশেষ গ্রুপকে পরাজিত এবং ইয়েমেনে ভয়াবহ গৃহযুদ্ধ অবসানকে যুক্তরাষ্ট্র ক্রমবর্ধমান জরুরি অগ্রাধিকার হিসেবে দেখছে যেগুলো আরব দেশগুলোর ঐক্যবদ্ধ ও বলিষ্ঠ সাড়া ছাড়া পূর্ণভাবে মোকাবেলা করা সম্ভব নয়।
পম্পিও সেদিনই রিয়াদে আসেন যেদিন ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীরা সউদী আরবের দক্ষিণ প্রদেশ জিযানে ৮টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে যাতে এক ব্যক্তি নিহত হয়। এ ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ইয়েমেনে রক্তাক্ত যুদ্ধের নির্দশন যা এ অঞ্চলের জন্য ক্রমবর্বমান হুমকি।
ইয়েমেনে বিরাট মানবিক বিপর্যয় ক্যাপিটল হিলে এমন ব্যাপক উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে যে প্রভাবশালী সিনেটররা সউদী আরবে অস্ত্র বিক্রয়ে নিষেধাজ্ঞা আরোপ বিষয়ে আলোচনা করছেন। এটা সউদী আরবের বিভিন্ন বিষয়ে মার্কিন প্রশাসনের অগ্রাধিকার নীতিকে ব্যাহত করবে যেমন অস্ত্র বিক্রি বৃদ্ধি, সিরিয়াতে স্থিতিশীলতা বৃদ্ধিতে সউদী আরবের অধিকতর ভ‚মিকা পালনের চেষ্টা, বিরোধিতা ইত্যাদি
ইয়েমেনের বন্দরগুলোতে অবরোধসহ বিমান হামলায় লক্ষ্যবস্তু নির্ধারণে ব্যর্থতা ইয়েমেনে মানবিক পরিস্থিতির অবনতি ঘটিয়েছে। পম্পিও শনিবার আর-জুবেইরকে বলেন, ইয়েমেনে জ¦ালািনর পাশাপাশি মানবিক ও বাণিজ্যিক সামগ্রী অবশ্যই সহজে প্রবেশ করতে দিতে হবে।
পম্পিও ইরানের সাথে পারমাণবিক চুক্তির বিষয় আলোচনা করতেও মধ্যপ্রচ্যে এসেছিলেন । অধিকাাংশ পর্যবেক্ষক মনে করেন যে এ আলোচনার প্রেক্ষিতে ট্রাম্প ইরানের সাথে পারমাণবিক চুক্তি বিষয়ে তার স্বঘোষিত ১২ মে তারিখের সিদ্ধান্ত নেবেন যে চুক্তিকে তিনি এ যাবত কালের খারাপ চুক্তি বলে আখ্যায়িত করেছেন।
রোববার পম্পিও ইসরাইল যান। সেখানে তিনি ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনজামিন নেতানিয়াহুর সাথে আলোচনা করেন। তারপর তিনি বাদশাহ আবদুল্লাহর সাথে আলোচনাার জন্য আম্মান যান।
ট্র্ম্পা শপথ করেছেন যে পারমাণবিক চুক্তির যাই হোক না কেন, ইরান তার পারমাণবিক কর্মসূচি ফের চালু করবে না। ইরানি কর্মকর্তারা বরেছেন, তারা সেটা করতে পারেন যদি যুক্তরাষ্ট্র এ চুক্তি ত্যাগ করে। ট্রাম্প এও বলেছেন যে সিরিয়ায় মধ্যপ্রাচ্যের যুদ্ধ থেকে যুক্তরাষ্ট্র তার সৈন্য প্রত্যাহার করবে। তিনি অন্যদেশগুলোকে আরো দায়িত্ব বহনের আহবান জানিয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্র তার মিত্রদের অধিক কিছু করাতে রাজি করাতে পারুক আর না পারুক, সউদীদেরকে ইয়েমেন ও কাতার থেকে সরে আসা নিশ্চিত করতে পারবে না। ইরানিরা সিরিয়া তেকে প্রত্যাহারের ট্রাম্পের হুমকিকে কিভাবে দেখছে তাও স্পষ্ট নয়।
ট্রাম্পের সাথে উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-উনের শীর্ষ বৈঠকের প্রস্তুতি নিতে ট্রাম্পকে সাহায্য করতে সোমবারই পম্পিওর ওয়াশিংটনে ফেরার কথা। ইস্টার সপ্তহান্তে পম্পিও গোপন সফরে পিয়ংইয়ং-এ গিয়ে কিমের সাথে সাক্ষাত করেন।

 



 

Show all comments
  • সেলিম উদ্দিন ১ মে, ২০১৮, ৫:৪০ এএম says : 0
    সউদী যে কি করতেছে সেটাই বুঝে আসে না।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ